۵ آذر ۱۴۰۳ |۲۳ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 25, 2024
পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

হাওজা / আসলে রাশিয়া ট্র্যাপে পড়ে নি বরং রাশিয়াকে এই সংঘর্ষে জড়াতে বাধ্য করা হয়েছে এবং নিজের অস্তিত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা সংরক্ষণের স্বার্থেই রাশিয়া এ সংঘর্ষে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়েছে ।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, ন্যাটো জোটে রাশিয়ার সীমান্তে অবস্থিত ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি ও যোগদান এবং রাশিয়ার দোরগোড়ায় ন্যাটোর উপস্থিতি রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। আর ন্যাটো ভুক্ত হওয়ার অর্থই ন্যাটো রাশিয়ার ঘাড়ে ও দোরগোড়ায় উপস্থিত হয়ে রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল , শহর , সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা ও কেন্দ্র তাক করে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে । এটা কি রাশিয়ার মতো দেশ মেনে নিতে পারে ?

শুধু তাই নয় ন্যাটো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো রাশিয়ার দোরগোড়া ও সীমান্তে উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে গণ্ডগোল ও গোলযোগ পাকাবে , বিভিন্ন এথনিক দ্বন্দ্ব ও বিরোধ উস্কে দেবে এবং আইএসের মতো তাকফীরী সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে ইউক্রেনে পুনর্বাসন করে রাশিয়ার ভিতরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটাবে ।

উল্লেখ্য যে তাকফীরী আইসিস ও সিরিয়ার অন্যান্য সন্ত্রাসী গ্রুপের এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ও যোদ্ধা চেচেনীয় এবং রাশিয়ার চেচেনিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চল ও স্বায়ত্ব শাসিত প্রজাতন্ত্রে বিচ্ছিন্নতাবাদ নতুন করে মাথা চাড়া দেওয়াবে ন্যাটো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ।

আর ইউক্রেন সরকার গত এক দশক ধরে রুশ বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী যারা ইউক্রেনের জনসংখ্যার প্রায় ৩০% - ৩৫% তাদের ওপর তীব্র অন্যায় ও অত্যাচার করছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো প্রদত্ত অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ১৬০০০এর অধিক রুশ বংশোদ্ভূতকে হত্যা করেছে ।

উগ্র জাতীয়তাবাদী ইউক্রেনীয়দেরকে রাশিয়া নিও নাৎসী বলে অভিহিত করেছে । এসব উগ্রবাদী ইউক্রেনীয় নিও নাৎসীদের হাত থেকে সংখ্যা লঘু রুশ বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করার জন্য ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল ।

আর ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তির কারণে ন্যাটো আরো পূর্ব প্রান্ত ও পূর্বাঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসত এবং অচিরেই ইরান সীমান্তবর্তী আযারবাইজান প্রজাতন্ত্র , আর্মেনিয়া ও জর্জিয়াও ন্যাটো জোটে যোগদান করত এবং এভাবে ন্যাটো তখন রাশিয়াকে পরিবেষ্টিত করে ফেলত এবং ইরানের দোরগোড়া ও সমগ্র উত্তর সীমান্তেও পৌঁছে যেত ও উপস্থিত হত যদিও ইরানের উত্তর পশ্চিম সীমান্তে ন্যাটো ভুক্ত তুরস্ক বিদ্যমান ।

আর এটা ভবিষ্যতে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারত । কিন্তু বর্তমান ইউক্রেন পরিস্থিতির সুবাদে অন্তত এখন আর আযারবাইজান প্রজাতন্ত্র, আর্মেনিয়া ও জর্জিয়া ন্যাটোয় যোগদান করার সাহস করবে না ।

আর দীর্ঘ মেয়াদি গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে রাশিয়াকে ইউক্রেনে জড়িয়ে রাখা ও ধরাশায়ী করার যে স্বপ্ন দেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সে কারণে রাশিয়া সব দিক বিবেচনা করেই এ ধরণের সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ।

সংঘর্ষ দীর্ঘমেয়াদী হলে রাশিয়াও ইউক্রেনের ৩০% রুশবংশোদ্ভূত এবং প্রোরাশিয়ান ইউক্রেনীয়দের দিয়ে গণবাহিনী ( মোবিলাইযেশন ফোর্স ) গঠন করে ন্যাটো ও মার্কিন পন্থী গেরিলাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে । তাতে ইউক্রেন দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধের শিকার হয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে ।

শুধু তাই নয় কেবল রাশিয়ার একা ক্ষতি হবে না ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও ক্ষতি হবে অনেক যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহ্য করা রাশিয়ার চেয়েও অনেক কঠিন হবে। তাই ইইউ যদি বুদ্ধিমান হয় তাহলে ইইউএর উচিত শান্তিপূর্ণ ও ন্যায্য পন্থায় এ সংকট সমাধানের চেষ্টা করা এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত না করা এবং ইউক্রেনকে ন্যাটো ও রাশিয়ার মাঝে নিরপেক্ষ দেশ ও অঞ্চলের মর্যাদায় উন্নীত করা এবং ইউক্রেনের আভ্যন্তরীন সকল এথনিক দ্বন্দ্ব এবং জাতিগত বৈষম্য ও নিধন যজ্ঞ বন্ধ করতে সহায়তা করা । আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটা করতে দেবে না বরং এ বিরোধ ও সংকট বহু দীর্ঘ সময় জিইয়ে রাখার চেষ্টা করবে !

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ন্যাটো জোট গঠন করা হয়েছিল তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ওয়ার্শো জোটের মোকাবেলায় সেই শীতল যুদ্ধের যুগে । কিন্তু প্রায় ৩০ বছর আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ওয়ার্শো জোটই বিলুপ্ত হয়ে গেলে ন্যাটো জোটের অস্তিত্ব বহাল রাখার কোনো অর্থ ও যৌক্তিকতাই আর থাকে না । অথচ ওয়ার্শো জোটের বিলুপ্তির পরেও ন্যাটো জোট তো বিলুপ্ত হয় নি বরং সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং পূর্ব দিকে ধেয়ে আসছে!

এখন উচিত ন্যাটো জোটের বিলুপ্তি এবং ইইউ থাকতে ন্যাটো জোটের কোনো অর্থই হয় না । বরং ন্যাটো জোটের শক্তিশালী হওয়ার অর্থ হচ্ছে ইউরোপের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ও আধিপত্য বৃদ্ধি এবং ইইউএর নিজস্ব স্বাতন্ত্র ও স্বকীয়তা হারিয়ে দুর্বল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অধিক নির্ভরশীল হয়ে যাওয়া ।

মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .