۷ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۷ شوال ۱۴۴۵ | Apr 26, 2024
ইমাম মাহ্দী (আ.)
ইমাম মাহ্দী (আ.)

হাওজা / ইসলাম ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বিজয়ের এ যুগই হচ্ছে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের যুগ।

অনুবাদ : মোহাম্মাদ মুনীর হোসেইন খান

পর্ব ১৩- ইরাকে ইরানী ও ইয়েমেনীদের হাতে পরাজয় বরণ এবং ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর হাতে হিজাযে ভূগর্ভে দেবে যাওয়ার মুজিযা সংঘটিত হওয়ার মাধ্যমে সুফিয়ানী বাহিনীর পরাজয় বরণ করার পর সুফিয়ানী পশ্চাদপসরণ করবে। আর ইমাম মাহ্দী সেনাবাহিনী নিয়ে দামেস্ক ও বাইতুল মুকাদ্দাস (আল কুদ্স) অভিমুখে রওয়ানা হবেন। সুফিয়ানী ইমাম মাহ্দী (আ.)-কে মোকাবিলা করার জন্য শামদেশে তার সেনাবাহিনী সংগ্রহ ও পুনর্গঠনে ব্যস্ত থাকবে।

রেওয়ায়াতসমূহে এ যুদ্ধকে ‘এক মহা বীরত্বপূর্ণ ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে যা উপকূলীয় এলাকায় আক্কা থেকে সূর (سور) ও আনতাকিয়াহ্ পর্যন্ত এবং শামের অভ্যন্তরে দামেস্ক থেকে তাবারীয়াহ্ ও কুদ্স পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। একইভাবে কতিপয় রেওয়ায়েতে অপর একটি আন্দোলনের কথা উল্লিখিত হয়েছে যা ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর সরকারের ক্ষেত্র প্রস্ত্ততকারী এবং ইয়েমেনে সংঘটিত হবে। এ আন্দোলন ও বিপ্লবের নেতা ইয়েমেনীকে এ সব রেওয়ায়েতে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে এবং তাঁকে সাহায্য করা মুসলমানদের ওপর ওয়াজিব বলে গণ্য করা হয়েছে :

‘পতাকাসমূহের মধ্যে ইয়েমেনীদের পতাকার চেয়ে হেদায়াতকারী আর কোন পতাকা নেই। ইয়েমেনীর আবির্ভাব ও উত্থানের পর জনগণের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা হারাম হয়ে যাবে। আর যখন সে আবির্ভূত হবে এবং আন্দোলন করবে তখন তাকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত ছুটে যাবে। কারণ, তার পতাকা হবে হেদায়াতের পতাকা। তার বিরোধিতা করা কোন মুসলমানের জন্য জায়েয হবে না। যদি কোন ব্যক্তি এ কাজ করে তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। কারণ, ইয়েমেনী জনগণকে সত্য ও সৎ পথের দিকে আহবান জানাবে।’

অনুরূপভাবে কতিপয় রেওয়ায়াতে ইয়েমেনী ও সুফিয়ানী বাহিনীর আবির্ভাবের আগে একজন মিসরীয় ব্যক্তির আন্দোলনের কথা বর্ণিত হয়েছে। আবার মিসরীয় সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে পরিচালিত আরেকটি আন্দোলন এবং মিসরের আশপাশের কিবতীদের পরিচালিত তৎপরতার কথাও ঐ সব রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে। এরপর ঐ সব রেওয়ায়াত মিসরে পাশ্চাত্য অথবা মাগরিবী (মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও লিবিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট) সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশ এবং এর পরপরই শামদেশে সুফিয়ানীর আবির্ভাব ও উত্থানের কথা আমাদেরকে অবহিত করে।

তবে অনেক রেওয়ায়াত অনুযায়ী মুসলিম দেশ মাগরিবের (মরক্কো ও পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ) সেনাবাহিনী শাম ও মিসরে প্রবেশ করবে। এদের একটি অংশ ইরাকেও প্রবেশ করবে। তাদের ভূমিকা হবে বাধাদানকারী আরব অথবা আন্তর্জাতিক বাহিনীর ভূমিকার ন্যায়। তাই তারা ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী হবে না; বরং এ বাহিনী শামে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর সরকারের ক্ষেত্র প্রস্ত্ততকারীদের এবং ইরানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এরপর তারা জর্দানের দিকে পশ্চাদপসরণ করবে এবং তাদের অবশিষ্টাংশ সুফিয়ানীর অভ্যুত্থানের পর পশ্চাদপসরণ করবে অথবা তার সাথে যোগ দেবে। অতঃপর তারা মিসরীয়দের আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখীন মিসর সরকারের সাহায্যার্থে অথবা শামে সুফিয়ানীর উত্থানের প্রাক্কালে যে পাশ্চাত্য-বাহিনী মিসরে প্রবেশ করবে তাদেরকে সাহায্য করার জন্য মিসরের দিকে দ্রুত অগ্রসর হবে।

ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের যুগের সাথে সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়াতটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, শেষ যামানায় ইহুদীরা পৃথিবীর বুকে ফিতনা সৃষ্টি এবং দম্ভ প্রকাশ করবে। তারা নিজেদের সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করবে। মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে তাদের এ বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। তাদের দম্ভ এবং শ্রেষ্ঠত্ব অন্বেষী মনোবৃত্তি ঐ সব পতাকাবাহীর হাতে চূর্ণ হয়ে যাবে যারা খোরাসান (ইরান) থেকে বের হবে।

‘ইসলামের ঝান্ডাসমূহ আল কুদ্সে পত্পত্ করে ওড়া পর্যন্ত তাদেরকে (খোরাসানীদের) তাদের সিদ্ধান্ত থেকে কোন কিছুই বিরত রাখতে পারবে না।’

কতিপয় রেওয়ায়াত অনুসারে ইমাম মাহ্দী (আ.) আনতাকিয়ার একটি গুহা, ফিলিস্তিনের একটি পাহাড় এবং তাবারীয়ার হ্রদ থেকে তাওরাতের আসল কপিগুলো বের করে আনবেন। তিনি তাওরাতের সেই সব কপির ভিত্তিতে ইহুদীদেরকে দোষী সাব্যস্ত করবেন এবং তাদের কাছে নিদর্শন ও মুজিযাসমূহ স্পষ্ট করে প্রকাশ করবেন।

আল কুদ্স মুক্ত করার যুদ্ধের পর যে কিছু সংখ্যক ইহুদী বেঁচে যাবে তারা ইমাম মাহ্দীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে এবং যারা আত্মসমর্পণ করবে না তাদেরকে আরব দেশগুলো থেকে বিতাড়িত করা হবে।

রেওয়ায়াতসমূহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের কিছু দিন পূর্বে রোমান ও তুর্কীদের মধ্যে অর্থাৎ পাশ্চাত্য ও রাশিয়ার মধ্যে একটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হবে যার সূত্রপাত হবে পূর্ব দিক হতে। আরও কিছু সংখ্যক রেওয়ায়াত থেকে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উপরিউক্ত যুদ্ধ আসলে একাধিক আঞ্চলিক যুদ্ধ আকারে সংঘটিত হবে।

ঠিক একইভাবে আরও কিছু সংখ্যক হাদীস থেকে জানা যায় যে, এ যুদ্ধের ফলে সংঘটিত জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও তার আগে ও পরে সমগ্র বিশ্বব্যাপী যে প্লেগ বা মহামারী দেখা দেবে তাতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ধ্বংস হবে। তবে পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ব্যতীত মুসলমানগণ সরাসরি এ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হবে না।

কিছু কিছু রেওয়ায়াতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এ যুদ্ধ বেশ কয়েকটি ধাপে সংঘটিত হবে। আর ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাব, তাঁর হিজায মুক্তকরণ এবং ইরাকে তাঁর প্রবেশ করার পরই এ যুদ্ধের সর্বশেষ পর্যায় এসে যাবে। (সমাপ্ত)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .