মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রধান খাদ্যশস্য, তৈলবীজ এবং সারের দুই বৃহত্তম উৎপাদক রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে বিশাল বিঘ্ন ঘটায় যা শস্য, সার এবং জ্বালানির দামকে বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে বিশ্বব্যাপী এফপিআই সে বছর রেকর্ড স্তরে পৌঁছায়। বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার ভবিষ্যদ্বাণী বলছে, চরম আবহাওয়ার আরও বিধ্বংসী প্রভাবসহ ক্ষুধার এ প্রাদুর্ভাব অব্যাহত থাকবে। সূত্র : আল-জাজিরা
উপরিউক্ত খবর সংক্রান্ত মন্তব্য :
পশ্চিমারা প্রচার করে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া নাকি খাদ্য শস্য সরবরাহ করে পৃথিবী বাসীকে খাওয়াচ্ছে ও ক্ষুধা থেকে বাঁচিয়ে রাখছে ! অথচ এখন প্রমাণিত হল যে রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বে প্রধান খাদ্য শস্য , সার ও ভোজ্য তেল সরবরাহকারী। পশ্চিমারা যুদ্ধ বাঁধিয়ে ও রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিশ্বে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা ও খাদ্যাভাব আরো তীব্রতর করছে ও বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কেউ পশ্চিমাদের নিন্দা করছে না !!! পশ্চিমাদের প্রচারণা হচ্ছে যে : আসলে রাশিয়ারই সব দোষ !
ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে পশ্চিমারা অহেতুক রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে । জনদরদী ও মানব দরদী হলে পশ্চিমারা হয় এ নিষেধাজ্ঞা দিত না নতুবা আগে নিজেরা বিশ্ব ব্যাপী খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে রাশিয়ার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত । এখন কেন পশ্চিমারা টাল সামলাতে পারছে না ? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া রাশিয়ার পরিবর্তে খাদ্য সরবরাহ করে খাদ্য ঘাটতি পূরণ করুক । করছে না কেন ? পশ্চিমাদের সামর্থ্য নেই নাকি অধিক মুনাফা লাভের আশায় তারা বিশ্বে ঠিক মতো খাদ্য সরবরাহ করছে না ? ! খাদ্য শস্য ছাড়াও রাশিয়া বিশ্বব্যাপী সারও সরবরাহ করে যা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে খাদ্য উৎপাদনেও প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। আর নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া বিশ্বে যেমন ঠিক মতো খাদ্য সরবরাহ করতে পারছে না ঠিক তেমনি সারও ঠিক মতো সরবরাহ করতে পারছে না যার ফলে পৃথিবীতে খাদ্য শস্যের উৎপাদন ও ফলন হয়তো আরো কমে গেছে এবং এরফলে খাদ্য শস্য সংকট বিশ্বব্যাপী আরো তীব্রতর ও ঘনীভূত হচ্ছে!!!
কিন্তু মানবতার দুশমন হারে হারামযাদা পশ্চিমারা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো চক্রের কি এ নিয়ে মাথা ব্যাথা আছে ?!!!
অতএব বিশ্বের ৮২ কোটি লোক অনাহারে ভুগবেই এবং সামনে অনাহারে ভোগা মানুষের সংখ্যা যদি ভয়াবহ ভাবে বেড়ে যায় তাতে বিস্ময়েরও কিছু থাকবে না।
আর প্রকৃতি পরিবেশ দূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন , খরা, অনাবৃষ্টি, ঝড় তুফান ও বন্যা তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের এক অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পশ্চিমাদের লাগামহীন বল্গাহীন অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়নও । আর এ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের জন্যও বিশ্ব ব্যাপী খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে এবং খাদ্যাভাব ও সংকট তৈরি হচ্ছে।
অতএব বিশ্ব জুড়ে সংকট সৃষ্টির মূল নায়ক ও হোতা স্বয়ং পশ্চিমারাই বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো চক্র । আর ইত্তেফাক ও ইনকিলাবের মতো পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যম সমূহের উচিত এ ব্যাপারে সঠিক বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা দান । কিন্তু কেউ কি এ দায়িত্ব ঠিক মত পালন করছে ?!!