۲۹ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۰ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 18, 2024
নবাব সিরাজদৌল্লা
নবাব সিরাজদৌল্লা

হাওজা / নবাব সিরাজদৌল্লা ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি অখণ্ড ভারতের অবিভক্ত প্রাদেশিক বাংলার অন্তিম স্বাধীন নবাব। মুলত তার পরাজয়ের সময় থেকেই বাংলা তথা গোটা ভারতে স্বাধীনতার সূর্য অস্তনমিত হয়। পলাশী যুদ্ধের বিশ্বাসঘাতকতা ফলে করুন শাহাদাতে বাংলার বিজয়রথ থমকে যায়।

শহীদ তিতুমীর কারবালা ট্রাস্ট

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, নবাব সিরাজদৌল্লা ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি অখণ্ড ভারতের অবিভক্ত প্রাদেশিক বাংলার অন্তিম স্বাধীন নবাব। মুলত তার পরাজয়ের সময় থেকেই বাংলা তথা গোটা ভারতে স্বাধীনতার সূর্য অস্তনমিত হয়। পলাশী যুদ্ধের বিশ্বাসঘাতকতা ফলে করুন শাহাদাতে বাংলার বিজয়রথ থমকে যায়।

নবাব সিরাজদৌল্লা ১৭৭৩ সালে মুর্শিদাবাদে জন্মের পর মাত্র ২৩বছর বয়সে এক অরাজকর রাজনৈতিক পরিবেশে তিনি বাংলা(অবিভক্ত) বিহার উড়িশ্যার নবাবের পদে অভিষিক্ত হন। এই সময়ে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বর্গী ও মারাঠাদের কে পর্যদুস্ত করে বাংলার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেন। সিরাজদৌল্লা ক্ষমতা আহরনের পর থেকে বৃটিশরা পাল্টা শক্তিবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গ নবাবের আদেশ অগ্রাহ্য করে বেআইনিভাবে নির্মাণ করতে থাকে। এছাড়াও নবাবের বশ্যতা স্বীকার অগ্রাহ্য, কলকাতায় শাসনের নামে অত্যাচার, আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র, কর দিতে অস্বীকার, ও দেশীয় শিল্প ধ্বংস করতে বিলাতি পন্য বাজারে বিস্তার ইত্যাদি কারনে নবাব সিরাজদৌল্লা বৃটিশদের প্রতি ক্রুদ্ধ হোন। তিনি বৃটিশদের বিরুদ্ধে কলকাতায় কাশীমবাজার কুঠি আক্রমণ করেন। তার পূর্বে তিনি মতিঝিল আক্রমণ করে আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন ও ঘষেটি বেগমকে গ্রেফতার করেন। ২৭শে মে নবাবের সেনাবাহিনী কাশীমবাজার কুঠি আক্রমণ করে অগ্নিসংযোগ করে। কুঠিয়াল ওয়াটসনকে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। উক্ত বছরেই নবাব সিরাজদৌল্লা ১৮ই জুন কলকাতা আক্রমণ করেন। নবাবের সেনাবাহিনী একে একে বৃটিশদের প্রতিরোধ ধ্বংস করে ২০শে জুন ফোর্ট উইলিয়াম আক্রমণ করে তোপ নিক্ষেপ করে অগ্নিসংযোগ করেন। সিরাজদৌল্লা ফোর্ট উইলিয়াম কার্যত দখল করে ভস্মীভুত করে দেন। প্রধান ষড়যন্ত্রী উমিঁচাঁদ ও কৃষ্ণবল্লভ, হলওয়েল যুদ্ধবন্ধী হয়। তিনি কলকাতার নাম পরিবর্তন করে আলীনগর রাখলেন। আলীনগরের গভর্নর হিসেবে মাঁনিকচাঁদ কে নিযুক্ত করে তিনি মুর্শিদাবাদ রওনা দেন। যুদ্ধবন্দিদের ফোর্ট উইলিয়াম একটি কুঠুরিতে বন্ধী রাখা হয়। বাকি বৃটিশবাহিনী ফলতায় পালিয়ে আশ্রয় নেয়। বিহারের পূর্নিয়ার নবাব শওকত জঙ্গ বৃটিশদের কাছে মিত্রতা স্থাপন করে মুর্শিদাবাদ অভিযান শুরু করলে নবাবগঞ্জ নামক স্থানে সিরাজদৌল্লা যুদ্ধে লিপ্ত হোন। যুদ্ধে শওকত জঙ্গ কে হত্যা করে পূর্ণিয়ার গভর্নর মোহনলালকে নিযুক্ত করেন। ইতিমধ্যে বৃটিশদের নতুন সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ ও ওয়াটসন মাঁনিকচাঁদ কে হত্যা করে কলকাতা পুনরুদ্ধার করে। বাধ্য হয়ে মুর্শিদাবাদ রক্ষার্থে ১৭৫৭ সালে ৭ই ফেব্রুয়ারি আলীনগরের অপমানজনক সন্ধী করতে বাধ্য হন। ইতিমধ্যেই নবাব আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহী বিশ্বাসঘাতকদের মৃত্যুদন্ড দিতে শুরু করলে মিরজাফর, জগৎশেঠ, কৃষ্ণচন্দ্র সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা জগৎশেঠের কুঠিতে নতুন ষড়যন্ত্র রচনা করে গোপনে বৃটিশদের সাথে হাত মেলায়। তারা নবাবকে ভুল তথ্য দিয়ে পলাশী থেকে সেনা প্রত্যাহারের চাপ দিতে শুরু করে। নবাব পলাশী থেকে সেনা প্রত্যাহার করতেই ক্লাইভ পলাশী দখলের জন্য অগ্রসর হয়। কিন্তু নবাবের এক বিশ্বস্ত অনুচর গোলাম হুসাইন এই গোপন তথ্য ফাঁস করে দিলে নবাব মিরজাফর কে গ্রেফতার করে পলাশীর দিকে ধাবিত হন। ১৭৫৭ সালে ১২ই জুন বৃটিশরা চন্দননগর, হুগলি, কাটোয়া দখল করে নিলে নবাব সিরাজ বুঝতে পারেন সেনাপতিরা এই ষড়যন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত। বিদ্রোহ সাময়িক দমনের জন্য মিরজাফর কে ক্ষমা প্রদান ও পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে বিশ্বাসঘাতকতা না করার শপথ নেওয়ান। এই সময়ে বৃটিশদের প্রতিপক্ষ ফরাসিদের সমর্থন ও সাহায্য সিরাজ লাভ করেন। ২৩শে জুন পলাশীতে নবাবের বাহিনী ফরাসি সেনাপতি সাফ্রেঁকে সহিত সম্মিলিত ভাবে বৃটিশদের বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। মীরমদন ও মোহনলাল প্রবল বৃষ্টিপাতেও মুহুর্মুহু তোপবর্ষণ ও প্রবল বিক্রমে আক্রমণ চালিয়ে বৃটিশ বাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করতে শুরু করলেও মিরজাফর অধিকাংশ সেনাদের আক্রমণ করতে নিষেধ ও নিঃস্পৃহভাবে অস্ত্র তুলতে বাধা দেয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে বাকি সৈন্য নিয়ে সিরাজ মুর্শিদাবাদ রক্ষার জন্য পলাশী থেকে পিছু হটেন। তিনি চন্দননগরে ফরাসি শাসক মসিয়ে নাস কে দ্রুত পত্রমারফত সৈন্য সাহায্য চান ও সহধর্মিনী লুৎফুন্নেসা, পাঁচ বছরের মেয়ে উম্মে জোহরা ও অনুচর গোলাম হুসাইন কে সাথে নিয়ে মীরমদন ও মোহনলালকে বৃটিশদের মুর্শিদাবাদে যুদ্ধে ব্যাস্ত রাখার কথা বলে নদীপথে ভগবানগোলা হয়ে পাটনা পৌছে ফরাসি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় রনাঙ্গন খোলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু মাঝপথে ১লা জুলাই নাজিমপুর মোহনায় এক বিশ্বাসঘাতক ফকির পরিবার সহ নবাবকে ধরিয়ে দেয় সামান্য অর্থের বিনিময়ে । ২রা জুলাই পরিবারে জনসমক্ষে মিরজাফরে ছেলে মিরনের আদেশে মুহাম্মদী বেগ নবাবকে শাহাদাত করে। সেই সাথে অখণ্ড ভারতের অবিভক্ত প্রাদেশিক বাংলা থেকে স্বাধীনতার সূর্য অস্তনমিত হয়ে যায় । যার ফলস্বরূপ বাংলা তথা ভারতে অরাজকতা, লুটপাট, দেশীয়

শিল্প ধ্বংস, হতে শুরু করে। অন্যান্য রাজ্যের স্বাধীনতাকামী নবাব, রাজন্যগন সহ মোগল বাদশাহ বৃটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে। শুরু হয় নীল বিদ্রোহ, সিপাহী বিদ্রোহ, সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ, ইত্যাদি। যার ফলে বৃটিশরানি ভিক্টোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে অখণ্ড ভারতীয় উপমহাদেশে শাসনভার দখল করে।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .