۸ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۸ شوال ۱۴۴۵ | Apr 27, 2024
রমজান মাসের ১৬তম দিনের দুআ অনুবাদসহ ও দুআর বিশেষ বাক্যগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ
রমজান মাসের ১৬তম দিনের দুআ অনুবাদসহ ও দুআর বিশেষ বাক্যগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ

হাওজা / হে আল্লাহ! এ দিনে আমাকে তোমার সৎবান্দাদের সাহচর্য লাভের তৌফিক দাও।

মজিদুল ইসলাম শাহ

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ৬তম রমজানের দুআ

اَللّـهُمَّ وَفِّقْني فيهِ لِمُوافَقَةِ الاَبْرارِ، وَجَنِّبْني فيهِ مُرافَقَةَ الاْشْرارِ، وَآوِني فيهِ بِرَحْمَتِكَ اِلى دارِ الْقَـرارِ، بِاِلهِيَّتِكَ يا اِلـهَ الْعالَمينَ .

হে আল্লাহ! এ দিনে আমাকে তোমার সৎবান্দাদের সাহচর্য লাভের তৌফিক দাও। আমাকে মন্দ লোকদের সাথে বন্ধুত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখো। তোমার খোদায়ীত্বের শপথ করে বলছি, আমাকে তোমার রহমতের বেহেশতে স্থান দাও। হে জগতসমূহের প্রতিপালক।

গুরুত্বপূর্ণ দিক

১) ভাল মানুষের সাহচর্য এবং মন্দ লোকদের থেকে দূরত্ব; ২) আল্লাহর চিরন্তন করুণার সমর্থন।

দুআর বিশেষ বাক্য গুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ

১-أَللّـهُمَّ وَفِّقْنى فيهِ لِمُوافَقَةِ الاَبْرارِ وَ جَنِّـبْنى فيـهِ مُـرافَـقَـةَ الاَشْـرارِ:

কিছু লোক ফিতনার পরিবেশে "كُنْ فِى الْفِتْنَةِ كَابْنِ اللَّبُونِ لا ظَهْرٌ فَيُرْكَبَ وَ لا ضَرْعٌ فَيُحْلَبَ" (নাহজুল-বালাগা হিকমত ১) শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে এবং এর থেকে ভুল অর্থ বের করে এবং মনে করে যে, ফিতনা হলে দূরত্ব অবলম্বন করা, যদিও কোনোভাবেই এই শব্দগুচ্ছের অর্থ দূরত্ব অবলম্বন করা নয় কারণ এই শব্দগুচ্ছের আসল অর্থ হল কোন ফিতনাকারী যেন কোনভাবেই আপনার সুবিধা নিতে না পারে অথবা নিজের লাভের জন্য যেন আপনাকে ব্যবহার না করতে পারে «لا ظهر فيركب و لا ضرع فيحلب»; আর যেন আরোপ না করতে পারে...সর্বদা সতর্ক এবং জাগ্রত থাকুন... কারণ কখনও কখনও নীরবতা, বিচ্ছিন্নতা, কিছু না বলা, আত্মপ্রলোভনের সহায়ক হয়।

ফিতনার সময় প্রত্যেককে তাদের অবস্থান পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করতে হবে, এবং প্রত্যেকের উচিত বিচক্ষণতার সাথে কাজ করা।...সত্য হল আমরা কোনো রকম ভাবে হাতে হাত দিয়ে বসে থাকতে পারি না, নিজের পথ, লক্ষ্য এবং অবস্থান নির্ধারণ করতেই হবে।

আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন পক্ষের, তাই যখন একটি দল বা গোষ্ঠীকে সমর্থন করার কথা আসে তখন তার মানদণ্ড কী হওয়া উচিত? আমরা কি শুধু বৈষয়িক লাভের কথা ভাবছি নাকি আল্লাহর ভয়ও আছে? কোন দলকে সমর্থন করা কি আখেরাতের লোভে নাকি চেয়ারের লোভে? অত্যাচারী আমেরিকা ও ইসরাইল যারা জনগণের রক্ত চুষে মৌখিকভাবে জনগণের অধিকারের স্লোগান দিচ্ছে, কুমিরের কান্না ঝরাচ্ছে এবং সন্ত্রাসীদের কার্যত আর্থিক ও রাজনৈতিক সাহায্য দিচ্ছে তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে?

বিবেচনা করুন যে সমস্ত যুদ্ধ এবং নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ ইসলামী দেশগুলির দিকে পরিচালিত হয় অথচ তারা নিজেরাই হোয়াইট হাউসে বসে আমাদের বিভ্রান্তি নিয়ে হাসছে এবং শান্তি ও শান্ত জীবন যাপন করছে যেন সমস্ত যুদ্ধ এবং রক্তপাত পৃথিবীর এই বিন্দুতে নির্দিষ্ট...।বৈশ্বিক বিপর্যয়ের এই মানচিত্রের সামনে আমাদের ভূমিকা কী? যাই হোক না কেন, মন্দ ও মন্দের মধ্যে এই মুখোমুখি সংঘর্ষ সর্বদাই করুণাময় ও শয়তানের যুদ্ধ; ভাবতে হবে যে আমাদের কর্তব্য কি ? আমরা আমাদের চোখ বন্ধ রাখতে পারি না, অন্তত আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমরা কোন দিকে আছি কারণ যারা নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করেনি তাদের কারণে আমরা অতীতে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

রাবি বিন খাসিম ছিলেন আমীরুল মুমিনীনের একজন সঙ্গী, যিনি দৃশ্যত একজন জাহিদ ছিলেন, যিনি সিফি্ফনের যুদ্ধের সময় ইমাম আলীর খেদমতে এসে বলেছিলেন: একদিকে আপনি নবীর সঠিক উত্তরসূরি আর অন্যদিকে মুসলমানদের সাথে এই যুদ্ধ চলছে! আমি এই রক্তপাতের অংশ হতে চাই না অন্যদিকে, আমি আপনার এখতিয়ারের বাইরেও যেতে চাই না।

অতএব, আমাকে এমন জায়গায় পাঠান যেখানে আমি সেবা করতে পারি এবং এটি আমার পক্ষে কঠিন হবে না! আমিরুল মুমিনীন তাকে কিছু বললেন না এবং খোরাসানের সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব দিয়ে তাকে বিদায় দিলেন। (আল-রিজাল অভিধান খণ্ড ৪ পৃ. ৩৩৫)

রাবী বিন খাসিমের এই কাজ কি রক্ষ্যযোগ্য? ইমামের পতাকা তলে যুদ্ধ করা এবং মাঠ ছেড়ে না যাওয়াই ছিল তার দায়িত্ব।এটা তপস্বী নয় বরং কুমন্ত্রণার অনুসরণ।

আপনি ইতিমধ্যে জানেন যে তিনটি দল আমীরুল মুমিনীনের বিরুদ্ধে ফিতনা ও ফাসাদ সৃষ্টি করেছলি, নাকেসিন তালহা ও জুবায়েরের নেতৃত্বে এবং...কাসেতিন মুয়াবিয়ার নির্দেশনায়, এবং তারপর মারেকিন, যারা খারেজী, এই তিনটি দল আমীরুল মুমিনীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ফিতনা সৃষ্টি করেছিল, তারা অন্যায় ভাবে রক্ত ঝরিয়েছিল এবং নিপীড়িতদের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। বাস্তবে তারা কোরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছিল, বিশেষ করে খারেজীরা, যারা বাহ্যিকভাবে খুব ইবাদতকারী এবং শোকপ্রিয় মানুষ ছিল।

এই ধরনের জায়গায় কি করা উচিত? আমাদের অবস্থান কাদের সমর্থন করবে?...এই ধরনের অনুষ্ঠানে অন্তর্দৃষ্টি প্রয়োজন, আমাদের দেখা উচিত আলী কোন দিকে দাঁড়িয়েছেন কারণ মহানবী (সা.) বলেছেন: ''علی مع الحق والحق مع علی'' আলী হকের সাথে এবং হক আলীর সাথে, (বাগদাদের ইতিহাস ১৪ পৃ. ৩২২) ''علی مع القرآن و القرآن مع علی" আলী কুরআনের সাথে এবং কুরআন আলীর সাথে।

কিছু না বলে চুপ করে থাকা সম্মানজনক নয় আমিরুল মুমিনীন যখন যুদ্ধে আছেন তখন আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হওয়া উচিত এবং আলির সাহায্যের জন্য দৌড়ানো উচিত এই অর্থে, আমরা ইতিহাসের আয়নায় এমন কিছু চরিত্র দেখতে পাই যারা অলসভাবে অভিনয় করেছিল, তারা পৃথিবীর কাছে বিমোহিত হিসাবে দেখা দিয়েছিল যেমন: সা'আদের পুত্র, তালহা এবং জুবায়ের...বা কু-কুমন্ত্রণার শিকার যেমন: খাওয়ারিজ...।

হাসান বাসারীর ভূমিকা তপস্বী ও জাগতিক বিদ্বেষের শিক্ষা!

সিফি্ফনের যুদ্ধের পর যখন তিনি ওজু করতে ব্যস্ত ছিলেন, তখন আমিরুল-মুমিনীন তাকে বললেন: হে হাসান, ভালোভাবে ওজু কর! খুব ভালো, (এটা ছিল এক ধরনের উপহাস)।

হাসান বাসারী উত্তরে বলেন: গতকাল তুমি এমন লোকদের হত্যা করেছিলে যারা খুব ভালোভাবে ওজু করেছিল! ইমাম বললেন: তোমার মন কি তাদের জন্য কষ্ট পাচ্ছে? হাসান বাসারী বলেন: হ্যাঁ, আমীরুল মুমিনীন তার জন্য বদদোয়া করে বলেছেন: "সর্বদা এই কষ্ট ও ক্রোধে ভুগতে থাকো।"

সেই তারিখ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হাসান বাসারী শোক হতাশার মধ্যে ভুগছিলেন। (আল-কুনিয়া ওয়াল-আলকাব খণ্ড ২ পৃ. ৮৪)

উবাইদুল্লাহ বিন হুর জোফী সেই ব্যক্তি যাকে ইমাম হোসাইন সাহায্য চেয়েছিলেন এবং সে নিরপেক্ষভাবে এবং উদাসীনভাবে বলেছিল, "আমার কাছে একটি ঘোড়া আছে যা আমি আপনাকে দিকে পারি।" ইমাম তা গ্রহণ করেননি।

ইমাম হোসাইনের শাহাদাতের পর ইবনে যিয়াদ তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করে তুমি কোথায় ছিলে? জবাবে সে অসুস্থ হওয়ার অজুহাত দিল, ইবনে যিয়াদ ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলে: তোমার শরীর অসুস্থ ছিল নাকি তোমার হৃদয়?

পরে সে তার ভুল বুঝতে পেরে কাঁদতে কাঁদতে কারবালায় পৌঁছায় যে সে নবী পুত্রকে সমর্থন করা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু এখন কি লাভ!! নিজের অবস্থান সঠিক সময় প্রকাশ করা উচিত।

এ কারণেই এই দোয়ার প্রথম বাক্যে বলা হয়েছে, হে প্রভু, আমাকে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গ দেওয়ার, তাদের সমর্থন করার এবং দুষ্ট ও বিদ্বেষপূর্ণ লোকদের বন্ধুত্ব ও সঙ্গ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন।

২-وَآوِنى فيهِ بِرَحْمَتِكَ اِلى دارِالْقَرارِ:

এই শব্দগুচ্ছে ভালো ও মহৎ ব্যক্তিদের উজ্জ্বল ও সুন্দর ভবিষ্যতের উল্লেখ আছে; পবিত্র কোরআনের আয়াতে 'আবরার' 'মুকার্রাবিন' এবং এগুলোর মহান সওয়াব সম্পর্কে অনেক আলোচনা এসেছে। এমনকি সূরা আলে-ইমরানের ১৯৩ আয়াত অনুসারে, 'উলিল-আলবাব' (যারা শক্তিশালী বুদ্ধি ও চিন্তার অধিকারী) দাবি করে যে তাদের জীবন আবরারের সাথে শেষ হবে।"তুওয়াফ্ফানা মাআল-আবরার" এবং সূরা দাহরের আয়াতে তাদের জন্য প্রচুর সওয়াবের কথা বর্ণিত হয়েছে (সুরা দাহর আয়াত ৫ থেকে ২২) এবং সূরা ইনফেতারের ১৩ নং আয়াতে আর সূরা মুতাফফেফিনের আলোচিত আয়াতটিও তাদের সম্পর্কে আল্লাহর নেয়ামতের কথা বারবার বর্ণনা করে।

'ابرابر' হল "بر" এর বহুবচন এবং এরাই হল সেইসব লোক যাদের রয়েছে বিস্তৃত চেতনা, উচ্চ সাহস, সৎ বিশ্বাস এবং ভালো কাজ। একটি হাদিসে ইমাম হাসান (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, "کلما فی کتاب اللہ عزوجل من قولہ ان الابرار فو اللہ ماراد بہ الا علی ابی طالب و فاطمہ و انا والحسین"

কোরানে যেখানেই 'ان الابرار' উল্লেখ করা হয়েছে আল্লাহর তা থেকে মুরাদ হল আলী ইবনে আবি তালিব, ফাতিমা জাহরা, আমি এবং হোসাইন" । (নূরু- আল-সাকলাইন, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৫৩৩, হাদিস ৩৩)

৩- بِاِلهِيَّتِكَ يـا اِلـهَ الْعالَـمينَ:

এবং দুআর শেষে আমরা অনুরোধ করি যে, প্রভু আপনার প্রভুত্বের দ্বারা আমাদেরকে জান্নাতে ভাল এবং গুণী লোকদের সাথে এবং খারাপ লোকদের থেকে দূরে থাকার জায়গা দান করুন।

ফলাফল:

দুআর বাণী: ১- আবরারের সাহচর্যের জন্য অনুরোধ; ২- অসৎ ও মন্দ মানসিকতার লোকদের সাথে অমিল; ৩- স্বর্গ হল মুমিনদের বিশ্রামের স্থান।

নির্বাচিত বার্তা: হযরত আলী (আ.) বলেন: “খারাপ ও মন্দ লোকদের এড়িয়ে চলুন এবং ভালো লোকদের সাথে একত্রিত হও । (তামিমি আমিদি, গেরারুল-হেকাম ওয়াদ-দারুল-কালাম, হা. ৪৭৪৬)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .