হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী: পর্ব ১- ভারতীয় উপমহাদেশের আলেম সমাজ ভারতবর্ষ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ কর্তৃক জবরদখল হলে দারুল হারব এবং বিধর্মী খ্রিষ্টান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ প্রবর্তিত ঈমান হরণকারী সেক্যুলার বস্তুবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা হারাম বলে ঘোষণা দিয়ে আসলে সর্বহারা ও বঞ্চিত ভারতীয় মুসলমানদের ঈমান ও অস্তিত্বই রক্ষা করেছিলেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণ কবলিত
হওয়ার আগে ভারত বর্ষে বিশেষ করে সূবেহ বাংলায় হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের বিদ্যা শিক্ষার উৎকৃষ্ট ব্যবস্থা ছিল । প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার লিখেছেন : " টমাস বাউরী ( ১৬৬৯ - ৭৯ খ্রী: ) বাঙালী ব্রাহ্মণের মানসিক উৎকর্ষের বিশেষ প্রসংশা করিয়াছেন । যাঁহারা নব্যন্যায়ের জন্য সমগ্র ভারতবর্ষে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছেন , এ প্রসংশা ন্যায্যত তাঁহাদের প্রাপ্য । এই প্রসঙ্গে ইহাও উল্লেখযোগ্য যে অন্যান্য অনেক বিষয়ে হীন হইলেও বাঙালী চরিত্রের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল জ্ঞানার্জনের স্পৃহা , এবং হিন্দু - মুসলমান উভয় সম্প্রদায়েই বিদ্যাশিক্ষার উৎকৃষ্ট ব্যবস্থা ছিল ।" ( দ্র : রমেশচন্দ্র মজুমদার , বাংলাদেশের ইতিহাস , ২য় খণ্ড ( মধ্যযুগ ) , ধর্ম ও সমাজ , পৃ : ২২৭ , পঞ্চম সংস্করণ , মার্চ ১৯৯৮ পরিমার্জিত সংস্করণ : ২০০৫ , প্রকাশক : শ্রী সুরজিৎ চন্দ্র দাস , জেনারেল প্রিন্টার্স য়্যাণ্ড পাব্লিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড , কলিকাতা , ভারত )
আর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসন শোষণের আগে সুলতানী , মুঘল ও নবাবী আমলে সাধারণ মানুষের অবস্থা ও ব্রিটিশ আমলে সাধারণ মানুষের অবস্থার মধ্যে তূলনা করে রমেশ চন্দ্র মজুমদার লিখেছেন : " তবে ভাত কাপড়ের দু:খ হয়ত বর্তমান যুগের ( ব্রিটিশ আমল ও তৎপরবর্তী যুগ ) অপেক্ষা কম ছিল ।(( দ্র : বাংলাদেশের ইতিহাস , ২য় খণ্ড ( মধ্যযুগ ) , পৃ :১৬৪ )) " আর এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে ব্রিটিশ শাসন ও শোষণে ভারতবর্ষ তথা বাংলার সাধারণ মানুষের ভাত কাপড়ের দু:খ অর্থাৎ অভাব ও দারিদ্র্য তীব্র ও শোচনীয় আকার ধারণ করেছিল ।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের আগে বাংলার কয়েক শতাব্দী ধরে বিকাশিত উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে রমেশচন্দ্র মজুমদার লিখেছেন : " স্বাধীন সুলতানী আমলে অর্থাৎ দ্বাদশ হইতে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ধন - সম্পদে বিশেষ সমৃদ্ধ ছিল । দেশের শস্য সম্পদ , শিল্প ও বাণিজ্যই ইহার প্রধান কারণ । আর একটি রাজনীতিক কারণও ছিল ।
সপ্তদশ শতকের আরম্ভেই মুঘল শাসন বাংলাদেশে দৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইহা মুঘল সাম্রাজ্যের একটি সুবায় পরিণত হয় । ইহার পূর্বে চারি শতাব্দীতে বাংলাদেশ অধিকাংশ সময়ই স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল । এই সময় বাংলার সম্পদ বাংলায়ই থাকিত , সুতরাং বাংলাদেশ খুবই সম্পদশালী ছিল । …চলবে…