۱۰ فروردین ۱۴۰۳ |۱۹ رمضان ۱۴۴۵ | Mar 29, 2024
যারা দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড করে
যারা দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড করে তাদের সাথে নবী (স:) এর কোনো সম্পর্ক নাই

হাওজা / যারা দ্বীনকে (ইসলাম) খন্ড-বিখন্ড করে, দলে দলে বিভক্ত হয়- তাদের সাথে (হে নবী) আপনার কোনো সম্পর্ক নাই।

মুহাম্মাদ হোসায়েন (বাংলাদেশ)

যারা দ্বীনকে (ইসলাম) খন্ড-বিখন্ড করে, দলে দলে বিভক্ত হয়- তাদের সাথে (হে নবী) আপনার কোনো সম্পর্ক নাই।[সূরা আনআম- ১৫৯]

রাসূল সঃ বলেছেন: “তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখলে সেভাবে সালাত আদায় কর।” (বুখারী -১ম খণ্ড হা:-৬৩১,আল-মাদানী প্রকাশনী)

আজ পর্যন্ত কোন হাদীস বা ইতিহাস গ্রন্থে পাওয়া যায়নি যে নবী সঃ জামাতবদ্ধ হয়ে কোন নফল নামাজ আদায় করেছেন বা করার কোন নির্দেশ দিয়েছেন।

মুলতঃ জামায়াতবদ্ধ হয়ে 'তারাবী নামায'আদায়ের ব্যাপারটি দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমরের ব্যাক্তিগত মত (independent reasoning) আর তাই আহলে সুন্নাতের গ্রন্থসমূহে একে ‘বিদ’আতে হাসানাহ’ বা ‘সূন্দর বিদ’আত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বিদাআত সম্বন্ধে বলা হয়েছে: "দীনের ক্ষেত্রে যেকোনও বেদাআতই পথ ভ্রষ্টতা - যার পরিনতী হল আগুন"। মূলতঃ ‘তারাবী’ বলতে কোনো নামাজের নাম কোন হাদীস গ্রন্থে পাওয়া যায়না।

তারাবী শব্দটি, 'তারাবিহাতুন' শব্দের বহুবচন,এর মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ- আরাম বা বিশ্রাম। যে নামায অতি দীর্ঘ সময় ধরে আদায় করা হয়। প্রতি চার রাকাত আদায়ের পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বিশ্রামের উদ্দেশ্যে বসা হয়। তাই একে তারাবীহ্ বা আরামদায়ক নামায বলা হয়।

আসলে এটা হযরত ওমরের সুন্নাত। এটা নবী সঃএর যুগে তো ছিলইনা হযরত আবু বকরের এমনকি ওমরের শাসনামলের প্রথম দিকেও ছিল না। রমজান মাসের এই নামাযের স্বপক্ষে কোরআন হাদীস ও ইতিহাসে কোন দলীল নেই । রসূল সঃএর আমলের বিরুদ্ধে করোও কথা দলীল হতে পারে না। আল্লাহর কিতাব, রসূলের সুন্নত, সাহাবীদের কথা এবং মুসলমানদের ইজমা দ্বারা প্রমাণিত যে, কারও কথা রসূলের সুন্নাতের সমান হতে পারে না। সে যত বড়ই হোক না কেন? কারও কথা টেনে এনে রসূলের সুন্নাতের বিরুদ্ধে দাড় করা যাবে না। ইমাম শাফেই বলেন: মুসলমানদের সর্বসম্মতিক্রমে কারও কাছে রাসূলের সুন্নাত সুস্পষ্ট হয়ে যাওযার পর তা ছেড়ে দিয়ে অন্যের কথা গ্রহণ করা নাজায়েয। আসলে ‘সুন্নাত'হলো রাসূল (স) এর বাস্তব কর্মনীতি,আর 'হাদীস'বলতে রাসূল (স.) এর কাজ ছাড়াও কথা ও সমর্থন বুঝায়।

যারা নবী সঃএর উম্মত তারা নবীর সুন্নত অনুসরণ করবে এটাই তো প্রত্যেকটা ধর্মপ্রাণ মুসলমানের আবশ্যক কর্তব্য।

নীচে প্রসিদ্ধ সহীহ হাদীস গ্রন্থ থেকে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করছিঃ

