হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিহাসে পাওয়া যায়, যে ঘোড়াগুলো ইমাম হোসাইন (আ.) এর দেহ পদদলিত করেছিল সেগুলো অন্য ঘোড়াগুলো থেকে আলাদা ছিল, যা "আওয়াজ্জিয়া" নামে পরিচিত।
এক গবেষক মাসের পর মাস এটা নিয়ে গবেষণা করেছেন। এর মধ্যে সে একটি জার্মানি বই যার নাম World Strongest Stallion or In Stallions পেয়েছেন যে, ''আওয়াজ্জিয়া'' জাতের মদ্দা ঘোড়াগুলো কোনো কিছু বাটা, পিষে ফেলা বা পদদলিত করার কাজে ব্যবহার করা হয়। এই ঘোড়ার কেবল এক পায়ের ওজনই ৬৫ কেজির বেশি হয়ে থাকে।
যখন ইবনে যিয়াদের এক সৈন্য থেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, তুমি কারবালায় সবচাইতে বেশি এমন কোনো অত্যাচারটি দেখেছো যা কখনোই দেখনি? সে বলেছে আমি ইমাম হোসাইন (আ.) এর পাঁজরের হাড় ভাঙার শব্দ শুনেছি। যখন আমরা ইমাম হোসাইন (আ.) এর দেহ’র উপর দিয়ে আমাদের বিশেষ ঘোড়াগুলো দৌড়াতাম, তখন উনার পাঁজরের হাড় ভাঙার শব্দ সারা কারবালায় গর্জে উঠত।
অনেকেই বলে যে আমরা ইমাম হোসাইন (আ.) এর উপর এত কান্না করি কেন?
তারা একটু চিন্তা করে দেখুক, ইতিহাসে পাওয়া যায় ইমাম হোসাইনকে (আ.) কেবল তৃষ্ণার্ত অবস্থায় নির্মম হত্যাই করা হয়নি, ধারহীন ছুড়ি তাঁর শরীর থেকে দিয়ে মাথা দ্বিখন্ডিত করা হয়েছে, ১০টি আওয়াজ্জিয়া ঘোড়া দ্বারা পদদলিত করা হয়েছিল যার একটি পায়ের ওজন ছিল ৬৫ কেজি। একটি ঘোড়ার ৪টি পা এবং ১০টি ঘোড়ার ঘোড়া ৪x১০=৪০, ৪০x৬৫ = ২৬০০ কেজি। আনুমানিক ২৬০০ কেজি দারা পদদলিত হয়েছেন মাযলুম ইমাম হোসাইন (আ.)।
ইমাম যায়নুল আবেদ্বীন (আ.) বলেছেন, আমার বাবার পাঁজরের হাড় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। আমি যখন আমার বাবাকে দাফন করার জন্য তার জানাযা (দেহ মোবারক) হাতে তুলেছিলাম তখন দেখেছি তাঁর হাড়গুলো টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। আমি আমার বাবাকে টুকরো টুকরো অবস্থায় দাফন করেছি।
অত্যাচারী ও অত্যাচারীদের উত্তরসূরি ব্যতিরেকে সবাই এই অসীম আত্মত্যাগকে স্বরণ করে। এই আত্মত্যাগকে স্বরণ করলেই চোখ অশ্রুজলে নিমজ্জিত হয়ে যায়। আজ ইসলাম যতটুকু প্রোজ্জ্বল ও আলোকময় রয়েছে, সেটা একমাত্র ইমাম হোসাইন (আ.) এর এই ত্যাগের বিনিময়।
اَللّٰهُمَّ الْعَنْ اَوَّلَ ظَالِمٍ ظَلَمَ حَقَّ مُحَمَّدٍ وَ اٰلِ مُحَمَّدٍ، وَ اٰخِرَ تَابِعٍ لَهٗ عَلٰى ذٰلِكَ اَللّٰهُمَّ الْعَنِ الْعِصَابَةَ الَّتِىْ جَاهَدَتِ الْحُسَيْنَ (عَلَیْہِ السَّلَامُ) وَ شَايَعَتْ وَ بَايَعَتْ وَ تَابَعَتْ عَلٰى قَتْلِهٖ، اَللّٰهُمَّ الْعَنْهُمْ جَمِيْعًا۔
হে আল্লাহ আপনি তাদের প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করুন যারা মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতগন (আ.)’এর প্রতি প্রথম জুলুম করেছে এবং সর্বশেষ জালিম যে, প্রথম জালিমকে তার জুলুমের ক্ষেত্রে অনুসরণ করেছে। হে আল্লাহ যে লোকেরা ইমাম হুসাইন (আ.) এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল, তাদের উপর লানত বর্ষণ করুন। আর তাদের অনুসারী অনুগামী ও তাদের আনুগত্য স্বীকারকারীদের প্রত্যেকের উপর লানত বর্ষণ করুন।
اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَاۤ اَبَا عَبْدِ اللهِ وَ عَلَى الْاَرْوَاحِ الَّتِىْ حَلَّتْ بِفِنَاۤئِكَ عَلَيْكَ مِنِّىْ سَلَامُ اللهِ اَبَدًا مَّا بَقِيْتُ وَ بَقِيَ اللَّيْلُ وَ النَّهَارُ وَ لَا جَعَلَهُ اللهُ اٰخِرَ الْعَهْدِ مِنِّىْ لِزِيَارَتِكُمْ،
اَلسَّلَامُ عَلَى الْحُسَيْنِ
وَ عَلٰى عَلِىِّ بْنِ الْحُسَيْنِ
وَ عَلٰى اَوْلَادِ الْحُسَيْنِ
وَ عَلٰى اَصْحَابِ الْحُسَيْنِ۔
হে আবা আবদিল্লাহ্! আপনার প্রতি ও আপনার পবিত্র সত্তার প্রতি সালাম, যে সত্তা সমাধিত হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে আল্লাহর সালাম অনন্তকাল ব্যাপী, যতদিন এই দিবা-নিশি অবিচল আছে। আল্লাহ যেন এ যিয়ারতকেই আমার জীবনের শেষ যিয়ারতে পরিণত করে না দেন। ইমাম হুসাইন (আ.)’র সন্তানগণ ও ইমাম হুসাইন (আ.)’র সাথীদের প্রতি সালাম।