মুস্তাক আহমদ
মানুষ ঈমানী চেতনায় নিজ সৎকর্ম দ্বারা ফেরেস্তার মর্যাদার উপরে উঠতে পারে ৷ এটা অসম্ভব কিছু নয় ৷
কিন্তু অপরদিকে আবার এক মানুষ আর মানুষের উপরে জুলুম করে পশু'র থেকে অধম হয়ে যেতে পারে ৷
আসলে প্রতিটি মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্টের মধ্যে সু-বৃত্তি ও কু-বৃত্তি বিদ্যমান ৷ সমাজে ঈমানী চেতনায় সৎকর্মের মাধ্যমে সু-বৃত্তির বিকাশ ঘটিয়ে সমাজকে স্বর্গ বানানো যেতে পারে, আবার বৈমান হয়ে অসৎকর্মের আঞ্জাম দিয়ে কু-বৃত্তির বিকাশ ঘটিয়ে সমাজকে নরক বানানোও যায় ৷
সমাজে যখন বেশীর ভাগ মানুষ অসৎকর্মের আঞ্জাম দিতে থাকে ৷ তখন মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্টের পশুসুলভ আচরণ ও পুশুত্বের পরিচয় ঘটে, এরফলে মানুষ একসময় পশুর থেকেও নিকৃষ্ট হয়ে যায় ৷ — এ রকম অনেক উদাহরণ আছে, পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে পূর্বের নবী রসুলদের যুগে অসৎ চরিত্রহীন মানুষগুলোর মুখ পশুর মুখের আকৃতিতে রূপান্তরিত হয়ে যেত ৷ এমন অনেক উদারহনও আছে যে, মানুষ বাঁদরে রূপান্তরিত হয়ে যেছে বা মানুষ শূকরেও রূপান্তরিত হয়েগেছে ৷
— পবিত্র কোরআনে সুরার মধ্যে এমন ইতিহাস আল্লাহপাক লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন মানুষকে শিক্ষা দেবার জন্য ৷
শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)ও একদা বলেছিলেনঃ "আমার চলে যাবার পর আমার মসনদে বাঁদর নৃত্য করবে ৷"
নবীপাকের মুখনিঃসৃত বাণী কখনো মিথ্যা হতে পারে না, আমরা দেখেছি উমাইয়াদের মধ্যে বেশকিছু মানুষ নবীপাকের মসনদে বসেছিল এবং চরম জুলুম অত্যাচার করেছে, - সেই অত্যাচারীদের লক্ষ্য করেই নবী (সঃ) বাঁদরের সাথে তুলনা করেছিলেন ৷
আসলে বাঁদরের চারিত্রক বৈশিষ্ট মানুষের মধ্যে সর্বাধিক বিদ্যমান, এজন্য বনি ইসরাঈলদের মধ্যে তখন বেশকিছু মানুষ জুলুম অত্যাচার করে বাঁদরে রূপান্তরিত হয়েছে ৷
কিন্তু নবীপাক (সঃ) উম্মাতের মার্যাদাকে লক্ষ্য করে আল্লাহর দরবারে বলেছিলেনঃ "হে আল্লাহ ! আমার উম্মাতগণ যেন পশু অববয় রূপান্তরিত নয় হয় ৷"
— আল্লাহপাক তাঁর প্রিয় হাবিবের মর্যাদার দিকে লক্ষ্য করে তাঁর উম্মাতের আকার আকৃতি পশুর আকারে রূপান্তরিত করেন নি, তবে এটা ঠিক জালেম জাতিকে শিক্ষা দিবার জন্য বহু জালেম জনজাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন ৷ বহু সভ্যতাকে ধ্বংস রূপান্তরিত করেছেন ৷
কেন ধ্বংস করেছেন ?? কারন মানুষ অসৎ প্রবৃত্তির মাধ্যমে সমাজে চরম জুলুম করতো বলে৷
এখন বর্তমানেও বিশ্বের বুকে জায়োনিষ্ট মতবাদের মানুষরা বিভিন্ন দিকদিয়ে চরম জুলুম করে চলেছে ৷
আল্লাহপাক জালেমদেরকে সরাসরি বাঁদরের আকারে রূপান্তরিত না করলেও আজ অবশেষে বাঁদর পক্সের গজব এনে শিক্ষা দিচ্ছেন ৷
দুবছর পূর্বে কোরোনা নামক রোগের নাটক করে যেভাবে মানুষের উপরে জুলুম করেছে, তার প্রতিক্রিয়ায় আল্লাহ এদের সরাসরি বাঁদর করে দিতে পারতেন, কিন্তু তাঁর প্রিয় হাবিবের মুখের দিকে লক্ষ্য করে সরাসরি বাঁদর না করে বাঁদর পক্স নাজিল করেছেন ৷
এর পরেও কি শিক্ষা হবে না ?
ইতিহাস বলছে শিক্ষা হবে না ৷ আসলে এই ইহুদী খ্রীষ্টানরা নিজেরা কখনই মুসলমানদের উপরে সরাসরি জুলুম করতে পারবে না ৷ ইহুদী খ্রীষ্টনরা তখনই মুসলমানদের উপরে জুলুম করতে সক্ষম হয়, যখন আর এক মুসলমান ঐ ইহুদীদের সহযোগীতা করে ৷ অর্থাৎ মুনাফেকদের সহযোগিতায় কাফেরের যত শক্তি সঞ্চয় ৷
আসলে কাফর হলো ঠুঁটো জগন্নাথ ৷ কাফের নিজস্ব কোন শক্তি নেই ৷ কাফেরের হাত হলো মুনাফেক ৷ আর "হাত" মানে হলো শক্তির প্রতীক ৷ মুনাফেক যদি কাফেরকে সহযোগিতা না করে তাহলে তারা বিন্দুমাত্র জুলুম করতে পারবে না ৷ এজন্য আল্লাহপাক কাফেরের থেকে মুনঅফেকদের বেশী শাস্তি দেবার ওয়াদা করেছেন ৷
শেষ যে কথা বলে আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই, তা হলোঃ আল্লাহপাক কাকে বহিঃস্কার করেছেন ৷ আল্লাহ যাকে তাঁর দরবার থেকে বহিস্কার করেছেন সে হলঃ আজাজিল ৷
এই আজাজিল'কে আপন ভাবাটাই জুলুম ৷ যারা আজাজিলকে আপন ভাবে তারাই জালেম ৷
নবী সঃও এমন কিছু ব্যক্তিকে তাঁর দরবার থেকে বহিঃস্কার করেছেন ৷ আল্লাহ যদি আজাজিলকে বহিস্কার করে থাকেন, নবীপাকও যাদের বহিস্কার করেছেন সেও আজাজিল তুল্য ৷
এখন ইতিহাস ঘেটে দেখতে হবে নবীপাক কাদের কাদের সরাসরি বহিঃস্কার করেছেন ৷