অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আলী গাজী
ছত্রিশতম অমীয় বাণী।
বিষয় : হযরত আব্দুল আজীমের আক্বীদা
رَوَیَ فِیْ کِتَابِ التَّوْحِیْدِ بِاَسْنَادِه عَنْ عَبْدِالْعَظِیْمِ بْنِ عَبْدِ اللّٰهِ الْحَسَنِیْ رَحْمَةُ اللّٰهِ قَالَ دَخَلْتُ عَلٰی سَیِّدِیْ عَلِیِّ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِیِّ بْنِ مُوْسَی بْنِ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِیِّ بْنِ الْحُسَیْنِ بْنِ عَلِیِّ بْنِ اَبِیْ طَالِبٍ عَلَیْهِمُ السّلامُ، فَلَمَّا بَصَرَ بِیْ قَالَ لِیْ مَرْحَبًا بِكَ یَا اَبَا الْقَاسم، اَنْتَ وَلُیُّنَا حَقًّا قَالَ فَقُلْتُ لَه یَابْنَ رَسُوْلِ اللّٰهِ اِنِّیْ اُرِیْدُ اَنْ اَعْرَضَ عَلَیْكَ دِیْنِیْ فَاِنْ کَانَ مَرْضِیًّا مَشَیْتُ عَلَیْهِ حَتّٰی اَلْقَی اللّٰهَ عَزَّ وَجَلَّ فَقَالَ عَلَیْهِ السَّلامُ هَاتَ یَا اَبَا الْقَاسِمِ فَقُلْتُ اِنِّیْ اَقُوْلُ:
اِنَّ اللّٰهَ تَبَارَكَ وَتَعَالٰی وَاحِدٌ لَیْسَ کَمِثْلِه شَیْءٌ خَارِجٌ مِنَ الْحَدِّیْنِ حَدِّ الْاَبْطَالِ وَحَدِّ التَّشْبِیْهِ وَ اِنَّه لَیْسَ بِجِسْمِ وَلا بِصُوْرَةٍ وَلا عَرَضَ وَلا جَوْهَرٍ بَلْ هُوَ مُجَسِّمٌ الْاَجْسَامِ وَ مُصَوِّرُ الصُّوَرِ وَ خَالِقُ الْاَعْرَاضِ وَالْجَوَاهِرِ وَ رَبُّ کُلِّ شَیْءٍ وَمَالِکُه وَجَاعِلُه وَاِنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه وَخَاتِمُ النَّبِیِّنَ فَلا نَبِیَّ بَعْدَه اِلٰی یَوْمِ الْقِیَامَةِ
وَاَقُوْلُ: اِنَّ الْاِمَامَ وَالْخَلِیْفَةَ وَالِی الْاَمْرِ مِنْ بَعْدِه اَمِیْرُ الْمُوٴْمِنِیْنَ عَلِیِّ بْنِ اَبِیْ طَالِبٍ عَلَیْهِ السَّلامُ ثُمَّ الْحَسَنَ وَ الْحُسَیْنَ عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ عَلِیَّ بْنِ الْحُسَیْنِ عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ مُحَمَّدَ بْنِ عَلِیِّ عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ جَعْفَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ مُوْسَی بْنِ جَعْفَرٍ عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ عَلِیَّ بْنَ مُوْسَی عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ مُحَمَّدَ بْنِ عَلِیٍّ عَلَیْهُمَا السَّلامُ ثُمَّ اَنْتَ یَامَوْلایَ
فَقَالَ عَلَیْهِ السَّلامُ : وَ مِنْ بَعْدِی الْحَسَنُ ابْنِیْ فَکَیْْفَ لِلنَّاسِ بِالْخُلْفِ مِنْ بَعْدِه؟
قَالَ فَقُلْتُ وَ کَیْفَ ذَلِكَ یَا مَوْلایَ؟
قَالَ:"لِاَنَّه لایُرٰی شَخْصُه وَلا یَحِلُّ ذِکْرُه بِاسْمِه حَتّٰی یَخْرُجُ فِیَمْلاءُ الْاَرْضَ قِسْطًا وَّعَدْلا کَمَا مُلِئَتْ ظُلْمًا وَجَوْرًا "
قَالَ فَقُلْتُ اَقْرَرْتُ وَاَقُوْلُ اِنَّ وَلِیَّهُمْ وَلِیُّ اللّٰهِ وَعَدُوَّهُمْ عَدُوُّ اللّٰهِ وَطَاعَتَهُمْ طَاعَةُ اللّٰهِ وَمَعْصِیَّتَهُمْ مَعْصِیَّةُ اللّٰهِ
وَاَقُوْلُ: اِنَّ الْمِعْرَاجَ حَقٌّ وَاِنَّ الْجَنَّةَ حَقٌّ وَالنَّارَ حَقٌّ وَالصِّرَاطَ حَقٌّ وَالْمِیْزَانَ حَقٌّ وَاِنَّ السَّاعَةَ آتِیَةٌ لارَیْبَ فِیْهَا وَاِنَّ اللّٰهَ یَبْعَثُ مَنْ فِیْ قُبُوْرٍ
وَّ اَقُوْلُ: اِنَّ الْفَرَائِضَ الْوَاجِبَةَ بَعْدَ الْوَلایَةِ اَلصَّلٰوةُ وَالزَّكَاةُ وَالصَّوْمُ وَالْحَجُّ وَالْجِهَادُ وَالْاَمْرُ بِالْمَعْرُوْفِ وَالنَّهِیُ عَنِ الْمُنْکَرِ
فَقَالَ: عَلِیُّ بْنُ مُحَمَّدٍ عَلَیْهُمَا السَّلامُ یَا اَبَا قَاسِمٍ، هٰذَا وَاللّٰهِ دِیْنُ الَّذِیْ ارْتَضَاهُ الْعِبَادِ فَاثْبُتْ عَلَیْهِ ثَبَّتَكَ اللّٰهُ بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِی الْحَیَاةِ الدُّنْیَا وَا لْاَخِرَةَ
বিখ্যাত আলেম শেখ সাদুক্ব (রহঃ) ও অন্যান্য আলেমগণ, হযরত আব্দুল আজিম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমি (আব্দুল আজিম) আমার আক্বা ও মনিব হযরত ইমাম আলী নক্বী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে মূসা ইবনে জাফর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে হোসায়েন ইবনে আলী ইবনে আবু তালিব (আঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হই। তিনি (আঃ) দেখা মাত্রই আমাকে বললেন : মারহাবা, হে আবু কাসেম! তুমি আমাদের প্রকৃত প্রেমিক।
আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর সন্তান! আমি আমার দ্বীন (আক্বীদা) আপনার সমিপে পেশ করতে চাই, আমার আক্বীদা থেকে আপনি যদি সন্তুষ্ট হন তবে আমি কিয়ামত পর্যন্ত এর উপর অবিচল থেকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করব।
ইমাম আলী নক্বী (আঃ) বললেনঃ হে আবু কাসিম! তোমার আক্বীদার ব্যাখ্যা দাও।
আমি বললামঃ আমার আক্বীদা ও বিশ্বাস হলো, নিঃসন্দেহে, আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর ন্যায় কোন বস্তু নেই। তিনি দ্বী সীমারেখার উর্দ্ধে ,বাতিল করণ সীমারেখা ও উপমা সীমারেখা। আর তিনি শরীরী নন আর না ছবির ন্যায়, আর না তো লক্ষণীয় আর না পদার্থ বরং তিনি শরীর ও ছবির অস্তিত্ব দাতা। তিনি লক্ষণীয় এবং পদার্থ সমুহকে সৃষ্টি করেছেন তিনি প্রত্যেক বস্তুর প্রতিপালক এবং তার মালিক ও নির্ধারণ কর্তা। আর তিনি অস্তিত্বহীন থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।
আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) হলেন আল্লাহর বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রাসূল। আর তিনি (সাঃ) হলেন সর্বশেষ নবী এবং তাঁর পর কিয়ামত পর্যন্ত কোন নবী আসবেন না। (রাসূল সাঃ এর শরিয়ত হল সর্বশেষ শরিয়ত এবং তারপরে কিয়ামত পর্যন্ত কোন শরিয়ত আসবে না।)
আমার আক্বীদা হল, নবী (সাঃ)-এর পর ইমাম, খলিফা ও অলী হলেন আমিরুল মোমেনীন আলী ইবনে আবুতালিব (আঃ)। তারপর ইমাম হাসান, তারপর ইমাম হোসায়েন, তারপর যয়নুল আবেদীন, তারপর মুহাম্মদ ইবনে আলী আল-বাক্বির, তারপর জাফর ইবনে মুহাম্মদ সাদিক্ব, তারপর মুসা ইবনে জাফর আল কাযিম, তারপর আলী ইবনে মূসা আর রেযা, তারপর মুহাম্মদ ইবনে আলী (আঃ) এবং উল্লেখিত বুজুর্গদের পরে আপনিই হলেন আমার মাওলা।
তারপর ইমাম বললেন, “আমার পরে আমার পুত্র হাসান আসকারী, তারপর তিনি বললেন, “জানো! ওই (ইমাম হাসান আসকারী) ইমামের পর তাঁর খলিফার যুগের মানুষ কেমন হবে?
আমি বললাম, হে মাওলা! কেমন হবে?
তিনি (আঃ) বললেন : “কারণ লোকেরা তাদের ইমামকে, না দেখতে পাবে আর না তাদের জন্য ইমামের নাম নেওয়া জায়েয হবে। আর এটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত জারি থাকবে, পৃথিবী অন্যায়-অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। তারপর ইমামের আবির্ভাব হবে ও তিনি পৃথিবীকে ন্যায়বিচারে পরিপূর্ণ করে দেবেন।"
আমি বললাম, আমি ইমাম হাসান আসকারী ও তাঁর উত্তরাধিকারী (পুত্র)-কে স্বীকার করছি এবং এটাও স্বীকার করছি যে, ওই বুজুর্গদের বন্ধু হলেন আল্লাহর বন্ধু এবং তাঁদের শত্রু হল আল্লাহর শত্রু। আর তাঁদের আনুগত্য হল আল্লাহর আনুগত্য করা এবং তাঁদের অবাধ্যতা হল আল্লাহর অবাধ্যতা করা।
আর আমি এটাও বিশ্বাস রাখি যে, মে'রাজ সত্য, কবরে প্রশ্ন সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, সেরাত সত্য, মিযান সত্য এবং কেয়ামত আসবে তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। আর মহান আল্লাহ তাআলা কবর বাসিদেরকে জীবিত করে পুনরুত্থান করবেন।
আর আমি বিশ্বাস করি যে, বেলায়েত (অর্থাৎ খোদা, রসূল ও ইমামদের সাথে বন্ধুত্ব)-এর পর নামায, যাকাত, রোযা, হজ্জ, জিহাদ, খুমস, সৎকাজের আদেশ দেওয়া ও অসৎ কাজের নিষেধ করা সবই ফরজ।
অতঃপর ইমাম আলী নক্বী (আঃ) বললেনঃ হে আবু কাসেম! খোদার কসম! এটাই হল আল্লাহর দ্বীন, যা আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং এই বিশ্বাসের উপর তুমি অটল থাক। আর মহান আল্লাহ তাআলা তোমাকে ইহকাল ও পরকালে সত্যের উপর অটল রাখুন।
(কামাল-উদ-দ্বীন ওয়া ইতমামিন নেয়ামত খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৩৭৯..)
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ওয়া আ'লে মুহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ওয়াহ শুরনা মাআহুম ওয়াল আন আদুওয়াহুম।