হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউক্রেনের ভাঁড় রাষ্ট্রপতি যেলেনেস্কি বলেছে যে ১৬০০০ বিদেশি ভলান্টিয়ার যোদ্ধা ইউক্রেনের আহ্বানে ইউক্রেনে আসবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে । যেলেনেস্কি নিজেও ইহুদী । উক্ত ১৬০০০ বিদেশি ভলান্টিয়ারের একটি অংশ ইসরাইলী সৈন্য ।
রাশিয়া বলেছে : আসলে ভলান্টিয়ারের বেশে ন্যাটো বাহিনীর সৈন্যদেরকেই ইউক্রেনে পাঠানোর পায়তারা চালাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো । আর তা হলে এটা হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর সরাসরি যুদ্ধ যার পরিণতি মোটেও ভালো হবে না । রাশিয়া বাইকানূরে ব্রিটেনের একটি স্যাটেলাইট বা স্পেস্ ক্র্যাকট (?) উৎক্ষেপণ কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছে ।
ইতিমধ্যে ইউক্রেনে সিরিয়া থেকে ১৫০০ তাকফীরী টেরোরিস্টকেও ইউক্রেনে চালান দেওয়া হয়েছে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ।
রাশিয়াকে বেকায়দায় ফেলার জন্য
পাশ্চাত্য চাচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধটা রাশিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘ গেরিলা যুদ্ধে রূপান্তরিত করতে ।
তবে সে ক্ষেত্রে রাশিয়াও চুপ করে বসে থাকবে না বরং দেশটি ইউক্রেনের রুশ বংশোদ্ভূতদেরকে এবং ইউক্রেনী জাতির মধ্যেও যারা রাশিয়ার সমর্থক ( Pro Russians ) তাদেরকে
অস্ত্রে সজ্জিত করে মোবিলাইয্ করবে ইউক্রেনের এই পাশ্চাত্যপন্থী ভাঁড় প্রশাসনের বিরুদ্ধে । ফলে ইউক্রেনে বহির্হামলা সহ দীর্ঘ জটিল গৃহযুদ্ধ লেগে যাবে । শুধু রাশিয়া একাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে না সেক্ষেত্রে ইইউয়ের যে সব দেশ এনার্জির ( তেল ও গ্যাস ) জন্য রাশিয়ার ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল যেমন : জার্মানি দীর্ঘমেয়াদী এ যুদ্ধ তাদেরও দারুন অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করবে ! কারণ এনার্জির তীব্র ঘাটতি ও সংকট এবং এর চরম মূল্য বৃদ্ধি পাবে ( তেলের দাম ১৫০ ডলারেরও অধিক হয়ে যেতে পারে ) । আর দু বছরের অধিক কাল ধরে করোনায় বিশ্ব যেমন বিপর্যস্ত ঠিক তেমনি গোটা পাশ্চাত্য : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপও বিধ্বস্ত । তাই দীর্ঘ মেয়াদী এ যুদ্ধের ধকল ও খরচ যোগানো এবং জ্বালানি তেল ও গ্যাসের চড়া মূল্য বৃদ্ধি কি ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ্য করতে পারবে ? রাশিয়া সবকিছু বুঝে শুনে ও সবদিক বিবেচনা করেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিশেষ সামরিক ব্যবস্থা নিয়েছে । স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদী সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়েই রাশিয়া নেমেছে । কারণ ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের ঢোকা রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি স্বরূপ । তাই এটা রাশিয়া কোনো ভাবেই বরদাশত করবে না এবং তা বাস্তবায়িত হতেও দেবে না। ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে যা হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য নাকি হুমকি - এ ধরণের মিথ্যা দাবি তুলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে দেশটা দখল করে নেয় ২০০৩ সালে । অথচ রুশ সীমান্তে অবস্থিত ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে যোগদান যে রাশিয়ারও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তা পাশ্চাত্য, ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মোটেও গ্রাহ্য করছে না এবং উপেক্ষা করছে । এটা কেমন বিচার? গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার মিথ্যা বানোয়াট রিপোর্টের ভিত্তিতে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও তাদের চেলা চামুণ্ডারা ইরাক আক্রমণ করে দেশটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করল এবং দুই মিলিয়ননের অধিক ইরাকীর মৃত্যুর কারণ হল তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা ( যেমন কঠোর অবরোধ ) কে আরোপ করবে ? সংগত কারণেই রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিশেষ সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ায় পাশ্চাত্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ এবং রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ্যাসেট ফ্রিয্ করেছে এমনকি পুতিনের ঘনিষ্ঠ
হওয়ার জন্য স্যাংকশন জারি করে রাশিয়ার এক ধনকুবেরের প্রমোদতরি জব্দ ও রাশিয়ার বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে । এটা কিভাবে করা হল ? অথচ মিথ্যা অজুহাতে ইরাক দখল করে বিশ লক্ষাধিক ইরাকী হত্যা করেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও তাদের চেলাচামুন্ডা বেকসুর খালাস? কী ভয়ঙ্কর সাংঘাতিক জংলি আইন পৃথিবীর ওপর চাপিয়ে দিয়েছে পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও ইইউ ! আর কত বড় বর্ণবাদীও এরা ( পাশ্চাত্য ) !! পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও ইইউ এর অবৈধ সামরিক আগ্রাসন ও দখলদারিত্বে মিলিয়ন মিলিয়ন ইরাকী, আফগান , সিরীয় , লিবীয় , ফিলিস্তিনি , লেবাননী ও ইয়েমেনী জনতা মারা গেলে ও উদ্বাস্তু ( শরণার্থী ) হলেও কিছুই যায় আসে না ওদের । আর ইউক্রেন সংকটে ইউক্রেনের কিছু জনতা শরণার্থী হলে গোটা পাশ্চাত্য এখন মায়া কান্না জুড়ে দিয়েছে ও কুম্ভীরাশ্রু ঝড়াচ্ছে। অথচ ইউক্রেনকে আজ এ সংকটে ফেলেছে স্বয়ং পাশ্চাত্য , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ । পাশ্চাত্য অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন, ফ্রান্স হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে সংকট ও অশান্তি সৃষ্টি কারী এবং এরা সংকটজীবী ( অর্থাৎ সংকট সৃষ্টি করেই বেঁচে থাকে ও তা থেকে জীবিকা নির্বাহ করে ) । তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বর্তমান রাশিয়ার চেয়েও ঢের বেশি সামরিক হস্তক্ষেপ ও আগ্রাসন চালিয়েছে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন , ফ্রান্স ও সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলো এবং কোটি কোটি মানুষকেও হত্যা করেছে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , কানাডা , অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড নিজ দেশের কোটি কোটি আদিবাসীকে হত্যা করে খতম ও নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। স্পেন ও পর্তুগালও দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় কোটি কোটি আদিবাসীকে গণহত্যা চালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। বেলজিয়াম কঙ্গোতে কোটি খানিক আদিবাসীকে ঊনবিংশ শতক থেকে শুরু করে বিংশ শতকের প্রথম দিক পর্যন্ত হত্যা করেছিল এবং মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের হাত পা কেটে তাদেরকে পঙ্গু করে ফেলেছিল । এ ছাড়া ব্রিটেন ভারত বর্ষ ও বাংলায় ১৯০ বছরের কালা দু:শাসন ও শোষণ চালিয়ে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে কোটি কোটি বাঙ্গালী ও ভারতবাসীর মৃত্যু ঘটিয়েছে । কই এত সব দুষ্কর্ম , গণহত্যা , প্রজন্ম হত্যা , সামরিক আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের জন্য এ সব পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো সম্ভব হয়েছে ? আজ ৭৪ বছর ধরে অধিকাংশ ফিলিস্তিনি অবৈধ দখলদার ইসরাইল নামক বর্ণবাদী যাযনবাদী ইহুদীবাদী সাম্রাজ্যবাদী মেকি রাষ্ট্রটি কর্তৃক নিজ মাতৃভূমি ফিলিস্তীন থেকে উচ্ছেদ হয়ে আশেপাশের দেশগুলোয় শরণার্থীর জীবন যাপন করছে । এ জন্য ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রটি এবং এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও ফ্রান্স কি উপযুক্ত সাজা পেয়েছে ? কে দেবে তাদেরকে শাস্তি ও সাজা ? তারাই তো দুনিয়ার হর্তা কর্তা । তাদের নাগাল কে পায় ?!
এই হল তথাকথিত মানবতাবাদী ডেমোক্র্যাটিক ভদ্র সুশীল পশ্চিমা বিশ্ব ( পাশ্চাত্য ) । এর প্রকৃত স্বরূপ আজ ভালোভাবে উন্মোচিত হয়ে গেছে । ইউক্রেন সংকটের জন্য পাশ্চাত্যের উচিত রাশিয়াকে নয় বরং নিজেকে নিজের শাস্তি দেওয়া ।
গত ২০২০ সালে ব্রেক্সিট হওয়ার পর লিখেছিলাম যে ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে আসার প্রকৃত কারণ যা ব্রিটেন দেখিয়ে থাকে তা নয় । আসল কারণ হচ্ছে ইইউকে দুর্বল করা সহ ব্রেক্সিটের সুবাদে ব্রিটেন , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের তিন স্যাটেলাইট রাজ্য : কানাডা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এ পাঁচ অ্যাংলোফোনিয়ান ( ইংরেজি ভাষাভাষী ) দেশ মিলে নয়া বিশ্বগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী রাজনৈতিক , সামরিক , অর্থনৈতিক , নিরাপত্তামূলক সাংস্কৃতিক জোট গঠন করে বিশ্বের সকল খনিজ ও এনার্জি সোর্স এবং সামুদ্রিক বাণিজ্যিক রুটের উপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস চালাবে এবং এ জন্য এ জোট বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সংকট , যুদ্ধ , দ্বন্দ্ব - সংঘাত ও বিরোধের সৃষ্টি করবে । এরপর ব্রেক্সিটের এক বছরের মাথায় গত বছর ( ২০২১ সাল ) ব্রিটেন , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া মিলে অকুস জোট গঠনের কথা ফাঁস হয়ে যায় যা গোপন রাখা হয়েছিল এবং ইইউ , ফ্রান্স , চীন , রাশিয়া সহ কোনো দেশই ঐ অকূস ( AUKUS ) চুক্তির কথা ঘুর্ণাক্ষরেও জানতে পারে নি । অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্সের সাথে ৯০ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি বাতিল করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাথে পারমাণবিক সাবমেরিন চুক্তি করলে এই গোপন চুক্তি জানাজানি হয়ে যায় এবং ফ্রান্স ও ইইউ তীব্র অসন্তুষ্ট ও ক্ষুব্ধ হয় । চীন নিজের নিরাপত্তা বিপন্ন
হওয়ার কথা ভেবে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানায় এ চুক্তির বিরুদ্ধে । কারণ , অকূস চুক্তি মোতাবেক অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ১২টি পারমাণবিক সাবমেরিন ও পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের প্রযুক্তিও অর্জন করবে এবং এভাবে অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হবে যারফলে চীন দক্ষিণ চীন সাগরে পারমাণবিক সাবমেরিন শক্তির অধিকারী অস্ট্রেলিয়া , ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পরিবেষ্টিত হয়ে যাবে । এ ছাড়া চীনের পূর্ব প্রান্তে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া তো আছেই যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাবেদার মিত্র। আবার বঙ্গোপসাগরে (বে অফ বেঙ্গল)ও পাঁচ অ্যাংলোফোনিয়ান দেশ জোট (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন , কানাডা , অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ) সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে পারলে চীনকে সব দিক থেকে ঘেরাও এর ষোলো কলা পূর্ণ হয়ে যাবে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ তো পূর্ব থেকেই স্বয়ং ট্রাম্প নিজেই ব্যক্ত করেছিলেন । আর বঙ্গোপসাগরের দেশ সমূহকে কোয়াড চুক্তির আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । কিছু দিন আগে ভারত ও আরব আমিরাত এতে যুক্ত হয়েছে । উদ্দেশ্য চীনকে ঘেরাও এবং ভারত মহাসাগর , প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সকল সামুদ্রিক বাণিজ্যিক রুট এবং খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস্য সহ এনার্জি ( জ্বালানি তেল গ্যাস ) সোর্সের উপর কব্জা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা । আর ইরান বাদে পশ্চিম এশিয়ার ( মধ্য প্রাচ্য ) পেট্রোলিয়াম উৎপাদন কারী দেশগুলোর উপর তো পাশ্চাত্য তবে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তো আছেই ।
সামনে যদি ব্রিটিশ কমন ওয়েল্থ ভুক্ত দেশগুলো বিশেষ করে বিশাল জনসংখ্যা বহুল দেশ সমূহ যেমন : ভারত , বাংলাদেশ , পাকিস্তান , নাইজেরিয়া ইত্যাদিকে ঐ পাঁচ অ্যাংলোফোনীয় দেশ জোট নিজেদের অধীনস্থ করার চেষ্টা করবে । আর এরফলে আফ্রিকা , ইউরোপ , দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের খনিজ সম্পদের উৎস্য , এনার্জি সোর্স এবং সামুদ্রিক বাণিজ্যিক রুট কব্জায় রাখার জন্য বিভিন্ন ধরণের চুক্তি সম্পাদন করবে এবং আঞ্চলিক সংকট , অস্থিরতা , দ্বন্দ্ব - সংঘাত , বিরোধ ও যুদ্ধ লাগিয়ে রাখবে এই পাঁচ অ্যাংলোফোনীয় দেশে জোট ! আর এ ভাবে ব্রিটেন ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে অপর চার অ্যাংলোফোনীয় দেশের সাথে জোট গঠন করে কমন ওয়েল্থের মতো আরো জোট সমূহকে সাথে নিয়ে নয়া অ্যাংলোফোনিয়ান এম্পায়ার ( অ্যাংলোফোনীয় সাম্রাজ্য ) গঠন করে বিশ্বকে জবরদখল ও কব্জা করার প্ল্যান এঁটেছে ।
আর ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে থাকলে বিশ্বের সকল খনিজ সম্পদ ও এনার্জি সোর্সে ইইউকেও ভাগ দিতে ও শরীক করতে হত এবং সামুদ্রিক বাণিজ্যিক রুটে চলাচলের জন্য ইইউএর কাছ থেকে তখন ভেট আদায় করা যেত না । আর ইইউ থেকে বের হয়ে এসে ইইউএর কাছে খনিজ সম্পদ ও বিশেষ করে এনার্জি ( তেল গ্যাস ) বিক্রি করে বহুত লাভবান হবে ব্রিটেন এবং ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই অ্যাংলোফোনীয় দেশগুলোর জোট । তাই ইইউএর সাথে এনার্জির রমরমা ব্যবসা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন সংকট তৈরি করেছে । এর এক অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে রাশিয়াকে এ সংকটের দোষে দুষ্ট করে ও স্যাংকশন আরোপ করে ইউরোপের এনার্জি মার্কেট থেকে বিদায় করা এবং রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের পরিবর্তে তুর্কমেনিস্তান , আযারবাইজান , কাতার , ইসরাইল ও লেবাননের গ্যাস ভূমধ্যসাগর এবং তুরস্কের মধ্য দিয়ে ইউরোপে সরবরাহ করা । আর অকূস চুক্তি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তীব্র ক্ষুব্ধ , অসন্তুষ্ট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ব্রিটেনের এই স্যাটেলাইট রাজ্যত্রয়ের প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়লে এবং রাশিয়ার সাথে ইইউএর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহোযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন খুব সুকৌশলে ইউক্রেন সংকট সৃষ্টি করে রাশিয়ার সাথে ইইউএর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা অনির্দিষ্টকালের জন্য নষ্ট করে ইইউ ও রাশিয়ার মধ্যে বিরোধ ও তিক্ত শত্রুতার সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছে এবং এখন থেকে ইইউ অধিক দুর্বল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো জোটকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরো শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করার চেষ্টা করবে ইউরোপে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল নয় এমন ইইউ মিলিটারি গঠন করার পরিকল্পনাও সম্পূর্ণ ভেস্তে যাবে এবং ন্যাটোই পূর্ণ দমে বহাল থাকবে ইউরোপে ।
তাহলে আমরা বলতে পারি যে ইউক্রেন সংকট ব্রেক্সিটের এক অনিবার্য পরিণতি । আমরা ভবিষ্যতে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ধরণের আরো সংকট , গোলোযোগ , দ্বন্দ্ব -সংঘাত প্রত্যক্ষ করব যেগুলো হবে ব্রেক্সিটেরই অমোঘ পরিণতি ।
ইউক্রেন সংকটের মূলে ব্রেক্সিটের প্রকৃত স্বরূপ , ভূমিকা ও প্রভাব সঠিক ভাবে বুঝতে হবে ।
মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
শুক্রবার ,
১লা শা'বান , ১৪৪৩ হি.