۲۶ شهریور ۱۴۰۳ |۱۲ ربیع‌الاول ۱۴۴۶ | Sep 16, 2024
মানব জীবনে ধৈর্য্যের গুরুত্ব
মানব জীবনে ধৈর্য্যের গুরুত্ব

হাওজা / মানব জীবনে ধৈর্য্যের অবস্থান হলো; [একজন  মানুষের] দেহের পেক্ষাপটে মাথার অবস্থান সমতুল্য।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইমাম আলী (আ.) বলেন,

اَلصَّبرُ فِى المورِ بِمَنزِلَهِ الرَّأسِ مِنَ الجَسَدِ، فَاِذا فارَقَ الرَّأسُ الجَسَدَ فَسَدَ الجَسَدُ وَ اِذا فارَقَ الصَّبرُ المورَ فَسَدَتِ المورُ.
[(মানব) জীবনে ধৈর্য্যের অবস্থান হলো; [একজন মানুষের] দেহের পেক্ষাপটে মাথার অবস্থান সমতুল্য। যদি কারো দেহ থেকে মাথাকে বিচ্ছিন্ন করা হয় তাহলে তার দেহ ধ্বংস হয়ে যাবে। [ঠিক একইভাবে] জীবনের ঘটনাপ্রবাহ থেকে যদি ধৈর্য্যকে বিচ্ছিন্ন করা হয়, তাহলে তার সকল কার্যক্রম নষ্ট বা ধ্বংস হয়ে যাবে।
[উসুল আল ক্বাফী, ২য় খন্ড, ৯০ নম্বর পৃষ্ঠা, ৯ নম্বর হাদিস।]

অতএব আমাদের উচিত হবে না সামান্য সমালোচনা, প্রতিবন্ধকতা ও তিরস্কারে বিচলিত হওয়া। দৈনন্দিন জীবনে ধৈর্য্যের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা উপরোক্ত হাদীস থেকে সহজে উপলব্ধি করা যায়। আর এজন্যই আখলাক শাস্ত্রের আলোচনায় বলা হয়ে থাকে সমস্ত নৈতিকতা ও আদবের জনক হলো ধৈর্য্য।

পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী বান্দাদের প্রতিদানের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর রব্বুল আলামিন বলেন,
اِنَّما یُوَفَّی الصَّابِرُونَ اَجْرَهُمْ بِغَیْرِ حِسابٍ‌
যারা সবর অবলম্বন করে নিশ্চয় তাদেরকে দেয়া হবে অপরিমিত প্রতিদান। [সুরা জুমার ১০ নম্বর আয়াত]

উপরোক্ত আয়াতটির শুরুতে আরবি ভাষায় اِنَّما শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে ‘কেবলমাত্র’ ধৈর্যশীল ব্যক্তিই বে-হিসেবি প্রতিদান গ্রহণ করবেন।

সমাজে আমরা এমন অনেক লোকের সাক্ষাত পাই যারা তাদের অনেক ভালো ও নেক কাজগুলোকে অধৈর্য্যের কারণে নষ্ট করে ফেলেন। আর এজন্যই মাওলা আলী (আঃ) বলেছেন,
ألا إنَّه لا إيمانَ لمَن لا صَبرَ له
জেনে রাখো! যার ধৈর্য্য নেই তার ঈমানও নেই।
[উসুল আল-ক্বাফী ২য় খন্ড ৮৯ নম্বর পৃষ্ঠা]

এমনকি কোনো ব্যক্তি যদি পার্থিব জীবনে সফলতা অর্জন করতে চায়, তাকেও ধৈর্যশীল হতে হবে। পার্থিব জীবন পরীক্ষার ও কর্মের ময়দান যেখানে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কেউ কখনো লাভবান আবার কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। আর উভয় ক্ষেত্রেই সফল ব্যক্তি হলেন যিনি ধৈর্যশীল।

মহান আল্লাহর রব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন,
وَلَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَالۡجُوۡعِ وَنَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَالۡاَنۡفُسِ وَالثَّمَرٰتِ ؕ  وَبَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ
আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব (কখনও) কিছুটা ভয়-ভীতি দ্বারা, (কখনও) ক্ষুধা দ্বারা এবং (কখনও) জান-মাল ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। ‘সুসংবাদ শোনাও তাদেরকে, যারা (এরূপ অবস্থায়) ধৈর্যশীল বা সবরের পরিচয় দিয়ে থাকে।’
[সুরা আল বাকারা ১৫৫ নম্বর আয়াত।]

উপরোক্ত আয়াতটিতে ধৈর্যশীল ব্যক্তিদেরকে মহান আল্লাহর রব্বুল আলামিন সফলতার সুসংবাদ দিয়েছেন।

সুরা বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহর রব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন,
إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ.
নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
[সুরা বাকারা ১৫৩ নম্বর আয়াত।]

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে আপনি সমাজের যে স্তরের মানুষ হোন না কেন যদি ধৈর্যহারা হয়েছেন তো আপনার সকল পরিশ্রম, অবদান, অগ্রগতি, অতীতের সুখ্যাতি সব নষ্ট করে ফেললেন! মনে রাখবেন সমস্ত আচার-ব্যবহার ও কর্মের সুমিষ্ট স্বাদ কিন্তু ধৈর্য ও সহনশীলতার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে।

লেখক: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন আলী নওয়াজ খান

تبصرہ ارسال

You are replying to: .