۲ آذر ۱۴۰۳ |۲۰ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 22, 2024
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত

হাওজা / আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত , গাদ্দার বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে প্রকৃত মুসলিম উম্মাহকে শনাক্ত করার মাপকাঠি ।

মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান (মুহররম, ১৪৪৪ হি.)

পর্ব ৯- ইবনে সাবিত ( আব্দুর রহমান ) হযরত সা'দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস ( রা :) থেকে বলেছেন : কোনো এক হজ্জে মুয়াবিয়া আগমন করলে হযরত সাদ তার কাছে প্রবেশ করলেন । অত:পর সেখানে আলীর কথা স্মরণ করা হলে সে ( মুয়াবিয়া ) তাঁর নিন্দা , গীবৎ ، তিরস্কার ও কটূক্তি করল । আর এতে হযরত সাঈদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস ( রা:) ক্রুদ্ধ ও রাগম্বিত হলেন এবং বললেন : তুমি এটা বলছ এমন এক ব্যক্তির ব্যাপারে যাঁর সম্পর্কে আমি রাসূলুল্লাহকে (সা:) বলতে শুনেছি : (( আমি যার মাওলা ( কর্তৃত্ব শীল , অভিভাবক , ওয়ালী , পরিচালক , নেতা ইমাম ) আলী তার মাওলা )) , তাঁকে ( সা:) বলতে শুনেছি : (( হযরত মূসার ( আ: ) কাছে হযরত হারূন ( আ:) যেমন তুমিও ( আলী ) আমার কাছে ঠিক তেমন ; তবে আমার পরে কোনো নবী নেই )) এবং তাঁকে আমি বলতে শুনেছি : (( আজ এমন এক ব্যক্তির হাতে আমি অবশ্যই ( সেনাবাহিনীর) পতাকা অর্পণ করব যে মহান আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসে ।))

দ্র: সুনান ইবনে মাজাহ ( ২০২ - ২৭৫ হি ), হযরত আলীর ( রা: ) ফযীলত , হাদীস নং ১২১ , পৃ : ৩১ ,

প্রকাশক : দার ইহয়াইত তুরাস আল আরাবী বৈরুত লেবানন , প্রথম সংস্করণ , প্রকাশ কাল : ২০০০ খ্রী: ( ১৪২১ হি:)

عن ابن سابط و هو عبد الرحمن ، عن بعد بن أبي وقّاص ؛ قال : قدِم معاويةُ هي بعضی حَجّاته ، فدخل علیه سعدٌ ، فذکروا عليّاً . فنال منه . فَغَضِبَ سَعْدٌ ، و قال : تقولُ هذا لرجل سمعت رسول ایله -ص- يقول : (( من کنت مولاه فعلی مولاه . )) و سمعته يقول : أنت منِّي بمنزلة هارون من موسیٰ إلّا أنّه لا نبيَّ بعدي . )) و سمعته يقول : (( لَأُعْطِيَنَّ الرّايةَ اليومَ رَجُلاً يُحِبُّ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَهُ . ))

হযরত ফাতিমা ( আ:) এবং হযরত আলী ( আ:) ছিলেন মহানবী ( সা:) এর কাছে সবচেয়ে প্রিয় :

হযরত বুরাইদা ( রা:) বলেন : রাসূলুল্লাহর ( সা: ) কাছে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন হযরত ফাতিমা ( আ:) এবং পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন হযরত আলী ( আ:) । ইব্রাহীম ইবনে সাঈদ বলেন : অর্থাৎ তাঁর ( সা:) আহলুল বাইতের (আ:):মধ্য থেকে । আবূ ঈসা বলেন : এই হাদীস হাসান গরীব ... । ( দ্র: প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , হাদীস নং ৩৮৭৭ , পৃ : ১০০৬ - ১০০৭ )

জুমাই ইবনে উমাইর আত তাইমী থেকে : তিনি বলেন : আমি আমার ফুফুর সাথে হযরত আয়েশার ( রা:) কাছে গেলাম । অত:পর তাকে ( হযরত আয়েশা ) জিজ্ঞেস করা হল যে রাসূলুল্লাহর ( সা:) কাছে কোন্ ব্যক্তি ছিলেন সবচেয়ে প্রিয় ? তখন তিনি ( হযরত আয়েশা ) বললেন : ফাতিমা । অত:পর তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল : পুরুষ দের মধ্য থেকে ( কে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন ) ? তিনি ( হযরত আয়েশা ) বললেন : তাঁর স্বামী ( অর্থাৎ আলী ) । আমি যতদূর জানি যে তিনি ( আলী ) ছিলেন অত্যন্ত রোজাদার ও অত্যন্ত মুসাল্লী (নামায আদায়কারী) । এই হাদীসটি হাসান গরীব ।

عن جُميعِ بنِ عُميرِ التيمي ، قالت : دخلتُ مع عمّتي علی عائشة فسُئِلت : أيّ الناس کان أحبَّ إلیٰ رسول اللّٰه -ص- ؟ قالت : فاطمةُ ، فقيل : من الرجال ؟ قالت : زوجُها ، إن کان ما علمتُ صوّامَاً قوّاماً . هذا حدیث حسن غریب .

( দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , কিতাবুল মানাক্বিব , অনুচ্ছদ ৬১ : ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ - সাল্লাল্লাহু আলাইহিমা ওয়া সাল্লাম - এর ফযীলত , হাদীস নং ৩৮৮৩ , পৃ : ১০০৮ )

আর মুয়াবিয়াই হযরত আলীকে ( আ: ) গালি দেয়ার কুপ্রথা ও বিদাতের প্রচলনকারী ও প্রবর্তক যা বনী উমাইয়ার ৯০ বছর খিলাফত ও রাজত্বকাল জুড়ে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রচলিত থেকেছে ; কেবল এই জঘণ্য বিদাত ও দুষ্কর্ম থেকে ব্যতিক্রম ছিল খলীফা উমর ইবনে আব্দুল আযীযের আড়াই বছরের রাজত্ব কাল । তখন ( ৯০ বছর যাবৎ ) মুসলিম উম্মাহর সিংহভাগ জনগণ হয় হযরত আলীকে ( আ:) গালি গালাজ করত নতুবা নিশ্চুপ থেকে এ জঘন্য অন্যায়ের বাধা দিত না অর্থাৎ তারা প্রকাশ্যে গালি না দিলেও তাদের সামনে প্রকাশ্যে গালি দেয়া হলেও তারা এ ব্যাপারে ছিল নির্বিকার । কেবল মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি এর প্রতিবাদ করত বা তারা গালি দেয়াটা অন্ততঃ মনে মনে অপছন্দ ও ঘৃণা করত । তাই এ থেকে কি প্রমাণিত হয় না যে , মুসলিম উম্মাহর সিংহভাগ বা সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ রাসূলুল্লাহর পরে তাঁর ( সা:) আহলুল বাইতের (আ:) সাথে বিশেষ করে আলীর ( আ:) সাথে কত বড় গাদ্দারী করেছে এবং এদের হাতেই তো ইমাম হুসাইন ইবনে আলী ( আ:) নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেছেন !!

অথচ হযরত আলীকে ইমাম হুসাইনকে ও আহলুল বাইতকে গালি দেয়া , ঘৃণা করা , তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ , তাঁদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও তাঁদেরকে হত্যা করা মহানবীকে ( সা:) গালি দেয়া , ঘৃণা করা , তাঁর সাথে শত্রুতা পোষণ এবং তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও তাঁকে হত্যা করার নামান্তর যা মহানবীর ( সা:) হাদীস থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় ।

যেমন :

ইমাম আলী ( আ: ) মুমিনদের মাওলা ( কর্তৃত্বশীল অভিভাবক , নেতা , ইমাম , পরিচালক , তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসক সুলতান ) :

হযরত বারা ইবনে আযেব ( রা :) বলেন : বিদায় হজ্জ পালন করে রাসূলুল্লাহর ( সা:) সাথে আমরা

রওয়ানা হই ( মদীনার উদ্দেশ্যে ) । অত:পর তিনি ( সা:) পথিমধ্যে এক স্থানে ( গাদীর - ই খুম নামক স্থানে ) যাত্রাবিরতি করেন । তিনি জামাতে নামায আদায়ের নির্দেশ দেন । অত:পর তিনি আলীর হাত ধরে বললেন : আমি কি মুমিনদের নিজেদের কাছে তাদের চেয়ে অধিক প্রাধান্যপ্রাপ্ত ও নিকটবর্তী ( আওলা )

নই ? তখন সবাই বলল : জী হ্যাঁ । তিনি বললেন : আমি কি প্রত্যেক মুমিনের কাছে তার চেয়ে অধিক প্রাধান্য প্রাপ্ত ও নিকটবর্তী ( আওলা ) নই ? তখন সবাই বলল : জী হ্যাঁ । তখন তিনি বললেন : এ ( আলী ) ঐ ব্যক্তির মাওলা যার আমি মাওলা । হে আল্লাহ , যে তাঁকে ( আলী ) ভালবাসে তাকে আপনি ভালবাসুন । যে তাঁর সাথে শত্রুতা করে তার সাথে আপনিও শত্রুতা করুন ।

( এ হাদীসটি সহীহ , দ্র : আলবানী কর্তৃক গবেষণা কৃত গ্রন্থ সহীহু সুনানি ইবনে মাজাহ ; আর এটাই প্রসিদ্ধ মুতাওয়াতির এবং সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাব স্বীকৃত ও গৃহীত ( মকবূল) সন্দেহাতীত ও নিশ্চিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত গাদীর - ই খুমের হাদীস যা মহানবীর (সা:) ১১০ এর অধিক সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে । )

দ্র : সুনান ইবনে মাজাহ , হযরত আলীর ( রা: ) ফযীলত , হাদীস নং ১১৬ , পৃ : ৪০ , প্রকাশক : দার ইহয়াইত তুরাস আল আরাবী , বৈরুত , লেবানন , ১ম সংস্করণ , প্রকাশ কাল : ২০০০ খ্রী : ( ১৪২১ হি: )

একমাত্র নুবুওয়তের মাকাম ব্যতীত

হযরত মূসার ( আ:) কাছে হযরত হারূনের ( আ: ) যে মাকাম ও মর্যাদা রাসূলুল্লাহর ( সা:) কাছে হযরত আলী (আ:) সেই মাকাম ও মর্যাদার অধিকারী :

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ ( রা:) বলেন যে রাসূলুল্লাহ ( সা:) আলীকে বললেন : মূসার ( আ:) কাছে হারূনের মাকাম ও মর্যাদার মতো আমার কাছে তুমি ; তবে আমার পরে কোনো নবী নেই । আবূ ঈসা ( ইমাম তিরমিযী ) বলেন : এই সনদ সূত্রে এ হাদীসটি হাসান গরীব ।

আর এই অনুচ্ছদে সা'দ , যাইদ ইবনে আরকাম , আবূ হুরায়রা এবং উম্মে সালামাহ থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে ।

( দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , কিতাবুল মানাক্বিব , অধ্যায় ২১ : হযরত আলীর (রা:) ফযীলত , হাদীস নং ৩৭৩৯ , পৃ : ৯৮১ )

হযরত সা'দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস বলেন যে রাসূলুল্লাহ ( সা:) আলী কে বললেন : মূসার কাছে হারূনের মাকাম ও মর্যাদার মতো আমার কাছে তুমি ( তোমার মাকাম ও মর্যাদা ) ; তবে আমার পরে কোনো নবী নেই । তিনি ( আবূ ঈসা ইমাম তিরমিযী ) বলেন : এটা হাসান সহীহ হাদীস । আর এ হাদীসটি মহানবী ( সা:) থেকে সা'দের মাধ্যমে একাধিক সনদ সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে ।

দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , কিতাবুল মানাক্বিব , অনুচ্ছদ ২১ , হাদীস নং ৩৭৪০ , পৃ : ৯৮১ - ৯৮২ )

এই হাদীসটি হাদীস - ই মানযিলাত ( মাকাম ও মর্যাদার হাদীস ) নামে প্রসিদ্ধ যা সহীহ , মুতাওয়াতির , সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে স্বীকৃত ও গৃহীত , অকাট্য , সন্দেহাতীত ও নিশ্চিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হাদীস ।

মুনাফিক থেকে মুমিনকে পৃথক করার মাপকাঠি হযরত আলীকে ভালোবাসা :

হযরত আলী ( আ:) বলেন : আমাকে উম্মী নবী ( সা:) প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন যে মুমিন ব্যতীত কেউ তোমাকে ভালবাসে না এবং মুনাফিক ব্যতীত কেউ তোমাকে ঘৃণা করে না ।

আবূ ঈসা বলেন : এটি হাসান সহীহ হাদীস ।

দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , হাদীস নং ৩৭৪৫ , পৃ : ৯৮২

এ হাদীসটি নি: সন্দেহে সহীহ , সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে স্বীকৃত , গৃহীত ও প্রতিষ্ঠিত হাদীস ।

আল - মুসাওয়ির আল - হিময়ারীর মাতা বলেন : আমি উম্মে সালামাহর ( রা :) প্রবেশ করলে তাঁকে বলতে শুনলাম : রাসূলুল্লাহ ( সা :) বলতেন : কোনো মুনাফিকই আলীকে ভালবাসে না এবং কোনো মুমিনই তাঁকে ঘৃণা করে না । তিনি ( ইমাম তিরমিযী ) বলেন : এ অনুচ্ছদে আলী থেকে বর্ণিত হয়েছে এবং এ হাদীসটি হাসান গরীব । .....

( দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , হাদীস নং ৩৭২৬ , পৃ : ৯৭৯ )

হযরত আবু সাঈদ আল খুদরী বলেন : আমরা অর্থাৎ আনসারগণ আলী ইবনে আবী তালিবের প্রতি তাদের ঘৃণা পোষণের কারণে মুনাফিকদেরকে চিনতাম ও শনাক্ত করতাম ।

( দ্র : সহীহ সুনান আত তিরমিযী , হাদীস নং ৩৭২৬ , পৃ : ৯৭৯ ) ।…চলবে…

تبصرہ ارسال

You are replying to: .