হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ থেকে ১০০-১২১ বছর আগে ( ১৯০০সালে) ব্রিটেনের মহিলারা মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর মতো হিজাব করত অর্থাৎ তাদের পোশাক - পরিচ্ছদ ও হিজাব ছিল মুসলিম পর্দানশী মহিলাদের মতোই ।
এই ফিল্মটা ১৯০০ সালের জুলাই মাসে তোলা অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে । সেক্যুলার বস্তুবাদী ধর্মবিরোধী জায়নবাদী , পূঁজিপতি এবং নারীবাদীরা যৌথ ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চালিয়ে ব্রিটিশ মহিলাদেরকে বেপর্দা করে ও তাদের হিজাব ( শালীন পোশাক পরিচ্ছদ ) কেড়ে নেয় ।
তথাকথিত শিল্প বিপ্লবের ( শিল্পায়ন ) মাধ্যমে ব্রিটেনে মহিলাদের হিজাবের উপর প্রথম আঘাত হানে নব্য আবির্ভুত পূঁজি ও শিল্পপতিরা এবং সর্বশেষ মারণাঘাত হানা হয় ব্রিটিশ মহিলাদের হিজাবের উপর ১ম মহাযুদ্ধ চলাকালে ( ১৯১৪ - ১৯১৯ সালে ) । বলা যায় যে প্রথম মহাযুদ্ধের শেষে ১৯১৯ - ১৯২১ ব্রিটেন থেকে হিজাবের উচ্ছেদ করা হয় । (ইতিহাস কথা বলে)
আর ২০২১ সালে ব্রিটেনে হিজাব উচ্ছেদের শতবর্ষ পূর্ণ হলো । হিজাব উচ্ছেদ ( কাশফে হিজাব ) বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ব্রিটেনে কত হিজাব পালনকারী মহিলা যে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার এবং তাদের উপর যে কত বল ও জোর প্রয়োগ করা হয়েছিল তা হয়তো সহজে জানা যাবে না ।
১৯২১ সালে ব্রিটেনের সহায়তায় রেযা খান মীরপাঞ্জ ইরানের শাসন ক্ষমতা দখল করে এবং ১৯২৫ সালে রেযা শাহ পাহলভী উপাধি নিয়ে ইরানের শাহী মসনদে অধিষ্ঠিত হয় । এই কুলাঙ্গার ধর্মবিরোধী ব্রিটিশদের বশংবদ রেযা শাহ ১৯২৫ সালের পর ইরানে বলপূর্বক মহিলাদের হিজাব নিষিদ্ধ করে । আর তুরস্কের ধর্মবিরোধী ডিক্টেটর কামাল আতাতুর্কও এই একই সময় তুরস্ক থেকেও হিজাব ও পর্দাপ্রথা নিষিদ্ধ ও বিলুপ্ত করে । আর জঘন্য ধর্ম বিরোধী এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও বিরোধিতা করার জন্য এ দুই দেশে ( ইরান ও তুরস্কে ) বহু ধর্মপ্রাণ পর্দানশী মুসলিম নারী এ সব স্বৈরাচারী সরকার সমূহের হাতে নির্যাতিত ও শহীদ হয়েছেন ।
উদাহরণস্বরূপ ঐ ক্রান্তিকালে রেযা শাহের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী মাশহাদ নগরীতে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ইমাম রেযার ( আ.) মাযার প্রাঙ্গণের গৌহারশদ্ মসজিদে আশ্রয় গ্রহণকারী বহু নারী ও পুরুষকে গুলি বর্ষণ করে শহীদ করেছিল ।
তাই ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে যে একই বা খুব কাছাকাছি সময় ব্রিটেন , ইরান , তুরস্ক এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশে হিজাব উচ্ছেদ ( কাশফে হিজাব ) ও বিলুপ্তীকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করেছে তদানীন্তন সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তি সমূহ । আর ঐ একই সময় স্বৈরাচারী নাস্তিক কম্যুনিষ্ট সোভিয়েত ইউনিয়নও মুসলিম অধ্যুষিত মধ্য এশিয়ায়ও এই একই ধর্মবিরোধী জঘন্য কাজ করেছে । আর ঐ অঞ্চলে দখলদার সোভিয়েত সেনাবাহিনীর হাতে হাজার হাজার মুসলিম নর নারী ধর্ম পালনের কারণে শাহাদাত বরণ করেছিলেন । কারণ ধর্মে বিশ্বাস ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা ছিল সোভিয়েত নাস্তিকদের দৃষ্টিতে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ।
আসলে এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত ও ব্যাপক গবেষণা হওয়া দরকার ।
মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
১৯-১২-২০২১