রিপোর্ট: মুস্তাক আহমদ
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে নবীর আহলে বাইতের মর্যাদাকে বুলন্দ করা ও নবীর শত্রু মুনাফেক'কে জব্দ করার জন্য ৷
— তাই কোরআন এক জীবন্ত মুজেজা ৷ আর কোরআন শুধু জীবন্ত মুজেজা নয়, বরং ইসলামের শত্রু'র জন্য কোরআনের কিছু আয়াত তাদের মুখে সপাটে থাপ্পড় মারার ন্যায়৷ আল্লাহপাক তাঁর হাবিবের শত্রু'কে জব্দ করে রেখেছেন কোরআনের বিবিন্ন আয়াত দ্বারা ৷
একদা এক মুনাফেক প্রচার করতে থাকে নবী (সঃ) মারা গেলে নবীর স্ত্রী'কে বিবাহ করবে৷ মুনাফেকের এই চক্রান্ত আল্লাহপাকের সহ্য হয়নি ৷ আল্লাহ তখন আয়াত নাজিল করে মুনাফেকের মুখ বন্ধ করে দেন ৷
আল্লাহপাক বলেনঃ اَلنَّبِیُّ اَوۡلٰی بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ مِنۡ اَنۡفُسِهِمۡ وَ اَزۡوَاجُهٗۤ اُمَّهٰتُهُمۡ ؕ
অর্থাৎ নবী মুমিনদের কাছে তাদের নিজদের চেয়ে ঘনিষ্ঠতর। আর তার স্ত্রীগণ তাদের মাতাস্বরূপ।
(সূত্রঃ সুরা আহযাব' আয়াত - ৬)
আল্লাহর পক্ষ হতে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে নবীর স্ত্রীগণ যখন 'উম্মাতের মাতাস্বরূপ' ঘোষণা করা হয়, তখন মুনাফেকের মুখে প্রচার হতে লাগলো নবী (সঃ) তাহলে আমাদের বাপ ৷ নবীর স্ত্রীগণ যখন মা, তখন খোদ নবী আমাদের বাপ৷
মুনাফেকদের এহেন অপপ্রচারও আল্লাহ'র পচ্ছন্দ হলো না, আল্লাহ তখনও মুনাফেকদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আয়াত নাজিল করলেন এভাবে -
مَا كَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنۡ رِّجَالِكُمۡ وَ لٰكِنۡ رَّسُوۡلَ اللّٰهِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا ﴿۴۰﴾ما كان محمد ابا احد من رجالكم و لكن رسول الله و خاتم النبیٖن و كان الله بكل شیء علیما ﴿۴۰﴾
অর্থাৎ "মুহাম্মাদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নয়; তবে আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী। আর আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বজ্ঞ।"
এই আয়াত নাজিল হবার পর আবারও মুনাফেক জব্দ হলো, তাদের চক্রান্ত কিছুটা হলেও দমন হলো, কিন্ত আবার তারা নতুন চক্রান্তের মাধ্যমে নতুন অপপ্রচার করতে শুরু করলো৷ তারা বলতে লাগলো, নবী (সঃ) যখন কোন পুরুষের পিতা নন, তাহলে নবীর কোন পুত্র নেই ৷ অর্থাৎ নবীর আল বা বংশ নেই ৷ নবী নির্বংশ আলহীন আবতার ৷ ইসলাম'কে তাই রক্ষা করার কেউ নেই৷
এভাবে মনাফেকরা যখন ভাবনার তালগোল পাকিয়ে ইসলামের ক্ষতিসাধন করার জন্য নতুন ষড়যন্ত্র সৃষ্টি করতে লাগলো, তখন আল্লাহ আবার একটি অভিনব আয়াত নাজিল করলেন এভাবে -
فَمَنۡ حَآجَّكَ فِیۡهِ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الۡعِلۡمِ فَقُلۡ تَعَالَوۡا نَدۡعُ اَبۡنَآءَنَا وَ اَبۡنَآءَكُمۡ وَ نِسَآءَنَا وَ نِسَآءَكُمۡ وَ اَنۡفُسَنَا وَ اَنۡفُسَكُمۡ ۟ ثُمَّ نَبۡتَهِلۡ فَنَجۡعَلۡ لَّعۡنَتَ اللّٰهِ عَلَی الۡكٰذِبِیۡنَ ﴿۶۱﴾فمن حآجك فیه من بعد ما جآءك من العلم فقل تعالوا ندع ابنآءنا و ابنآءكم و نسآءنا و نسآءكم و انفسنا و انفسكم ثم نبتهل فنجعل لعنت الله علی الكذبین ﴿۶۱﴾
অর্থাৎ অতঃপর তোমার নিকট জ্ঞান আসার পর যে তোমার সাথে এ বিষয়ে ঝগড়া করে, তবে তুমি তাকে বল, ‘এস আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রদেরকে ও তোমাদের পুত্রদেরকে। আর আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে এবং আমাদের নিজদেরকে ও তোমাদের নিজদেরকে, তারপর আমরা বিনীত প্রার্থনা করি, ‘মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লা’নত করি’।
আল্লাহপাক আবার উপরিল্লিখিত আয়াত দ্বারা মুনাফেকদের গভীর ষড়যন্ত্র'কে সমূলে উৎপাটিত করে দিলেন ৷ মুনাফেকরা ভেবে ছিল নবী কারোর যখন বাপ নন, তখন তার পুত্র নেই৷
কিন্তু আল্লাহপাক হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন আঃ দ্বয়কে নবীর পুত্র হিসাবে কোরআনের আয়াত দ্বারা লিপিবদ্ধ করলেন৷ এবং তাঁদের দ্বারা ইসলাম'কে হেফাজত করার সিন্ধান্ত নিলেন৷
এবার মুনাফেরা দারুনভাবে হতাশগ্রস্থ হয়ে গেলো, কিন্তু তারা মুনাফেকি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র মোটেও ছাড়লো না ৷ এজন্য তারা নবী (সঃ)-এর পুত্রদের বিষ ও তরবারী দ্বারা হত্যা করতে লাগলো ৷