۱۴ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۲۴ شوال ۱۴۴۵ | May 3, 2024
নেতানিয়াহুর ভাঁড়ামি
নেতানিয়াহুর ভাঁড়ামি

হাওজা / গত শনিবার রাত ও রোববার ভোরে (১৩ - ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ) পরিচালিত ইরানের ওয়াদায়ে সাদেক্ব ( সত্য ওয়াদা বা সত্য প্রতিশ্রুতি ) সীমিত অভিযানের - যা ছিল ইসরাইলকে তার ১লা এপ্রিল দামেশকে ইরান দূতাবাসের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা করে দুই জন জেনেরেল সহ ১৩ জন ইরানী উপদেষ্টাকে হত্যা করে।

রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শনিবার রাত ও রোববার ভোরে (১৩ - ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ) পরিচালিত ইরানের ওয়াদায়ে সাদেক্ব ( সত্য ওয়াদা বা সত্য প্রতিশ্রুতি ) সীমিত অভিযানের - যা ছিল ইসরাইলকে তার ১লা এপ্রিল দামেশকে ইরান দূতাবাসের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা করে দুই জন জেনেরেল সহ ১৩ জন ইরানী উপদেষ্টাকে হত্যা করার অপরাধ , অপকর্ম ও দুষ্কর্মের সাজা ও চপেটাঘাত স্বরূপ - জবাবে ইসরাইল চোরের মতো অভ্যন্তরীন কিছু বিশ্বাসঘাতক খিয়ানতকারী এজেন্ট ও চরের মাধ্যমে কয়েকটা কয়াডকপ্টার পাঠালে ইরানের ইসফাহানে সেগুলো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার হাতে ধ্বংস হলে ইসরাইলী যুদ্ধ ক্যাবিনেটের এক মন্ত্রী বেন গেভীর নেতানিয়াহুকে কটাক্ষ করে লিখেছে যে এ হামলাটা ছিল নিতান্ত ভাঁড়ামি ও মস্করা গোছের ।

উল্লেখ্য যে এতে ইরানের ইসফাহানের কোন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা এবং বিমান ও হেলিকপ্টার ঘাঁটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় নি এবং ইরানের কোথাও বিষ্ফোরণ হয় নি । যে শব্দ শোনা গেছে তা ছিল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ছোড়া গোলাগুলির শব্দ । যেমন ভাবে ইরান গত শনিবারে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে ইসরাইলের ওপর তার সীমিত সামরিক অভিযান শুরু করে ঠিক তেমনি ইসরাইলী সরকার ও সেনাবাহিনী ব্যর্থ চোরাগোপ্তা এ হামলার কোনো ঘোষণাও দেয়নি। এর আগে মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বলেছিল : ইসরাইল ইরানের মতো অভিযান পরিচালনা না করে বরং অতীতের মতো ইরানের বিরুদ্ধে ভাড়াটে এজেন্ট ও চরের মাধ্যমে চোরাগোপ্তা ধরণের ( covert ) আক্রমণ ও স্যাবোটেজ ধর্মী ( নাশকতামূলক) সন্ত্রাসী হামলা ও অপারেশন পরিচালনা করে গত শনিবারের ইরানী ওয়াদায়ে সাদেক্ব বা সত্য প্রতিশ্রুতি ও ওয়াদার সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ নিতে পারে। ইহুদীদের ঈদোৎসব ঈদে পেসাহর ( ঈদুল ফাসহ ) পর তার এজেন্টদের মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে আরো কিছু চোরাগোপ্তা সন্ত্রাসী হামলা করাতে পারে ইসরাইল । ইরান সেজন্য প্রস্তুত আছে এবং ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের অপকর্ম, দুষ্কর্ম ও অপরাধ করলে আরো সমুচিত সাজা পাবে এবং থাপ্পড় ও চপেটাঘাত খেতে থাকবে !!!!

ইরান নিরাপত্তার জন্য কয়েক ঘন্টা বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছিল এবং এরপর ইরানের সকল বিমান বন্দর খুলে দিয়েছে এবং সকল দেশি ও বৈদেশিক ফ্লাইট চালু আছে । বিমান চলাচলে কোন ব্যত্যয় ঘটেনি যদিও পশ্চিমা দেশগুলো থেকে প্রচারিত ইরান বিরোধী চ্যানেল গুলো এমনকি পশ্চিমা প্রধান প্রধান সংবাদ মাধ্যম এতদসংক্রান্ত অনেক আজগুবি ভুয়া খবর পরিবেশন করেছিল ইসরাইলের ব্যর্থ ও ভাঁড়ামি পূর্ণ ঐ কোয়াডকপ্টার হামলার পর পর । প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিক সামরিক ঘোষণা দিয়ে ইরান আক্রমণ করার সৎসাহস নেই ইসরাইলের যা ইরান গত শনিবার -রোববার ( ১৩ - ১৪ এপ্রিল ২০২৪) ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিক সামরিক ঘোষণা দিয়ে পরিচালনা করেছিল ।

