۲ آذر ۱۴۰۳ |۲۰ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 22, 2024
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত

হাওজা / আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত , গাদ্দার বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে প্রকৃত মুসলিম উম্মাহকে শনাক্ত করার মাপকাঠি ।

মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান (মুহররম, ১৪৪৪ হি.)

পর্ব ১২- কিছু নমুনা নীচে পেশ করা হল :

১. ক্বারাযা ইবনে কাব ( রা:) বলেন : হযরত উমর ( রা:) আমাদেরকে কূফায় পাঠালেন এবং সিরার নামক স্থান পর্যন্ত আমাদের সাথে আসলেন । অত:পর তিনি বললেন : তোমরা জান কি আমি কেন তোমাদের সাথে হাঁটলাম ? ক্বারাযাহ বলেন : আমরা বললাম : রাসূলুল্লাহর (সা:) সাথে সাহচর্যের হক এবং আনসারদের হক আদায়ের জন্য । তিনি ( উমর ) বললেন : তবে আমি তোমাদেরকে যে কথা বলার ইচ্ছা করেছি তা বলার জন্য তোমাদের সাথে আমি হেঁটেছি । আমি চাই যে তোমাদের সাথে আমার হাঁটার জন্য তোমরা তা ( আমার কথাটা ) মনে রাখবে । তোমরা এমন এক জনগোষ্ঠীর কাছে গমণ করছ যাদের বক্ষদেশে পবিত্র কুরআনের জন্য ডেগের কড়কড় শব্দের ন্যায় কড়কড় ( শো শো ) শব্দ রয়েছে ( অর্থাৎ তারা টগবগে ফুটন্ত ডেগের শব্দের ন্যায় অনবরত শব্দ করে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকে )। অত:পর যখন তারা তোমাদেরকে দেখবে তখন তারা তোমাদের দিকে তাদের গ্রীবাদেশ উঁচিয়ে ও প্রসারিত করে বলবে : এঁরা হযরত মুহাম্মদের (সা:) সাহাবা । অত:পর তোমরা হযরত মুহাম্মদ ( সা:) থেকে কম হাদীস রিওয়ায়ত করবে । এরপর আমি তোমাদের শরীক হব । ( আমার পরবর্তী নির্দেশ আসা পর্যন্ত মহানবীর (সা:) হাদীস কম বর্ণনা করবে । )

( দ্র : সুনান ইবনে মাজাহ , সংকলকের ভূমিকা , হাদীস নং ২৮ , পৃ : ১৫ , দার ইহয়াইত তুরাস আল আরাবী , বৈরুত , ১ম সংস্করণ , প্রকাশ কাল : ১৪২১ হি: )

এ বর্ণনা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে হযরত উমরের ( রা:) সরকারী প্রশাসনিক নীতি ছিল রাসূলুল্লাহর ( সা:) হাদীস কম বর্ণনা করা ( হাদীস চর্চা সীমিত করা ) । আর রাষ্ট্রীয় এ নীতির প্রভাব পড়েছিল সমাজে রাসূলুল্লাহর ( সা:) হাদীস চর্চার ক্ষেত্রে । যেমন :

সায়েব ইবনে ইয়াযীদ বলেন : আমি মদীনা থেকে মক্কা পর্যন্ত সাদ ইবনে মালিকের সাথে ছিলাম । আমি (এ দীর্ঘ পথে ) তাকে মহানবী ( সা:) থেকে একটা হাদীসও বর্ণনা করতে শুনিনি । ( দ্র : প্রাগুক্ত সুনান ইবনে মাজাহ , হাদীস নং ২৯ , পৃ : ১৫ )

আব্দুল্লাহ ইবনে আবিস সফর বলেন : আমি শা'বীকে বলতে শুনেছি : আমি ইবনে উমরের সাথে এক বছর উঠা বসা ( বৈঠক ) করেছি । ঐ এক বছরে তাঁকে রাসূলুল্লাহ ( সা:) থেকে একটা হাদীসও বর্ণনা করতে শুনিনি ।

( দ্র : প্রাগুক্ত সুনান ইবনে মাজাহ , হাদীস নং ২৬ , পৃ : ১৫ )

আর হাদীস চর্চা কম করা এবং বৃদ্ধ হয়ে স্মরণ শক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলে সাহাবাদের হাদীস বর্ণনায় বিভ্রাট , বিপত্তি ও সন্দেহ :

যেমন :

আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা বলেন : আমি হযরত যাইদ ইবনে আরকামকে ( রা:) বললাম :

আমাদের কাছে রাসূলুল্লাহর ( সা:) হাদীস বর্ণনা করুন । অত:পর তিনি বললেন : আমরা বৃদ্ধ হয়ে গেছি এবং ভুলেও গেছি । আর রাসূলুল্লাহর ( সা:) হাদীস বর্ণনা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ ।

( দ্র : প্রাগুক্ত সুনান ইবনে মাজাহ , হাদীস নং ২৫ , পৃ : ১৫ )

মুহাম্মদ ইবনে সীরীন বলেন : যখন ই হযরত আনাস ইবনে মালেক ( রা:) রাসূলুল্লাহর (সা:) হাদীস বর্ণনা করা শেষ করতেন ঠিক তখনই বলতেন : অথবা রাসূলুল্লাহ (সা:) এ কথার মতো বা এতদ সদৃশ কিছু ( কোনো কথা ) বলেছেন ।

( প্রাগুক্ত সুনান ইবনে মাজাহ , হাদীস নং ২৪ , পৃ : ১৫ )

আমর ইবনে মাইমূন বলেন : আমি যে কোনো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাতে হযরত ইবনে মাসউদের ( রা : ) কাছে গেলে ই তিনি আমাকে চিনতে ভুল করতেন না । তিনি ( আমর ইবনে মাইমূন ) বলেন : আমি তাঁকে ( ইবনে মাসউদ ) কখনোই কোনো বিষয়ে বলতে শুনিনি যে রাসূলুল্লাহ ( সা:) বলেছেন । অত:পর একদা যখন সন্ধ্যা রাত হল তখন তিনি ( রা:) বললেন : রাসূলুল্লাহ ( সা:) বলেছেন : ....। আমর ইবনে মাইমূন বলেন : ( এ কথা বলার পর ) তিনি ( ইবনে মাসউদ ) লজ্জায় মাথা নামিয়ে রাখলেন । তিনি ( আমর ইবনে মাইমূন ) বলেন : অত:পর আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে তিনি এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন যে তাঁর কামীসের বোতামগুলো সব খোলা । তাঁর দুই চোখ অশ্রুতে ভরে গেছে এবং গলার রোগগুলো ফুলে উঠেছে । আর তিনি ( ইবনে মাসউদ ) বলছিলেন : " অথবা ওটার নীচে অথবা ওটার উর্ধ্বৈ অথবা ওটার নিকটে অথবা ওটার সদৃশ । "!!!

( দ্র : প্রাগুক্ত সুনান ইবনে মাজাহ , হাদীস নং ২৩ , পৃ : ১৪ - ১৫ )

পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ ( মহানবীর হাদীস , কাজ ও সম্মতি ) ইসলামী শরীয়ত ও বিধি বিধানের প্রধান মূল উৎস বলে পরিগণিত । সুন্নাহ ব্যতীত পবিত্র কুরআন একেবারেই অচল । অথচ হাদীস সংকলন , বর্ণনা ও চর্চার নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার জন্য বানোয়াট , মিথ্যা , জাল ও দুর্বল হাদীসের পূর্ণ সুযোগ তৈরি হয়ে যায় মুসলিম বিশ্বে এবং তা উম্মতের বিচ্যুতি , ইসলামের দুশমন বনী উমাইয়ার ক্ষমতায়ন এবং রাসূলুল্লাহর ( সা:) আহলুল বাইত কে ( আ:) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ,রাজনৈতিক ,প্রশাসনিক সামরিক অর্থনৈতিক নেতৃত্বের অঙ্গন থেকে দূরে সরানোর মূল কারণে পর্যবসিত হয়েছে । স্মর্তব্য যে হিজরী ২য় শতাব্দীতে বনী উমাইয়া প্রশাসনের তত্ত্বাবধান ও পৃষ্ঠপোষকতায় হাদীস সংকলন শুরু হওয়া পর্যন্ত উক্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল । আর বনী উমাইয়া তাদের রাজনৈতিক স্বার্থেই হাদীস সংকলনের অনুমোদন দিয়েছিল । তাই হাদীস সংকলন ধারায় ঐ সব হাদীস সরকারী আনুকল্য ও প্রচার সুবিধা পেয়েছিল যেগুলোয় আহলুল বাইত ব্যতীত অন্য যে কোনো সাহাবার শা'ন ও ফযীলত এবং আহলুল বাইতের নেতৃত্ব নয় বরং যে কোনো ব্যক্তির নেতৃত্ব এমনকি বনী উমাইয়া ও অত্যাচারী যালিম শাসকদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব মেনে নেয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে যদিও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও অনুমোদন প্রাপ্ত এ সব হাদীস সংকলনে আহলুল বাইতের ফযীলত ও নেতৃত্ব সংক্রান্ত অল্প কিছু হাদীস স্থান পেয়েছে যা একাই আহলুল বাইতের (আ: ) হক্কানীয়ত , সুমহান মর্যাদা , শ্রেষ্ঠত্ব , এবং নেতৃত্ব দানের যোগ্যতা ও অধিকার প্রমাণের জন্য যথেষ্ট ।…চলবে…

تبصرہ ارسال

You are replying to: .