হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ২- ইমাম হুসাইন (আ.): ইয়াজিদ ভাল মানুষ হলে ইমাম হুসাইন (আ.) এ কথা বলতেন না যে, ইয়াজিদের মত অসৎ লোক যদি মুসলমানদের (স্বীকৃত) নেতা হয় তাহলে ইসলাম চির-বিদায় নেবে। ইয়াজিদ ভাল মানুষ হলে মক্কা ও মদিনার বিখ্যাত সাহাবিরা তাকে সমর্থন করতেন, কিন্তু তারা তা করেননি বলেই মক্কা ও মদিনায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় ইয়াজিদ।
সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে যোবাইর:
ইয়াজিদ এটা শুনেছিল যে সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে যোবাইর বলতেন: ইয়াজিদ এক প্রতারক, মাতাল ও সত্য পথ পরিত্যাগকারী এবং এমন এক ব্যক্তি যে গায়িকা নারীদের সঙ্গে থাকে। (বিদায়া ও নিহায়া, খণ্ড-৮ পৃ-২৭৯) তিনি মদীনায় ইয়াজিদ বাহিনীর হত্যা ও অপরাধযজ্ঞকেও বৃহত্তম ও কুৎসিততম অপরাধ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
এমনকি ইবনে জিয়াদও ইয়াজিদকে ফাসিক বলেছে:
এমনকি ইয়াজিদের দোসর ইবনে জিয়াদও মক্কায় হামলা চালানোর ব্যাপারে তার রাজা ইয়াজিদের হঠকারী নির্দেশে ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিল: আল্লাহর শপথ! এক ফাসিকের জন্য আমি দু’টি বিষয় সমন্বিত করব না। আমি এরিমধ্যে নবীর কন্যার সন্তানকে হত্যা করেছি। আর এখন সে (ইয়াজিদ) আমাকে বায়তুল হারামে যুদ্ধ বাধাতে বলছে। ইবনে জিয়াদ যখন ইমাম হুসাইন (আ.)-কে শহীদ করে তখন জিয়াদের মা মারজানা তীব্র তিরস্কার করে পুত্রকে বলেছিল: তোমার মৃত্যু হোক! তুমি কি করলে এবং কত বড় অপরাধ করেছ! (বিদায়া ও নিহায়া, খণ্ড-৮ পৃ-২৭৯)
ইয়াজিদের ছেলে মুয়াবিয়া ইবনে ইয়াজিদ:
ইয়াজিদ যে নিকৃষ্টতম ব্যক্তি ছিল তা তার ছেলে মুয়াবিয়া(দ্বিতীয়)ও উল্লেখ করেছিল বলে ইতিহাসে বর্ণনা এসেছে। ইয়াজিদ ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর পরিবার এবং সঙ্গীদের হত্যা করায় মুসলমানদের মধ্যে ইয়াজিদ পরিবার কলঙ্কিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে মুয়াবিয়া ইবনে ইয়াজিদ এবং এ জন্য সে ইয়াজিদের মৃত্যুর পর কথিত খলিফা হতে রাজি হয়নি।
ইয়াজিদের অভিশপ্ত হওয়া সংক্রান্ত আরো এক অকাট্য যুক্তি:
সুন্নি মনীষী ইবনে কাসিরের বিদায়া ও নিহায়ার অষ্টম খণ্ডের ২৭৪ পৃষ্ঠায় এ হাদিসটি উল্লেখিত হয়েছে ইমাম হাম্বলের মুসনাদ থেকে। এতে বলা হয়েছে: যে অবিচার ছড়িয়ে দেয় ও মদীনার লোকদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে তার ওপর আল্লাহর ও তাঁর ফেরেশতাদের এবং সব মানুষের অভিশাপ বর্ষিত হয়।
পবিত্র কুরআনেও (সুরা আহজাবে) বলা হয়েছে: যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে বিরক্ত করে বা কষ্ট দেয় আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তথা পরকালে তাদের ওপর অভিশাপ দেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন অপমানজনক বা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। (৩৩:৫৭)...চলবে...
লেখা: রাসেল আমেদ রিজভী