হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মির্জা মুহম্মাদ শামীম সাহেব
হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, এটা কিভাবে কল্পনা করা যায় যে আল্লাহ, যাকে আমরা তাঁর করুণার দ্বারা চিনি, তিনি মানুষকে তার শত্রুর হাতে বন্দী হওয়ার জন্য একা ছেড়ে দেবেন?!
প্রলোভন হল সেই পথ যা শয়তান মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করে। আল্লাহর মতে, শয়তানের শত্রুতা মানুষের সৃষ্টির প্রথম থেকেই প্রকাশিত হয়েছিল:
… لَا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ
হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা সকলেই শান্তির মধ্যে (ইসলামে) প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না; নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
সূরা বাকারা, আয়াত: ২০৮।
পবিত্র কুরআন শয়তান এবং তার প্রভাবের উপায়গুলি পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পরে, এই বিপদ থেকে পরিত্রাণের উপায়গুলি বলে দিয়েছে:
শয়তানের মোকাবিলার প্রথম ধাপ হল,শয়তানের দ্বারা সৃষ্ট দূষণ থেকে আত্মাকে শুদ্ধ করার জন্য বান্দাদের তাওবা করা। মানুষের প্রথমবারের ভুল তওবার মাধ্যমে দূর হয়:
فَتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
অতঃপর আদম নিজ প্রতিপালকের নিকট থেকে (ক্ষমা প্রার্থনার) কিছু শব্দ লাভ করল। এবং তিনি (সে শব্দগুলোর বরকতে) তার তওবা কবুল করে নিলেন। নিশ্চয় কেবল তিনিই অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সূরা বাকারা, আয়াত: ৩৭।
তওবার গুরুত্ব এতই বেশি যে, কেউ যদি তাতে সফল হয় এবং তার পর ভালো কাজ করে, তাহলে তার কোন গুনাহ লেখা হবে না এবং মহান আল্লাহ তার পূর্ববর্তী সংগঠিত খারাপ কাজসমূহ নেক ও উত্তম কাজে রূপান্তরিত করবেন।
إِلَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا
তবে তারা ব্যতিরেকে যারা তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, সুতরাং তারা হল এমন, আল্লাহ যাদের মন্দ কর্মগুলোকে পুণ্যকর্মে পরিবর্তিত করে দেবেন এবং আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, অনন্ত করুণাময়।
সূরা ফুরকান, আয়াত: ৭০।
সমস্ত সত্তা দিয়ে মহান আল্লাহর প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রতিটি মানুষের আত্মিক প্রয়োজন এবং এর মাধ্যমে শয়তানের ষড়যন্ত্র ও প্রবৃত্তিকে অকার্যকর করা সম্ভব।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا
হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে অত্যধিক স্মরণ কর।
সূরা আহযাব, আয়াত ৪১।
শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় নেওয়া, তাকওয়াবান হওয়া, গুনাহের পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা এবং আল্লাহর উপর ভরসা করার মাধ্যমে শয়তানকে পরাস্ত করা সম্ভব এবং এভাবেই মানুষ তার পরিপূর্ণতার পথ থেকে বিচ্যুত হয় না।
إِنَّهُ لَيْسَ لَهُ سُلْطَانٌ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
নিশ্চয় যারা বিশ্বাসী এবং কেবল তাদের প্রতিপালকের ওপরই নির্ভর করে তাদের ওপর তার (শয়তানের) কোন আধিপত্য নেই।
সূরা নাহল, আয়াত: ৯৯।