۳۱ فروردین ۱۴۰۳ |۱۰ شوال ۱۴۴۵ | Apr 19, 2024
ইমাম আমিরুল মুমেনীন হযরত আলী (আ.)
ইমাম আমিরুল মুমেনীন হযরত আলী (আ.)

হাওজা / ইমাম আমিরুল মুমেনীন হযরত আলী (আ.)-এর জন্ম এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ ঘটনা যার বর্ণনা সকল ইসলামী ফের্কার আলেম এবং আনসাব শাস্ত্রের পন্ডিতরা সবিস্তারে তাদের স্ব স্ব কিতাবসমূহে বর্ণনা করেছেন।

হজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মুহাম্মদ আলী মোর্তজা

ক্বাবার অভ্যন্তরে ইমাম আমিরুল মুমেনীন হযরত আলী (আ.)-এর জন্ম এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ ঘটনা যার বর্ণনা সকল ইসলামী ফের্কার আলেম এবং আনসাব শাস্ত্রের পন্ডিতরা সবিস্তারে তাদের স্ব স্ব কিতাবসমূহে বর্ণনা করেছেন। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনেক বিশিষ্ট আলেম ও চিন্তাবিদরা এ সত্য ঘটনাটির বর্ণনা সরাসরী পেশ করেছেন এবং তা ইমাম আলীর একটি বিশেষ মর্যাদা বলে অখ্যায়িত করেছেন।

ইমাম মুহাম্মাদ আল মালেকী (রহ.) বর্ণনা করেছেন যে,

«وُلِدَ بِمکَّةَ الْمُشَرّفَةَ داخِلَ بَیْتِ الْحَرامِ فی یَوْمِ الْجُمعَةِ الثَّالِثَ عَشَرَ مِنْ شَهْرِاللّه ِ رَجَبِ سَنَةِ ثَلاثینَ مِنْ عامِ الْفیلِ... وَلَمْ یُولَدْ فِی الْبَیْتِ الْحَرامِ قَبْلَهُ اَحَدٌ سِواهُ، وَهِیَ فَضیلَةٌ خَصَّهُ اللّه تَعالی بِها اِجْلالاً لَهُ وَاِعْلاءً لَمَرْتَبَتِهِ وَاِظْهارا لِکَرامَتِهِ

অর্থঃ “আলী মক্কায় অবস্থিত আল্লাহর ঘর ক্বাবার অভ্যন্তরে রোজ শুক্রবার আম্মুল ফিলের ত্রিশতম বছরে তের-ই রজব দুনিয়াতে আগমন করেছেন…

তাঁর পূর্বে কেউ আল্লাহর ঘরের অভ্যন্তরে ভুমিষ্ট হয়নি এবং এই জন্ম এমন একটি মর্যাদা যা আল্লাহ্ আলীকে সম্মান প্রদান করার জন্যে এটি নির্দিষ্ট করেছেন।”

(আল ফুসুলুল মুহিম্মা, পৃঃ নং ১২-১৩; বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৩৫, পৃঃ নং ৮)।

অন্যত্র ইমাম আল হাকেম নিশাবুরী (রহ.) বলেনঃ

“ক্বাবা ঘরের অভ্যন্তরে আলীর জন্মের বিষয়টি বিশ্বস্থ ও বহু বর্ণনাকারীর মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌছেছে।”

(আল মুসতাদরাক লি হাকেম নিশাবুরী, খন্ড ৩, পৃ ৪৮৩)।

আর ইমাম আলীর মাতার প্রসব ঘটনা সম্পর্কে বহু প্রসিদ্ধ হাদিসের মধ্যে একটি হচ্ছে এরকমঃ

[হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর, ইয়াযিদ ইবনে ক্বানআব থেকে বর্ণনা করেছেনঃ “আমি আব্দুল উযযা-এর কয়েকজন সন্তান ও আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিবের সাথে আল্লাহর ঘরের সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ আলীর মা ফাতেমা বিনতে আসাদ এসে উপস্থিত হলেন, ‍যিনি প্রসব বেদনার অবস্থায় ছিলেন।” তখন ফাতেমা বলেনঃ

«فَقالَتْ رَبِّ اِنّی مُؤمِنَةٌ بِکَ وَبِما جاءَ مِنْ عِنْدِکَ مِنْ رُسُلٍ وَکُتُبٍ، وَاِنّی مُصَدّقَةٌ بِکَلامِ جَدّی اِبْراهِیْمَ الخَلیلِ، وَاِنّهُ بَنی الْبَیْتَ العَتیقَ فَبِحَقِّ الّذی بَنی هذَا الْبَیْتَ وَبِحَقِّ الْمَوْلُودِ الَّذی فِی بَطْنی لمّا یَسَّرْتَ عَلَیَّ وِلادَتی