ইরান সাফ ও স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে ভবিষ্যতে ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক অভিযান চালিয়ে সামান ক্ষতি করলে ইরান ঐ ওয়াদায়ে সাদেক্ব অভিযানের চেয়েও ১০ গুণ বড় ও ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করতে মোটেও দিধা ও বিলম্ব করবে না যার পরিণতি হবে ইসরাইলের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ , মারাত্মক ও বেদনাদায়ক। ইসরাইল ও মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ইরানের হুঁশিয়ারি মূলক এ বার্তা খুব ভালো ভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছে। ২০১২ সালে যায়নবাদী ইহুদী ও প্রাক্তন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিল : " আগামী ১০ বছরের মধ্যে ( অর্থাৎ ২০২২ সাল নাগাদ ) ইসরাইল ই আর বিদ্যমান থাকবে না । " ( বিস্তারিত জানতে দেখুন : Kevin Barrett প্রণীত প্রবন্ধ Kissinger , US intelligence endorse " a world without Israel " Holiday , Friday March 22 , 2034 )

আর ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উযমা খামেনেঈ ৬-৭ বছর আগেই বলেছিলেন যে ইসরাইল আগামী ২৫ বছরের মধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী কায়দায় প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান মন্ত্রী বেন গোরিওন ইসরাইলের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য দুটো শর্ত উল্লেখ করেছিল যা হচ্ছে: ১. লম্বা ও দীর্ঘ কালীন যুদ্ধে ইসরাইলের না জড়ানো এবং ২. ইসরাইলী ভূখণ্ডের ভিতরে যুদ্ধ না হয়ে সবসময় ইসরাইলের শত্রুদের ভুমি ও ভূখণ্ডে যুদ্ধ সংঘটিত হওয়া । আর এই দুটো শর্ত পূরণ না হলে ইসরাইলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না ঐ মাল'ঊন ( অভিশপ্ত ) জাহান্নামী বেন গোরিওনের মতে। আর ৭ অক্টোবর ২০২৩ ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাস ও ফিলিস্তিনী ইসলামী জিহাদ সফল ' তূফানুল আকসা অভিযান' পরিচালিত করলে ইসরাইলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সংক্রান্ত বেন গোরিয়ন তত্ত্ব সম্পূর্ণ উল্টে পাল্টে গেছে এবং ইসরাইলের অস্তিত্ব বিলুপ্তির শর্তদ্বয়ের বাস্তবায়নও হয়ে গেছে। গাযায় ইসরাইলের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়ে গেছে এবং যুদ্ধ শত্রু ভূমি থেকে ইসরাইলের ভিতর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়ে গেছে এবং ইসরাইলীদের ভাষ্য ও বক্তব্য অনুযায়ী ইসরাইল যুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছে এবং গাযার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্য গুলোর কোন একটিও ইসরাইল হাসিল করতে পারে নি। অতএব ইসরাইলের মৃত্যু ভেরী বেজে উঠেছে। তাই ইসরাইলের বিলুপ্তি বেশী দেরীতে নয় বরং শীঘ্রই সংঘটিত হবে। নেতানিয়াহু শেষমেশ ইসরাইলকে গোরে নিয়ে যাবেই ! ইসরাইল আসলেই এখন জীবন মৃত । আর পরিণতিতে ফিলিস্তিন ও মুসলিম উম্মাহই হবে বিজয়ী ও জয়যুক্ত ।

গত শনিবার ইরানের অভিযানকে অত্যন্ত গুরুত্বহীন ও ব্যর্থ দেখানোর উদ্দেশ্যে ইসরাইল তার অভ্যন্তরীন চর ও এজেন্টদের মাধ্যমে ইসফাহানে কোয়াডকপ্টারের এ ঘটনা ঘটিয়েছে যার ব্যর্থতা সবার কাছেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য যায়নিস্টদের সমর্থক পশ্চিমা মিডিয়া ইরানের ঐ অভিযানকে নিতান্ত অপাংতেয় ও গুরুত্বহীন

এবং আজ শুক্রবার ( ১৯ এপ্রিল ) ভোরে ইসফাহানে যে তুচ্ছ ও গুরুত্বহীন ঘটনা ঘটেছে তা অতি বড় ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ করে পেশ ও উপস্থাপন করছে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম গুলো যাদের কাজ হচ্ছে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের হীন নীচ অবৈধ স্বার্থ বজায় রাখার জন্য

তিলকে তাল ও তালকে তিল , দিনকে রাত ও রাতকে দিন , মযলূমকে যালেম ও যালেমকে মযলূম এবং সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্য বানানো এবং সত্য - মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ।

গতকাল জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ লাভের উদ্যোগে মাযুরার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ভেটোর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও বিষোদগার করা থেকে সবাইকে ফিরিয়ে ও বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ইসফাহানে কোয়াডকপ্টারের নাটক মঞ্চস্থ করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে ইসরাইল অভ্যন্তরীন বিশ্বাসঘাতক কিছু এজেন্টের মাধ্যমে । তাই বলা যায় যে ইসরাইল থেকে এ কোয়াডকপ্টার উড়ে আসে নি ।

৭ অক্টোবর ২০২৩ এর তূফানুল আকসা অভিযান , চলমান গাযা - ইসরাইল যুদ্ধ এবং ইরানের সফল ১৩ - ১৪ এপ্রিলের ওয়াদায়ে সাদেক্ব অভিযান ইসরাইলের অস্তিত্বকেই বিলুপ্তি মুখী করে দিয়েছে । আমরা সেই সোনালী দিনের অপেক্ষায় যেদিন যুগের অধিপতি ইমাম মাহদীর ( আ ) নেতৃত্বে ইসরাইল চূড়ান্ত ভাবে বিলুপ্ত ও ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আমরা সবাই ইমাম মাহদীর ইমামতিতে সে দিন মসজিদুল আকসায় নামায আদায় করব ।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .