۹ فروردین ۱۴۰۳ |۱۸ رمضان ۱۴۴۵ | Mar 28, 2024
খাতুনে জান্নাত
খাতুনে জান্নাত

হাওজা / রাসূল (সা.)-র ওফাতের পর আহলে বাইতের উপর অত্যাচার নির্যাতনের সূত্রপাত ঘটে কয়েকজন ক্ষমতালোভী ব্যক্তি কর্তৃক ওহী গৃহে আক্রমণের মাধ্যমে।

লেখা: আবুল কাসিম

পর্ব ৪- কী এমন ঘটনা ঘটেছিল যে আবু বকর সেজন্য প্রচুর পরিমাণে দুঃখিত হতেন❓ কী এমন কাজ তিনি করেছিলেন❓

আসুন জেনে নেওয়া যাক!!!

(১) নিযাম বলেন --

হযরত ওমর বাই'আতের দিন হযরত ফাতেমার পেটে ও পাজরে এমনভাবে আঘাত করেন যে, এর ফলে তার গর্ভস্থ সন্তান মুহসীন গর্ভপাত হয়ে মারা যায় এবং হযরত ওমর তখনো চিৎকার দিচ্ছিলেন- "ঘরের লোকদেরসহ এ ঘরে আগুন দাও।" ²¹

(২) সৈয়দ মোর্তযা (রহঃ) এ সম্পর্কে লিখেছেন --

"ঐতিহাসিক এবং মোহাদ্দিসদের বর্ননামতে হযরত ফাতিমা যাহরার (সাঃআঃ) শাহাদতের উক্ত ঘটনাটিকে অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই । কেননা সেই যুগের তথাকথিত মুষ্টিমেয় কিছু সাহাবীরা হযরত ফাতিমা যাহরার (সাঃআঃ) পবিত্র ঘরের দরজায় আগুন প্রজ্বলিত করে এবং জলন্ত দরজার উপরে সজোরে লাথি মেরে তা হযরত ফাতিমা যাহরার (সাঃআঃ) উপরে ফেলে দেয় এবং ফাতিমা যাহরাকে (সাঃআঃ) চাবুক দ্বারা আঘাত করতে থাকে ।

কিন্তু ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ) আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের (সাঃ) নির্বাচিত খলীফাকে রক্ষার জন্য তাদের চাবুকের আঘাতকে সহ্য করতে থাকেন ।

যখন উক্ত ঐতিহাসিক এবং মোহাদ্দিসরা এ ঘটনাটির কুপ্রভাব সম্পর্কে অবগত হয় তখন তারা উক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করার ক্ষেত্রে নিজেদেরকে বিরত রাখে" ²²

(৩) মাসউদী তার গ্রন্থে কিছু অংশ উল্লেখ করেন --

“فَوَجهُوا اِلی مَنْزلِهِ فَهَجَمُوا عَلَیْهِ وَ اَحْرَقُوا بابَهُ... وَ ضَغَطُوا سَیدَةَ النساءِ بِالْبابِ حَتی اَسْقَطَتْ مُحْسِنا”

অর্থ:- "অতঃপর তারা (হযরত ওমর এবং তার সঙ্গীরা) হযরত আলীর (আঃ) ঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় তাঁর ঘরের কাছে একত্রিত হয় এবং তার ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় ... তারা জ্বলন্ত দরজার পাল্লা দিয়ে মা জননী ফাতিমা যাহরার (সাঃআঃ) পাঁজরে আঘাত করার ফলে তাঁর অকালে গর্ভপাত হয় এবং হযরত মোহসীন মারা যান" ²³

(৪) আহলে সুন্নাতের একজন রেওয়ায়েত বর্ণনাকীর নাম সুকুনী তিনি বলেছেন :

"একবার আমি ষষ্ঠ ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) এর সমীপে উপস্থিত হই ।

কিন্তু আমি দুঃখিত ছিলাম । তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, "হে সুকুনী তোমার কি হয়েছে? কেন তোমাকে দুঃখিত দেখাচ্ছে?"

আজকে আমার একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে যার কারণে আমি মনক্ষুন্ন যে , কেন আল্লাহ আমাকে পুত্র সন্তান দান করলেন না?

তখন তিনি আমাকে বলেন , "হে সুকুনী ! কেন তুমি মন খারাপ করছ , আল্লাহ তার রুজির ব্যাবস্থা করবেন এবং সে তোমার রুজি খাবে না"।

ইমাম (আঃ) এর কথা শোনার পরে আমার দুঃখ কিছুটা লাঘব হয়।

অতঃপর তিনি বলেন, "তুমি তোমার মেয়ের নাম কি রেখেছ ?

আমি তাঁকে বলি , ফাতেমা"।

উক্ত নামটি শোনার পরে তিনি তাঁর হাতকে কপালে রেখে ক্রন্দন করতে থাকেন ।

অতঃপর তিনি বলেন, "যেহেতু তুমি তার নাম ফাতেমা রেখেছ সেহেতু তাকে তুমি তার সাথে অশ্লীল ভাষায় কথা বলবে না , তাকে মারবে না এবং তাকে অভিশাপ দিবে না । কেননা উক্ত নামটি আল্লাহ তায়ালার কাছে অতি সম্মানিত । আর উক্ত নামটি স্বয়ং আল্লাহ নিজে তাঁর হাবীবের কন্যার জন্য নির্বাচন করেছেন"।

যখনই ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) তার মাতামহ হযরত ফাতেমা (সাঃআঃ) এর কথা স্মরণ করতেন এবং বলতেন, "আমার মাতামহ অমুকের দাস কুনফুযের দেয়া আঘাতের কারণে মত্যু বরণ করেন"।

কিন্তু দুঃখের বিষয় যে , সুকুনি তার এ বর্ণনায় ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) এর অবশিষ্ট কথাটুকু উল্লেখ করেননি ।

এ সম্পর্কে 'আবা বাসির' ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) হতে বর্ণিত অবশিষ্ট কথাগুলো উল্লেখ করেছেন -

وَ کانَ سَبَبُ وَفاتِها اَن قُنْفُذَ مَوْلی عُمَرَ لَکَزَها بِنَعْلِ السیْفِ بِاَمْرِهِ فَاَسْقَطَتْ مُحْسِنا وَ مَرِضَتْ مَرَضا شَدیدا وَلَمْ تَدَعْ اَحَدا مِمنْ آذاها یَدْخُلُ عَلَیْها.

"হযরত ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ) কুনফুয এবং হযরত ওমরের দেয়া আঘাতের কারণে শাহাদাত বরণ করেন ।

কুনফুয হযরত ওমরের নির্দেশে তরবারির খাপ দ্বারা হযরত ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ) কে আঘাত করে ।

উক্ত আঘাতের কারণে নবীকন্যার অকালে গর্ভপাত ঘটে এবং গর্ভস্থ সন্তান হযরত মোহসীন মারা যায় । তিনি উক্ত আঘাতের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি তাঁর প্রতি অত্যাচারীদের সাথে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আর দেখা করেননি" ²⁴

[অতএব, উল্লেখিত ঘটনা থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে , কুনফুয এবং হযরত ওমরের আঘাতের কারণে হযরত ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ) শাহাদাত বরণ করেন]...চলবে...

تبصرہ ارسال

You are replying to: .