۲ آذر ۱۴۰۳ |۲۰ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 22, 2024
মেটার বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের মামলা
মেটার বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের মামলা

হাওজা / ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধে সহিংসতায় ফেসবুক উসকানি দিয়েছে এমন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির মূল কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলারের মামলা করেছেন একদল ভুক্তভোগী।

মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান (১৬-১২-২০২২)

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধে সহিংসতায় ফেসবুক উসকানি দিয়েছে এমন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির মূল কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলারের মামলা করেছেন একদল ভুক্তভোগী। ( সূত্র : ইত্তেফাক)

একদল পাশ্চাত্য প্রেমিক গরু গর্দভের মতে ফেসবুক, টুইটার প্রভৃতি সামাজিক (অসামাজিক বলাই শ্রেয়) মাধ্যম মানুষের ব্যক্তিগত , পারিবারিক সামাজিক ও পেশাদারী জীবনের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে !!! এ সব (অ) সামাজিক মাধ্যম ছাড়া নাকি এখন মানব জীবন অপূর্ণাঙ্গ ও বহু ক্ষেত্রেই নাকি অচল অথবা জীবন নাকি শুষ্ক ও রস বিহীন।

অথচ ফেসবুক যে ইথিওপিয়ার গৃহযুদ্ধে সহিংসতায় উস্কানি দিয়েছে তার অভিযোগ তুলে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে একদল ভুক্ত ভোগী কেনিয়ায় এক আদালতে ২০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেছে । অর্থাৎ এ থেকে বোঝা যায় যে এ ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমূহ সমাজে সৌহার্দ্য , সম্প্রীতি ও বন্ধুত্ব পূর্ণ পরিবেশ ও সম্পর্কের পরিবর্তে দেশ ও সমাজে গৃহযুদ্ধ , বিবাদ , সহিংসতা , মারামারি, বিরোধ , মতভেদ, দ্বন্দ্ব - সংঘাত , হিংসা , ঘৃণা ও বিদ্বেষের বিষ বাষ্প ছড়িয়ে দেয় এবং সেগুলোয় উস্কানি দেয় ও ইন্ধন যোগায় ।

ইরানে সাম্প্রতিক গোলোযোগ ও ফিতনায় এ সব অসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এ ধরণের জঘন্য ভূমিকাই পালন করেছে এবং এখনো তা করেই যাচ্ছে। আর ইথিওপিয়ার গৃহযুদ্ধে উস্কানি দেওয়া থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফেসবুক এবং অন্যান্য (অ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এ ধরণের গর্হিত নোংরা কাজ করেই যাচ্ছে এবং তরল মতির অনভিজ্ঞ উঠতি বয়সের তরুণ ও তরুণীদের ভালোমতোই বিভ্রান্ত ও বিচ্যুত এবং তাদের মাথাই খারাপ করে দিচ্ছে তথাকথিত এ সব নব্য আধুনিক প্রযুক্তির নামে ।

আসলে এ সব কুৎসিত অসভ্য অসামাজিক মাধ্যম উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মানুষকে বিশেষ করে অল্পবয়স্ক কম অভিজ্ঞ প্রজন্মকে বোকা আহমক বানাচ্ছে সত্য মিথ্যা তথ্য - উপাত্ত ও সংবাদ পরিবেশন করে । অথচ বেশির ভাগ মানুষ দু:খজনকভাবে ফেসবুক সহ এ সব (অ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারিত তথ্য , সংবাদ ও প্রতিবেদনে আস্থা রাখছে এবং তাতে মজেও যাচ্ছে । কিন্তু তারা বুঝতেই পারছে না যে এ সব অসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফাসিক ( মিথ্যুক , মিথ্যাচারী, মিথ্যাবাদী, দুর্নীতি পরায়ণ করাপ্ট ) এবং " ইন জাআকুম ফাসিক্বুন বিনাবাইন্ ফাতাবাইয়ানূ ...

إِنْ جَاءَکُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَیَّنُوْا ....

( যদি তোমাদের কাছে কোনো ফাসিক [দুর্নীতি পরায়ণ অসাধু মিথ্যাবাদী অনির্ভরযোগ্য অবিশ্বস্ত ব্যক্তি] কোনো সংবাদ [ খবর ,তথ্য , প্রতিবেদন ] নিয়ে আসে তাহলে তোমরা ঐ সংবাদের সত্যতা যাচাই-বাছাই ও নিরূপণ [ তাবাইয়ুন ] করবে । " ---- পবিত্র কুরআনের সূরা -ই হুজুরাত (৪৯) এ আয়াতে ( আয়াত নং ৬ ) উল্লেখিত ফাসিক্বের ( লম্পট , মিথ্যাবাদী, দুর্নীতি গ্রস্ত , মিথ্যাবাদী , অবিশ্বস্ত , অনির্ভরযোগ্য ) বাস্তব নমুনা ও মিসদাক্ব্।

অধিকাংশ মানুষের তাবাইয়ুন ( সত্যতা যাচাই বাছাই ও নিরূপণ ) করার ক্ষমতা ও সামর্থ্য নেই। আর এ ক্ষমতা অর্জন করতে হলে বাসীরাত ( بصیرت বিচক্ষণতা , দূরদৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টি) ও গণমাধ্যম সাক্ষরতা ( media literacy سواد رسانه‌ای) থাকতে হবে। আর তা না হলে ফেসবুক এবং এ ধরণের (অ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলো মানুষকে বিশেষ করে উঠতি বয়সের অভিজ্ঞতা হীন বা কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কিশোর - কিশোরী এবং যুবক - যুবতীদেরকে বোকা , আহমক ও অজ্ঞ - মূর্খ ( جَاهِلْ ) বানাচ্ছে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটাচ্ছে । আর তাতে সাম্রাজ্যবাদীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেখুন:

২০ বছরের মধ্যে শিশুদের মূর্খ বানাবে ফেসবুক-টুইটার | Online Version

https://www.bd-pratidin.com/tech-world/2017/08/23/258655

" ফেসবুক ও টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আধিপত্যের কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিশুরা অশিক্ষিত হবে।

আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমরা এমন শিশুদের পাব যারা পড়তে পারবে না। ’

সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পশ্চিমা বিশ্বের শিক্ষার মান অনেক নেমে গেছে। ১৯৮২ সালের পর গত বছরই প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে সাহিত্য পড়ার হার সবচেয়ে কম।

যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে কিশোর বয়সীদের মধ্যে একাকিত্বের মাত্রা সবচেয়ে বেশি এবং ২০০৭ সালে আইফোন বাজারে আসার পর থেকে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটেছে। "

এ ছাড়াও এ সব সামাজ কি যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় গোপন রেখে ছদ্মনামে অ্যাক্টিভিটি চালানো যায় । তাই এ সব মাধ্যমে বহু তথ্য , সংবাদ ও প্রতিবেদনের উৎস্য একদম অখ্যাত - অজ্ঞাত এবং যোগাযোগ কারী ব্যক্তিদের পরিচয়ও অনেক বা বেশির ভাগ সময় অজ্ঞাত ( মাজহুল مجهول ) থেকে যায় যার ফলে বহু তথ্য , সংবাদ ও প্রতিবেদনের সত্যতা নিরূপণ ও যাচাই বাছাই করা আদৌ সম্ভব হয় না অথবা অত্যন্ত দু:সাধ্য হয়ে পড়ে।

তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বহু তথ্য , সংবাদ ও প্রতিবেদনের অবস্থা ও পরিণতি হচ্ছে ইসলামী হাদীস শাস্ত্রের মাজহুল ( অজ্ঞাত অখ্যাত পরিচয়হীন) রাবীর ( বর্ণনাকারী ) রেওয়াত ও হাদীসের অবস্থা ও পরিণতির মতো । আর অজ্ঞাত মাজহুল রাবীর ( راوی مجهول ) বর্ণনা কৃত রেওয়ায়ত ও হাদীস হচ্ছে দুর্বল ( ضعیف ) ও অগ্রহণযোগ্য ( مردود )।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমূহে প্রদত্ত ও উপস্থাপিত বহু অগণিত তথ্য , সংবাদ ও প্রতিবেদন হচ্ছে মাজহুল অর্থাৎ অজ্ঞাত অখ্যাত পরিচয়হীন উৎস্য ও ব্যক্তি হতে আহরিত ও সংগৃহীত। তাই এগুলোর ওপর নির্ভর করা যায় না ।

কিন্তু সাধারণ মানুষের বিশেষ করে শিশু , কিশোর ও উঠতি বয়সের তরুণ প্রজন্মের পর্যাপ্ত পরিমাণ বাসীরাত (বিচক্ষণতা ) ও গণমাধ্যম সাক্ষরতা ( media literacy) না থাকার কারণে তারা বিভিন্ন ধরণের ট্র্যাপ বা ফাঁদে পড়ে ধর্মীয় আকীদা বিশ্বাস এবং সামাজিক নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছে ও সর্বনাশা পথে পা বাড়াচ্ছে। তাই এ সব যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে অবশ্যই সুপরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে।

যেহেতু ফেসবুক - টুইটার ইত্যাদির মতো তথাকথিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেশে দেশে গোলোযোগ , বিশৃঙ্খলা , ফিতনা - ফ্যাসাদ , দ্বন্দ্ব - সংঘাত ও গৃহযুদ্ধ থেকে শুরু করে মানুষকে বিশেষ করে শিশু ও উঠতি বয়সের তরুণ - তরুণীদের মূর্খ বানাচ্ছে ও তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাচ্ছে এবং বর্তমানে কিশোর বয়সীদের মধ্যে একাকিত্বের মাত্রা সবচেয়ে বেশি এ সব স্মার্ট ফোন ও যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে প্রতিদিন বেশি বেশি সময় কাটানোর জন্য সেহেতু এ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বললে তো কোনো অত্যুক্তি হবেই না বরং বিশ্বব্যাপী এ সব মাধ্যম ব্যবহারে সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিত নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও বিদ্যমান থাকা অত্যন্ত জরুরী। তাহলে তখন এ সব যোগাযোগ মাধ্যমের অনিষ্ট ও ক্ষতি থেকে দেশ , সমাজ এবং তরুণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষা ও হেফাজত সম্ভব হবে ।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .