মাওলানা মাসুম আলী গাজী নাজাফী
ছাব্বিশতম অমীয় বাণী।
গ্রন্থ শিরোনাম: চল্লিশটি অমীয় বাণী। (সমস্যা সমাধানের জন্য বারোটি দোয়া সহ)
সংকলন: আল্লামা শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) ।
বিষয়: ওই গৃহ যা ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) জান্নাতে তাঁর এক সঙ্গীকে ক্রয় করে দিয়েছিলেন।
عَنْ هِشَامُ بْنُ الْحَکَمُ قَالَ کَانَ رَجُلٌ مِنْ مُلُوْکِ اَهْلِ الْجَبَلِ یَاْتِیْ الصَّادِقَ عَلَیْهِ السَّلامُ فِیْ حَجَّةِ سِنَةٍ فَیَنْزُلُه اَبُوْ عَبْدِاللّٰهِ عَلَیْهِ السَّلامُ فِیْ دَارٍ مِنْ دُوْرِه فِیْ الْمَدِیْنَةِ وَطَالَ حَجُّه وَ نَزُوْلُه فَاَعْطٰی اَبَا عَبْدِاللّٰه عَلَیْهِ السَّلامُ عَشْرَةَ اَلافِ دِرْهَمٍ لِیَشْتَرِیْ لَه دَارًا وَ خَرَجَ اِلَی الْحَجِّ فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ جُعِلَتْ فِدَاکَ اِشْتَرَیْتَ لِیَ الدَّارَ؟ قَالَ نَعَمْ وَ اٰتٰی بِصَکَ فِیْهِ:
"بِسْمِ ا للّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ هٰذَا مَا اِشْتَرٰی جَعْفَرِ بْنُ مُحَمَّدٍ لِفُلانِ بْنِ لِفُلانِ الْجَبَلِیْ لَه دَارٌ فِی الْفِرْدَوْسِ حَدُّهَا الْاَوَّلَ رَسُوْلُ اللّٰهِ وَ الْحَدُّ الثَّانِیْ اَمِیْرُ الْمُوْمِنِیْنَ اَلْحَدُّ الثَّالِثُ اَلْحَسَنُ بْنُ عَلِیٍّ وَ الْحَدُّ الرَّابِعُ اَلْحُسَیْنُ بْنُ عَلِیٍّ"
فَلَمَّا قَرَءَ الرَّجُلُ ذَلِکَ قَالَ قَدْ رَضِیْتُ جَعَلَنِیَ اللّٰهُ فِدَاکَ قَالَ فَقَالَ اَبُوْ عَبْدِاللّٰهِ عَلَیْهِ السَّلامُ:
اِنِّیْ اَخَذْتُ ذَلِکَ الْمَالُ فَفَرَّقْتُه فِیْ وُلِدِ الْحَسَنِ وَالْحُسَیْنِ وَ اَرْجُوْ اَنْ یَّتَقَبَّلَ اللّٰهُ ذَلِکَ وَ یُثِیْبَکَ بِهِ الْجَنَّةِ"
قَالَ فَانْصَرَفَ الرَّجُلُ اِلٰی مَنْزِلِه وَکَانَ الصَّکُّ مَعَه ثُمَّ اِعْتَلَّ عِلَّةَ الْمَوْتِ فَلَمَّا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُجَمَعَ اَهْلَه وَ حَلَفَهُمْ اَنْ یَجْعَلُوْا الصَّکُّ مَعَه فَفْعَلُوْا ذَلِکَ فَلَمَّا اَصْبَحَ الْقَوْمُ غَدَوْا اِلٰی قَبْرِه فَوَجَدُوْ ا الصَّکُّ عَلٰی ظَهْرِ الْقَبْرِ مَکْتُوْبٌ عَلَیْهِ:
"وَفٰی وَلِیُ اللّٰهِ جَعْفَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ
"কুতুব রাওয়ান্দী এবং ইবনে শাহার আশোব হিশাম ইবনে হেকাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, সিরিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তি যিনি ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) -এর বন্ধু ছিলেন। তিনি প্রতি বছর হজ্জ উপলক্ষে ইমামের সঙ্গে যখন মদীনায় সাক্ষাত করতে আসতেন তখন ইমাম (আঃ) তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসতেন। মহানুভবতা ও ইমামকে অত্যাধিক ভালোবাসার কারণে তিনি দীর্ঘকাল ইমামের খেদমতে থাকতেন। একদা ওই ব্যক্তি হজ্জ উপলক্ষে মদিনায় আসেন এবং হজ্জ পূর্বে দশ হাজার দিরহাম ইমামের হস্তান্তর করে বলেন, এই দিরহাম দিয়ে আমার জন্য আপনি একটি বাড়ি ক্রয় করবেন। সুতরাং হজ্জ শেষে ওই ব্যক্তি তাঁর আঃ) খেদমতে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, আমি আপনার উপর কুরবান! আপনি কি আমার জন্য গৃহ ক্রয় করেছেন? তিনি (আঃ) বলেন: হ্যাঁ!
তিনি তাকে একটি কাগজ দিয়ে বলেন, এটি হল ঐ গৃহের দলিল। ওই ব্যক্তি যখন ওই দলিল পড়েন তাতে লেখা ছিল:
'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম' এটি হল ওই দলিল যা জাফর ইবনে মুহাম্মদ (আঃ) অমুক ইবনে অমুক জাবালী এর জন্য ক্রোয় করেছেন। আর ঐ গৃহ জান্নাতের মধ্যে অবস্থিত। ঐ ঘরের চারটি সীমা। প্রথম সীমা হল মহানবী (সাঃ) -এর ঘরের সাথে, দ্বিতীয় সীমা হল হযরত আলী (আঃ) -এর ঘরের সাথে, তৃতীয় সীমাটি হল ইমাম হাসান ইবনে আলী (আঃ) -এর ঘরের সাথে এবং চতুর্থ সীমাটি হল ইমাম হোসায়েন (আঃ) -এর ঘরের সাথে।
ওই ব্যক্তি যখন তা পাঠ করলেন, তখন তিনি বললেন, এই গৃহ থেকে আমি সন্তুষ্ট এবং আমি আপনার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করছি।
ইমাম (আঃ) তখন বলেন: গৃহ ক্রয়ের জন্য তুমি যে অর্থ আমাকে দিয়েছিলে তা আমি ইমাম হাসান ও ইমাম হোসায়েন (আঃ) -এর সন্তানদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছি এবং আমি আশা করি যে, মহান আল্লাহ তাআলা তোমার এই অর্থ গ্রহণ করবেন। আর বিনিময়ে তোমাকে জান্নাত দান করবেন।
সুতরাং ওই ব্যক্তি নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন আর ওই দলিলও নিজের কাছে রেখে দেন।
যখন এই ব্যক্তির জীবনের দিন ঘনিয়ে আসছিল এবং কিছু দিন পর তিনি মৃত্যুশয্যায় পৌঁছে গেলেন তখন তিনি তার পরিবারের সকলকে একত্র করলেন এবং তাদের থেকে শপথ নিলেন যে, আমার মৃত্যুর পর তারা যেন এই কাগজটি আমার কবরের মধ্যে রেখে দেয়। সুতরাং তারাও তার অছিয়াত পালন করে। পরের দিন তারা যখন ঐ ব্যক্তির কবরে গেল তারা দেখল যে, একই কাগজ কবরের উপরে পড়ে আছে এবং তাতে লেখা আছে:
"আল্লাহর কসম! জাফর ইবনে মুহাম্মাদ (আঃ) আমাকে যা বলেছিলেন এবং যা কিছু লিখে দিয়েছিলেন তিনি তা পূরণ করেছেন।" (অর্থাৎ, আমি জান্নাতে স্থান পেয়েছি) ।"
মানাকিব ইবনে শাহার আশোব পৃষ্ঠা ২৩৩..
বিঃদ্রঃ! প্রিয় পাঠক, আমি মূল আরবী লেখাটি লিখেছি, তবে মূল আরবীর অনুবাদ করেনি।
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ওয়া আ'লে মুহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ওয়াহ শুরনা মাআহুম ওয়াল আন আদুওয়াহুম।