অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মোহাম্মাদ শামীম মীর্জা
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকান হেলথ ইনফরমেশন বেস (healthline) রোজা নিয়ে পরিচালিত এক সিরিজ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে।
উপবাস হল এমন একটি অভ্যাস যা বহু ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান। প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে, হিপোক্রেটিস, পিথাগোরাস এবং অ্যাভিসেনার মতো মহান ডাক্তাররা উপবাসের মাধ্যমে কিছু রোগের চিকিৎসা করেছিলেন।
সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, মানবদেহে উপবাসের প্রভাব নিয়ে অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। আমেরিকান হেলথ ইনফরমেশন ডাটাবেস " healthline" রোজা রাখার কিছু উপকারিতা উল্লেখ করেছে যা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ত্রিশ দিন রোজা রাখলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ উন্নত হয়। প্রকৃতপক্ষে, ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে। উপবাস আপনার শরীরের ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে, এটি আপনার রক্ত প্রবাহ থেকে আপনার কোষে গ্লুকোজ সরাতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।
উপবাস শরীরের প্রদাহ কমায়, যার ফলে স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
110 জন স্থূল প্রাপ্তবয়স্কদের উপর আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে একজন চিকিত্সকের তত্ত্বাবধানে চার সপ্তাহ রোজা রাখলে রক্তচাপ কমে যায় এবং সেই সাথে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) মাত্রা কমে যায়। এছাড়াও, উপবাস ক্যালোরি খরচ কমিয়ে এবং বিপাক বৃদ্ধি করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। মূলত, সমস্ত ডায়েট আপনার ক্যালোরি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করে আপনার ওজন কমানোর চেষ্টা করে। যদিও এই চিকিৎসাটি রোজা রাখার মাধমে অতি সহজেই পাওয়া সম্ভব।
রোজাদারদের উপর একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে উপবাস গ্রোথ হরমোন (HGH) নিঃসরণ বাড়াতে পারে। এই হরমোন শরীরের বিপাক এবং পেশী বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, গবেষণাগারের প্রাণীদের উপর বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে উপবাস বার্ধক্যকে বিলম্বিত করতে পারে এবং আয়ু বাড়াতে পারে। যে ইঁদুরগুলিকে উপবাসে রাখা হয়েছিল সেগুলি সাধারণ ইঁদুরের চেয়ে বেশি দিন জীবিত ছিল। এছাড়াও, উপবাস ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে এবং কেমোথেরাপির প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
শারীরিক প্রভাব ছাড়াও,রোজার অনেক মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করা এবং জীবনের চাপপূর্ণ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করা।