(১) একদিন রমজানে রসুলুল্লাহ সঃ গভীর রাতে গৃহ থেকে বের হয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করেন, কিছুসংখক পুরুষ তাঁর পিছনে নামাজ আদায় করেন। সকালে লোকেরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন, ফলে দ্বিতীয় রাতে লোকেরা আরো অধিক সংখ্যায় সমবেত হন। তিনি(সা) সালাত আদায় করেন এবং লোকেরা তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। সকালে তাঁরা এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করেন। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এরপর রসুল(স) বের হয়ে সালাত আদায় করেন এবং লোকেরাও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লির (সংখ্যা এতো বেশী হলো যে) সংকুলান হলোনা, কিন্তু রসুল(স) (ওই সময়) আর বের না হয়ে ফযরের নামাজের জন্য বেড়িয়ে আসলেন এবং নামাজ শেষে লোকদের দিকে ফিরে প্রথমে তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য দেওয়ার পর বললেনঃ ‘শোন, তোমাদের গতরাতের অবস্থান আমার অজানা ছিলোনা, কিন্তু আমি এ নামাজ তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবার আশংকা করেছি বিধায় বের হইনি। কেননা তোমরা তা আদায় করতে অপারগ হয়ে পড়তে। রসুল(স) এর ওফাত হলো আর এই ব্যাপার টি এভাবেই থেকে যায়"।

[সুত্রঃ বুখারি, ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, তৃতীয় খন্ড, পঞ্চম সংসকরন, হাদীস নম্বর- ১৮৮৫, পৃষ্ঠা-২৯২।]

(২) ইবনে শিহাব (যুহরি) (রঃ) বলেন, ‘’রাসুলুল্লাহ(সা)-এর ওফাতের পরও তারাবির অবস্থা এরুপ'ই ছিলো। আবু বকর সিদ্দিক(রা)-এর খিলাফত কালে এবং উমর ইবনে খাত্তাব(রা) এর খিলাফতের প্রথম দিকেও (তারাবির) অবস্থা অনুরুপ'ই ছিলো’’

[সুত্র-মুয়াত্তা, ইমাম মালিক(রঃ), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, প্রথম খন্ড, পঞ্চম সংস্করন, রমযানের নামাজ অধ্যায়, হাদিস নম্বর-২, পৃষ্ঠা-১৭০।]

(৩) আব্দুর রহমান ইবনে আব্দিল কারিয়্যু (রঃ) বলেছেনঃ ‘আমি মাহে রমজানে উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) এর সহিত মসজিদে গমন করিয়াছি, সেখানে গিয়া দেখি লোকজন বিভিন্য দলে বিভক্ত। কেউ একা নামায পড়িতেছেন। আবার কেউবা নামায পড়িতেছেন, কিন্তু তাঁর ইমামতিতে একদল লোক ও নামায আদায় করিতেছেন। এই দৃশ্য দেখিয়া উমর(রাঃ) বলিলেনঃ ‘আমি মনে করি যে, কতইনা ভালো হইত যদি এই মুসল্লিগনকে একজন ক্বারীর সহিত একত্র করিয়া দেওয়া হইত। অতঃপর তিনি উবাই ইবনে কা’ব (রা) –এর ইমামতিতে একত্র করিয়া দিলেন। আব্দুর রহমান বলেনঃ ‘দ্বিতীয় রাতেও আমি তাহার সহিত মসজিদে গমন করিলাম। তখন লোকজন তাহাদের ক্বারীর ইক্তিদায় নামায পড়িতেছিলেন। উমর (রা) ইহা অবলোকন করিয়া বলিলেনঃ ইহা অতি চমৎকার বিদআত বা নতূন পদ্বতি"।

[সুত্রঃ বুখারি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, তৃতীয় খন্ড, পঞ্চম সংস্করন, ১৮৮৩ নম্বর হাদীস, পৃষ্ঠা নম্বর-২৯২। মুয়াত্তা, ইমাম মালিক(র), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, প্রথম খন্ড, পঞ্চম সংস্করন, রমজানের নামায অধ্যায়, হাদীস নম্বর-৩।]

মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক বিশ্বনবী সঃ বলেছেন, "যে এই মাসে নফল নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন, যে একটি ওয়াজেব নামাজ আদায় করবে তাকে অন্য মাসের সত্তুরটি ওয়াজিব নামাজ আদায়ের সওয়াব দান করবেন"৷

এই পবিত্র মাসে অবশ্যই বেশী বেশী ইবাদত বন্দেগী করতে হবে, তাই বলে এমন কোন পদ্ধতিতে নয় যা নবী নিজেও করেননি বা করতেও বলেননি, যা বরাবরই বিদাআত। বরং এই মাসে রসুল সঃ এর অনুসরনে মুস্তাহাবে মুয়াক্কাদা হিসাবে হাজার রাকাত ফোরাদা(একান্তে বা একা) সালাত আদায় করা মুস্তাহাব। পক্ষান্তরে তারাবি হচ্ছে বিদাআত।

(সংগৃহীত)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .