۲ آذر ۱۴۰۳ |۲۰ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 22, 2024
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত

হাওজা / আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত , গাদ্দার বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে প্রকৃত মুসলিম উম্মাহকে শনাক্ত করার মাপকাঠি ।

মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান (মুহররম, ১৪৪৪ হি.)

পর্ব ১৩- রাসূলুল্লাহর (সা:) ওফাতের পর হাদীস বর্ণনা ও চর্চায় নিষেধাজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা আরোপের কারণে গোটা মুসলিম উম্মাহ রাসূলুল্লাহর ( সা:) আহলুল বাইতের সঠিক পরিচিতি লাভ করতে পারে নি বরং ইসলামের সার্বিক বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যায় এবং এ কারণে উম্মাহ সঠিক ইসলামী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করা থেকে বঞ্চিত থেকে যায় যার ফলশ্রুতিতে তারা হযরত আলীর বিরুদ্ধে গাদ্দারী করে এবং মহানবীর ওফাতের ৫০ বছর পরে ইমাম হুসাইন ( আ:)কে কারবালায় হত্যা ও শহীদ করে । অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছিল যে বনী উমাইয়ার ৯০ বছর শাসনামলে হযরত আলীকে প্রকাশ্যে মসজিদ সমূহে গালিগালাজ করা হত ; বনী উমাইয়ার খিলাফত প্রকৃত ইসলামী শাসন ও খিলাফত আহলুল বাইতকে ধর্মত্যাগী খারিজী বলে অভিহিত করা হত । অথচ সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে : রাসূলুল্লাহ ( সা :) বলেছেন : " কুরাইশী বংশীয় কিছু অল্প বয়স্ক যুবকের হাতে আমার উম্মতের ধ্বংস হবে । "

আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত সহীহ বুখারীর অপর এক হাদীসে : রাসূলুল্লাহ ( সা:) বলেছেন : কুরাইশদের এই শাখাই ( মহল্লা : বনী উমাইয়া ) জনগণকে ( মুসলিম উম্মাহ) ধ্বংস করবে । তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল : তাহলে আপনি আমাদেরকে কী আদেশ করেন ? তখন তিনি বললেন : যদি জনগণ তাদেরকে বর্জন করত । ( দ্র : আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল ইবনে ইব্রাহীম ইবনে বার্দেযবাহ্ আল - বুখারী ( মৃ : ২৫৬ হি: ) কর্তৃক সংকলিত সহীহ আল বুখারী , কিতাবুল মানাক্বিব , হাদীস নং ৩৬০৪ , পৃ : ৮৮১ , প্রকাশক : দারুল ফিকর , বৈরুত , ১ম সংস্করণ , প্রকাশ কাল : ২০০৮ )

আর মুয়াবিয়াহ ইবনে আবূ সুফিয়ান তো জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা এবং হযরত আলীকে (আ:) গালি গালাজ দেয়ার ঘৃণ্য বিদ' আতের প্রবর্তক । অকাট্য , সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত সহীহ হাদীসে রাসূলুল্লাহ ( সা:) বলেছেন : হায় আম্মার ( আম্মারের জন্য দু:খ ) ! তাঁকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হত্যা করবে ঐ অবস্থায় যে সে তাদেরকে বেহেশতের দিকে আহবান করবে এবং তারা ( ঘাতক বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ) তাকে ডাকবে দোযখের দিকে ।

وَیْحَ عَمَّارٍ ! تَقْتُلُهُ الْفِئَةُ الْبَاغِیَةُ یَدْعُوْهُمْ إِلَی الْجَنَّةِ وَ یَدْعُوْنَهُ إِلَی النّارِ .

( দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ আল বুখারী , কিতাবুস সালাত , হাদীস নং ৪৪৭ পৃ : ১২১ )

মহানবীর ( সা:) সুন্নাহ ও হাদীস চর্চা নিষিদ্ধ করনের ভুল নীতি বলবৎ থাকায়ও বনী উমাইয়ার দু:শাসনে মুসলিম উম্মাহয় ঘৃণ্য বিদ'আত ও বিচ্যুতির সয়লাব হয়ে যাওয়ার কারণেই মুসলিম উম্মাহর ইসলাহ ( সংশোধন ) , দ্বীন - ই ইসলামের হেফাযত , অন্যায়ের প্রতিকার , আদল ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করার জন্যই ইমাম হুসাইন ( আ: ) ক্বিয়াম করেছিলেন ।

(( প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে , সর্ব সাধারণ প্রচলিত ও শাব্দিক -আভিধানিক অর্থে এমনকি ফিকহী পারিভাষিক অর্থে কোনো ব্যক্তির আহলুল বাইত

হচ্ছে তার গৃহবাসীগণ যেমন : তাঁর স্ত্রী , পুত্র - কন্যা , পিতা - মাতা , ভাই বোন , চাকর - বাকর ; এমনকি তার গৃহপালিত পশুরাও আহলুল বাইত যাদের ভরণপোষণ ঐ ব্যক্তির উপর ন্যস্ত । ( দ্র : মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আন - নাজাফী প্রণীত জাওয়াহিরুল কালাম ফী শারহি শারায়েউল ইসলাম , প্রকাশক : আল - মাকতাবাতুল ইসলামীয়াহ , তেহরান , ইরান , ৪র্থ সংস্করণ , প্রকাশ কাল : ১৩৮৪ ( ফার্সী ) ।) এ অর্থের সম্প্রসারণে ব্যক্তির অন্যান্য নিকটাত্মীয় ও জ্ঞাতি ( কওম ) এমনকি তার একান্ত ঘনিষ্ঠ আদর্শিক অনুসারীদেরও আহল ও আহলুল বাইত বলা হয় । আর এতদর্থেই মহানবী (সা:) হযরত সালমান ফার্সী সম্পর্কে বলেছেন : সালমান আমাদের আহলুল বাইতের অন্তর্ভুক্ত । তবে বিশেষ কুরআনী পারিভাষিক অর্থে সালমান মহানবীর (সা:) আহলুল বাইতের ( আ:) অন্তর্ভুক্ত নন । আর পবিত্র কুরআনে এই বিশেষ পারিভাষিক অর্থে আহলুল বাইতের ব্যবহার ও উল্লেখ ছাড়াও সাধারণ প্রচলিত শাব্দিক আভিধানিক অর্থেও আহলুল বাইত ও আহল শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে । আর সূরা - ই আহযাবের ৩৩ নং আয়াতের শানে নুযূলে আহলুস সুন্নাহর সনদ সূত্র সমূহে বর্ণিত ৭০ এর অধিক রেওয়ায়তে বর্ণিত মুতাওয়াতির হাদীস - ই কিসা ( চাদরের হাদীস ) পবিত্র কুরআনের সূরা - ই আহযাবের ৩৩ নং আয়াতে উল্লেখিত মহানবীর আহলুল বাইত ( আ:) যে বিশেষ কুর'আনী পরিভাষা তার বলিষ্ঠ অকাট্য দলিল প্রমাণ । যখন মহানবী ( সা :) উক্ত আয়াতস্থ আহলুল বাইতের এই বিশেষ অর্থ করেছেন তখন মুসলিম উম্মাহকে তা মেনে নিতেই হবে । কারণ তিনি ( সা: ) পবিত্র কুরআন আনয়নকারী এবং তিনি পবিত্র কুরআনের প্রামাণিক ব্যাখ্যাকারী যিনি নি:সন্দেহে নিজ থেকে কোনো কথা বলেন না বরং যা বলেন তা তাঁর প্রতি প্রেরিত ওহি । আর নি: সন্দেহে এই হাদীস - ই কিসা সহীহ মুতাওয়াতির , অকাট্য মুসাল্লাম ( সুনিশ্চিত সনদেহাতীত ) এবং শিয়া - সুন্নী নির্বিশেষে সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে গৃহীত ( মকবূল ) হাদীস । ))

তাই পবিত্র কুরআনের সূরা - ই আহযাবের ৩৩ নং আয়াত এবং উক্ত আয়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট সহীহ মুতাওয়াতির এবং শিআ - সুন্নী নির্বিশেষে সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে গৃহীত হাদীস - ই - কিসার আলোকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে সূরা - ই আহযাবের ৩৩ নং আয়াতে উল্লেখিত মহানবীর ( সা:) আহলুল বাইত একটি বিশেষ অর্থের কুর'আনী পরিভাষা যা সাধারণ প্রচলিত ও শাব্দিক আভিধানিক অর্থে এমনকি ফিকহী পারিভাষিক অর্থে আহলুল বাইত হতে ভিন্ন । এই বিশেষ কুআনী পারিভাষিক অর্থে আহলুল বাইত হচ্ছেন পবিত্র ( নিষ্পাপ মাসূম ) যাঁদের অন্তর্ভুক্ত হযরত আলী , হযরত ফাতিমা , ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন ( আ:) এবং ইমাম হুসাইনের বংশধর ইমাম যাইনুল আবেদীন আ: থেকে দ্বাদশ ইমাম মাহদী ( আ:) পর্যন্ত আরো ৯ জন নিষ্পাপ ইমাম । তাই বিশেষ কুরআনী পারিভাষিক অর্থে মহানবীর (সা:) পবিত্র মাসূম ( নিষ্পাপ ) আহলুল বাইত (আ:) হচ্ছে

[12:03 PM, 8/3/2022] Munir Hussain Bd: তাই বিশেষ কুরআনী পারিভাষিক অর্থে মহানবীর (সা:) পবিত্র মাসূম ( নিষ্পাপ ) আহলুল বাইত (আ:) হচ্ছেন মাত্র ১৪ মাসূম ব্যক্তি যাদের অন্তর্ভুক্ত সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী খাতামুল আম্বিয়া ওয়ার রুসুল ( সর্বশেষ নবী ও রাসূল) হযরত মুহাম্মাদ (সা) , সর্বশ্রেষ্ঠা নারী ও বেহেশতেবাসী সকল নারীর নেত্রী হযরত ফাতিমা (আ) এবং বারো নিষ্পাপ মাসূম ইমাম (আ) । অকাট্য প্রামাণিক সূত্রে প্রতিষ্ঠিত ও সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে গৃহীত মকবূল বারো ইমামের হাদীস এবং নিশ্চিত ও সন্দেহাতীত ভাবে সকল ফির্কা ও মাযহাবের কাছে গৃহীত (মকবূল) যুগের ইমামের আনুগত্যের হাদীস, উলিল আমরের ( কর্তৃত্বকারীগণ অর্থাৎ ইমাম ও নেতাগণ أُوْلُو الْأَمْرِْ ) আনুগত্যের আয়াত ও এ আয়াতের শানে নুযূলে মহানবী (সা) থেকে বিশ্বস্ত সহীহ ( বিশুদ্ধ ) প্রামাণিক সূত্রে প্রতিষ্ঠিত হাদীসসমূহ এবং পবিত্র কুরআনের আরো বহু আয়াত ও সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে গৃহীত , প্রতিষ্ঠিত সহীহ হাদীস সমূহের ( যেমন: মুতাওয়াতির হাদীসে সাকালাইন ) আলোকে প্রমাণিত হয় যে উম্মতের হিদায়তের জন্য মহানবীর (সা) আহলুল বাইত (আ) ও পবিত্র কুরআন কিয়ামত পর্যন্ত বিদ্যমান থাকবেন এবং এদুভয় কখনোই পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না।

সুতরাং পরকালে মুক্তি ( নাজাত ) ও বেহেশতবাসী যুবকদের নেতৃদ্বয় ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের নেতৃত্বের ছায়াতলে থাকতে হলে পবিত্র কুরআন ও আহলুল বাইতকে (আ) দৃঢ় ভাবে আঁকড়ে ধরার আর কোনো বিকল্প ( বাদীল) নেই। তাই ইমাম হুসাইনের (আ) আহলুল বাইতের আ পথ ছাড়া যে কোনো পথে নাজাত ( মুক্তি ) নেই। অন্য যে কোনো পথ ই হচ্ছে গাদ্দারের পথ অর্থাৎ ভ্রষ্টতা ও বিচ্যুতির পথ।

ইব্রাহীম নাখয়ী বলেছেন: " যারা হুসাইনের (আ) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে আমি যদি তাদের অন্তর্ভুক্ত হতাম এবং এরপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হত তাহলে আমি বেহেশতে রাসূলুল্লাহর (সা) দিকে তাকাতেই লজ্জা বোধ করতাম । " ( দ্র: ইবনে হাজার আস্কালানী প্রণীত তাহযীবুত তাহযীব , খ: ২, পৃ : ৩৫৫ )

তাই গাদ্দারদের পথ পরিত্যাগ করে যারা পবিত্র কুরআন ও ইমাম হুসাইনের (আ) অর্থাৎ রাসূলুল্লাহর আহলুল বাইতের (আ) পথে থাকবে তারাই পরকালে সফলকাম ( কামিয়াব ) হবে। কারণ পবিত্র কুরআন ও নূরনবীর ( সা ) পথই হচ্ছে তাঁর ইতরাৎ অর্থাৎ অতিনিকটাত্মীয় ও রক্তজ বংশধর আহলুল বাইতের (আ) পথ ও বিশেষ করে সাইয়েদুশ শুহাদা ইমাম হুসাইনের (আ) পথ তা হচ্ছে সিরাত -ই মুস্তাকীম ( সরল সঠিক পথ ) অর্থাৎ হিদায়তের পথ । মহান আল্লাহ আমাদেরকে ইমাম হুসাইন (আ) ও আহলুল বাইতের (আ) খাঁটি অনুসারী মুহিব্বীনের অন্তর্ভুক্ত এবং গাদ্দারদের থেকে পৃথক করে দিন । সমাপ্ত

تبصرہ ارسال

You are replying to: .