অর্থঃ “হে প্রতিপালক! আমি তোমার প্রতি, তোমার নবী ও রাসূলদের প্র্রতি এবং তাদের উপর নাযিলকৃত সকল আসমানী কিতাবের প্রতি ঈমান রাখি। আর আমার পিতামহ (হযরত) ইব্রাহিম খালিল (আ.) –এর প্রতিও ঈমান এনেছি। তিনি এ সম্মানিত ঘরকে নির্মান করেছেন। সুতরাং এই ঘরের নির্মানকারী ও আমার গর্ভের সন্তানের উসিলায় এই শিশুর জন্মকে সহজ করে দাও।”

ইয়াযিদ ইবনে ক্বানআব বলেনঃ “আমরা দেখলাম ক্বাবার একটা পেছনের অংশ (মুস্তাজার-এর স্থান) ফেঁটে গেলো এবং ফাতেমা গৃহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন। আমরা আর তাকে দেখতে পাইনি। দেয়াল পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে গেলো। আমরা চিন্তা করছিলাম যে, ক্বাবার তালা খুলে ফেলি। কিন্তু চেষ্টা করেও খুলতে পারিনি।

فَعَلِمْنا اَنَّ ذلِکَ اَمْرٌ مِنَ اَمْرِ اللّه ِ عَزّوجَلّ

আমরা বুঝতে পারলাম যে, এই ঘটনাটি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সংঘটিত হয়েছে।”

(বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৩৫, পৃঃ নং ৮, হাদিস নং ১১; খাসায়িস আমিরিল মুমেনিন লি শারীফ রাযি, পৃঃ নং ৩৯; আল গ্বাদীর লি আল্লামা আমিনী, খন্ড ৬, পৃঃ নং ২২)।

যখন ক্বাবা ঘর থেকে তিনদিন পর বেরিয়ে আসলেন, তখন ফাতেমা বিনতে আসাদ বলেছিলেনঃ

اِنّی فُضِّلْتُ عَلی مَنْ تَقَدَّمَنی مِنَ النِّساءِ لِاَنَّ آسِیَةَ بِنْتَ مُزاحِمٍ عَبَدَتِ اللّه َ عَزَّوَجَلَّ سِرّا فِی مَوْضِعٍ لایُحِبُّ اَنْ یَعْبُدَاللّه َ فِیهِ اِلاّ اضْطِرارا، وَاِنَّ مَرْیَمَ بِنْتَ عِمْران هَزَّتِ النَّخْلَةَ الْیابِسَةَ بِیَدِها حَتّی اَکَلَتْ مِنْها رُطَبا جَنیّا، وَاِنّی دَخَلْتُ بَیْتَ اللّه ِ الْحَرامَ فَاَکَلْتُ مِنْ ثِمارِ اَلجَنَّةِ وَاَوْراقِها[ارزاقها]

অর্থঃ “আমি আমার পূর্বের নারীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছি। কেননা, মুযাহিম-এর কণ্যা আসিয়া (ফেরউনের স্ত্রী) গোপনে আল্লাহর ইবাদত করতো। নিরূপায় না হলে তিনি ফেরউনের প্রাসাদে ইবাদত করতে পছন্দ করতেন না। ইমরানের কণ্যা মারইয়াম খোরমার শুষ্ক গাছ নেড়ে পতিত খেজুর খেতো। আর আমি আল্লাহর ঘর ক্বাবার ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং বেহেস্তের ফল ফলাদি খেয়ে অতিবাহিত করলাম।”

(বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৩৫, পৃঃ নং ৮; ই’লানুর উরা, পৃঃ নং ৩; আল ইরশাদ লি শেইখ মুফিদ, পৃঃ নং ৩)।

বর্ণিত আছেঃ “হযরত ফাতেমা বিনতে আসাদ যখন ক্বাবার অভ্যন্তরে ছিলেন তখন সাদা রেশমী কাপড় পরিহিত ও মৃগনাভী কস্তুরীর চেয়েও বেশী সুগন্ধী সম্পন্ন পাঁচ জন রমনী আসেন। তারা হলেন, হযরত হাওয়া (আ.), হযরত সারা (আ.), হযরত মুসা ইবনে ইমরান (আ,)-এর মা ও হযরত ঈসা (আ.)-এর মা হযরত মারইয়াম (আ.)। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে আলীর জন্মের সময় সাহায্য করার জন্যে আসেন। কেননা, কোন অপবিত্র নারী এই পবিত্র শিশুর জন্মের সময় ক্বাবার ভিতর অ বস্থান করতে পারেন না। তাঁরা হযরত ফাতেমা বিনতে আসাদ-কে সালাম দিলেনঃ

«السلام عليكِ ولية الله»

“হে আল্লাহর অলী! আপনাকে সালাম।”

হযরত ফাতেমা বিনতে আসাদ তাদের সালামের জবাব দেন। এই বেহেস্তী রমনীরা প্রত্যেকে তাঁর সামনে সুগন্ধি ভরা রূপার পাত্র হাতে নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করেন।”

(বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৩৫, পৃঃ নং ১৩)।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .