۹ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۹ شوال ۱۴۴۵ | Apr 28, 2024
সুন্নী উসমানী( অটোম্যান ) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে সুন্নী আরবদের বিদ্রোহ
সুন্নী উসমানী( অটোম্যান ) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে সুন্নী আরবদের বিদ্রোহ।

হাওজা / ইতিহাসের আলোকে আজ থেকে একশো বছরের কিছু অধিক কাল আগে সুন্নী উসমানী( অটোম্যান ) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে সুন্নী আরবদের বিদ্রোহ এবং উক্ত বিদ্রোহের বিপরীতে আরব শিয়া মুসলমানদের এবং শিয়া মুসলিম আলেম সমাজের নীতি অবস্থানের মূল্যায়ন ।

রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিহাসের আলোকে আজ থেকে একশো বছরের কিছু অধিক কাল আগে সুন্নী উসমানী( অটোম্যান ) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে সুন্নী আরবদের বিদ্রোহ এবং উক্ত বিদ্রোহের বিপরীতে আরব শিয়া মুসলমানদের এবং শিয়া মুসলিম আলেম সমাজের নীতি অবস্থানের মূল্যায়ন ।

উসমানী (অটোম্যান) তুরস্ক ও ইরানকে ব্রিটেন , ফ্রান্স ,রাশিয়া প্রভৃতি ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমূহের আক্রমণ ও আধিপত্যের বিস্তার থেকে রক্ষার্থে আয়াতুল্লাহ আল - উযমা সাইয়েদ কাযিম আত - তাবাতাবাঈএর ফতোয়া এই লেখাগুলোয় উল্লেখ করা হয়েছে। এ লেখাগুলো যুহাইর সুলাইমানের লেখা প্রবন্ধ : " ১৯২০ সালে ইরাকে ইসলামী বিপ্লব "থেকে গৃহীত । এ প্রবন্ধটি ত্রৈমাসিক জ্যোতি , ২য় বর্ষ , ২য় সংখ্যা , জুলাই - সেপ্টেম্বর ২০০৩ - এ প্রকাশিত হয়েছিল। ইংরেজি থেকে আমি বাংলায় তরজমা করেছিলাম।

ঐ সময়ের মুসলিম উম্মাহর পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে আগ্রাসী ব্রিটিশ ও অন্য সকল ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমূহের বিরুদ্ধে এবং উসমানী অটোম্যান তুর্কী খিলাফত ( তুরস্ক ) ও ইরানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে

ইরাক ও ইরানের শিয়া আলেম সমাজের বিশেষ করে আয়াতুল্লাহ আল উযমা সাইয়েদ কাযিম আত তাবাতাবাঈর ঐতিহাসিক এ ফতোয়া শিয়া আলেম সমাজের সচেতনতা ও বিচক্ষণতার পরিচায়ক ও সাক্ষর । অথচ ঐ সময় আরব দেশসমূহের সুন্নী আলেম সমাজের বিরাট অংশ বিশেষ করে ওয়াহহাবী সালাফী আলেম গণ হয় সুন্নী উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের প্ররোচনা , উস্কানি ও প্রত্যক্ষ সর্বাত্মক মদদ ও সহায়তায় বিদ্রোহে সরাসরি জড়িত হয়েছিলেন অথবা নীরব , নির্বিকার ও নিশ্চুপ বসে ছিলেন। তবে অল্প কিছু সংখ্যক আরব সুন্নী আলেম সুন্নী উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে আরবদের এ বিদ্রোহের বিরোধিতা করেছিলেন। আর ইতিহাস থেকে প্রমাণিত হয় যে সুন্নী উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফত ও ইরানকে রক্ষার্থে ইরাক ও ইরানের শিয়া আলেম সমাজ এবং ঐ অল্প মুষ্টিমেয় সুন্নী আরব আলেমের পদক্ষেপ ও নীতি অবস্থান সঠিক ছিল। উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে সেদিন ( শতাধিক বছর আগেকার) আরবদের এ বিদ্রোহ ও তথাকথিত আরব বিপ্লবের পরিণতি খুবই মন্দ হয়েছে। এ বিদ্রোহের ফলে উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফত ও সাম্রাজ্য ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং ইসলামের প্রাণকেন্দ্র পশ্চিম এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য)সহ সমগ্র আরব বিশ্বের ওপর শতবর্ষাধিক কাল ধরে পাশ্চাত্যের বিশেষ করে প্রথমে যুরা ( ব্রিটেন /যুক্তরাজ্য ) ও ফ্রান্স এবং পরবর্তীতে মাযুরার ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) আধিপত্য কায়েম হয়ে যায় যা আজও বহাল আছে। আর গোটা পশ্চিম এশিয়া ( মধ্যপ্রাচ্য ) ও আরব বিশ্ব যুরা (যুক্তরাজ্য) ও ফ্রান্সের আধিপত্যাধীন থাকার কারণে পশ্চিমারা বিশেষ করে যুরা (যুক্তরাজ্য) , ফ্রান্স , মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এবং অন্যান্য ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এমনকি সোভিয়েত ইউনিয়নও কৃত্রিম মেকি সন্ত্রাসী সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের গোড়াপত্তন ও প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে এবং মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) , যুরা ( যুক্তরাজ্য) , ফ্রান্স ও পশ্চিমা দেশসমূহ এখনো ইসরাইলকে টিকিয়ে রেখেছে এবং এই ৫ মাসের গাযা - ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে ও এই সন্ত্রাসী যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্রটিকে নির্লজ্জ ভাবে সর্বাত্মক সহায়তা, মদদ ও সমর্থন করেই যাচ্ছে। সেদিন উসমানী (অটোমান) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের উস্কানি, প্ররোচনা ও মদদে আরবদের এবং আরব সুন্নী আলেম সমাজের বিদ্রোহ ছিল সম্পূর্ণ রূপে মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের সর্বৈব স্বার্থ বিরোধী এবং ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর দুশমন ইহুদী - খ্রীষ্টান - নাসারা সালীবী (ক্রুসেডার) পশ্চিমা ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমূহের স্বার্থানুকুলে । গত ৫ মাস ধরে চলমান ( জারী ) গাযা - ইসরাইল যুদ্ধে অধিকাংশ আরব দেশ গুলোর নির্লিপ্ততা , লড়াইরত হামাস , ইসলামী জিহাদ ও ফিলিস্তীনী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সামরিক সহায়তা দান তো দূরের কথা গাজাবাসীদের ত্রাণ , ওষুধ পথ্য, খাদ্য পানি ইত্যাদি দিয়েও মানবিক সাহায্য করা থেকে বিরত থাকছে বা সাহায্য করলেও তা খুবই খুবই অকিঞ্চিৎকর ও অপ্রতুল । এ সব আরবদেশ এখন পর্যন্ত মযলূম গাযাবাসীদের পক্ষে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠিন ও শক্ত নীতি অবস্থান নিতে পারে নি । ইসরাইলের সাথে বেশ কিছু আরবদেশের প্রকাশ্য ও গোপন রাজনৈতিক - কূটনৈতিক - অর্থনৈতিক - নিরাপত্তা ও সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা রয়েছে ! অনন্ত : পক্ষে গাযায় হামলা , গণহত্যা ও সবধরণের যুদ্ধাপরাধ করার জন্য এ সব আরবদেশ ( মিসর , জর্দান , বাহরাইন , কাতার , আরব আমিরাত , মরক্কো) ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে নি । গাযায় ইসরাইলের আগ্রাসন , গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের প্রতিবাদে এবং তা বন্ধ করার জন্য বাবুল মান্দাব প্রণালী - লোহিত সাগরে ইসরাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট জাহাজ চলাচলের ওপর ইয়ামানীরা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ইসরাইলের প্রভুত ও ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে যা যুদ্ধরত ইসরাইলের জন্য খুবই কঠিন ও শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইসরাইলের ওপর ইয়ামানীদের আরোপিত বাণিজ্যিক অর্থনৈতিক অবরোধ ব্যর্থ ও অকার্যকর করতে আরব আমিরাত ও বাহরাইন নিজেদের বন্দর দিয়ে ইসরাইলের পক্ষে পণ্য আমদানি করে সেগুলো সোদি আরব ও জর্দানের মধ্য দিয়ে ইসরাইলে প্রেরণ করছে !! আর মিসরও ইসরাইলের হয়ে পণ্য আমদানি করে তা ইসরাইলে পাঠাচ্ছে।

অর্থাৎ উল্লেখিত এ সব আরব দেশ ইয়ামানীদের এ বৈপ্লবিক বীরোচিত পদক্ষেপের পাল্টা ফিলিস্তীন , আরব ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি খিয়ানত ও গাদ্দারির করিডোর তৈরি করেছে । আর এ সব আরব দেশ তা করবেই বা না কেন? আসলে এ সব আরব দেশের জন্মই হয়েছে ষড়যন্ত্র , খিয়ানত ও গাদ্দারির মধ্য দিয়ে। আসলে ১০০ বছর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ও ঠিক এর পরপরই যুরা (যুক্তরাজ্য/ ব্রিটেন) ও ফ্রান্সের ষড়যন্ত্র , প্ররোচনা ও প্রত্যক্ষ মদদে আরবরা তদানীন্তন উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে নাহক বিদ্রোহ করলে এ সব শিখণ্ডী ও মেরুদণ্ড বিহীন আরব দেশগুলোর জন্ম হয় ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমন যায়নবাদী সাম্রাজ্যবাদী যুরা ( যুক্তরাজ্য) ও ফ্রান্সের হাতে । তাই এ সব আরব দেশের রাজা - বাদশাহ ও রাষ্ট্র প্রধানগণ এবং সরকার সমূহ যুরা( যুক্তরাজ্য ) , মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও পশ্চিমা দেশগুলোর কথায় উঠ বস করে । আর এ কারণেই আমরা দেখতে পাচ্ছি এ সব আরব দেশগুলোকে গাযায় আগ্রাসন , গণহত্যা ، প্রজন্ম হত্যা ও সব ধরণের যুদ্ধাপরাধ করে যাওয়া সত্ত্বেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে খুবই দুর্বল নীতি অবস্থান গ্রহণ করতে ।

ব্যস ইতিহাসের আলোকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে সুন্নী উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে শিয়া মুসলিম আলেম সমাজের রাজনৈতিক নীতি অবস্থান ও পদক্ষেপ সঠিক ছিল যদিও ইরাকের কূফার , বসরা , নাজাফ , কারবালা , বাগদাদ ও কাযিমাইনের আরব শিয়া মুসলমানরা সব সময় সুন্নী আরব মুসলমিনদের চেয়ে বেশি উসমানী (অটোম্যান) তুর্কীদের নিগ্রহ , অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে । অথচ তুর্কীদের যুলুম , অন্যায় , অবিচার ,অত্যাচার , শোষণ , নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার শিয়া মুসলিম ও শিয়া আলেম সমাজের কাছে সুন্নী উসমানী (অটোম্যান) তুর্কীদের শাসন শোষণের চেয়ে ইসলামের দুশমন ইহুদীবাদী সালীবী খ্রীষ্টান ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমূহ বিশেষ করে যুরা (যুক্তরাজ্য) ও ফ্রান্সের আধিপত্য ও শাসন ছিল মন্দ ও নিকৃষ্ট । কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নী মুসলমান আরবরা এটা বুঝতে এবং এ উপলব্ধি ও বিচক্ষণতায় উপনীত হতে পারে নি বিধায় তারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর দুশমন যুরা ( ব্রিটেন) ও ফ্রান্সের ষড়যন্ত্রের জালে আটকা পড়ে সুন্নী উসমানী (অটোম্যান) তুর্কী খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে । গুটি কতক আরব দেশ ( ইরাক , সিরিয়া , লেবানন , ইয়ামান ও আলজাযায়ের [ আলজেরিয়া ] ব্যতীত বাকী সকল আরব দেশ গত একশো বছরের অধিক কাল ধরে পশ্চিমাদের আধিপত্যের ঘানি টানছে। তাই এ সব মেরুদণ্ড হীন আরব দেশের কাছ থেকে ভালো কিছু কি আশা করা যায় ?!!!

সম্ভবতঃ শত বর্ষাধিক কাল আগেকার শিয়া আলেম সমাজের সচেতনতা ও বিচক্ষণতা পূর্ণ সঠিক পদক্ষেপ ও নীতি অবস্থানের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা পাঁচ মাসাধিক কালের গাযা - ইসরাইল যুদ্ধে শিয়া আরব ও শিয়া ইরানী আলেম ও মুসলমানদের গাযা ও ফিলিস্তিনের পক্ষে আরব সুন্নী মুসলমান ও আলেম সমাজের চেয়ে বেশি সোচ্চার , তৎপর ও সচেষ্ট দেখতে পাচ্ছি ।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .