মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান (১৯-১২-২০২২)
হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, মালয়েশিয়া মুসলিম নারীদের জন্য একটি নতুন আইন পাস করেছে। এই আইনে বিবাহ বহির্ভূত গর্ভধারণ, পুরুষদের মতো আচরণ ও পোশাক পরার জন্য বেত্রাঘাত ও জরিমানা রয়েছে। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংশোধনীটি ইসলাম সে-মালয়েশিয়া শাসিত তেরেঙ্গানু রাজ্যে জাদুবিদ্যাকেও নিষিদ্ধ করেছে।
এই ধরনের অপরাধের জন্য পাঁচ হাজার রিঙ্গিত বা মালয়েশিয়ার মুদ্রা পর্যন্ত জরিমানা এবং ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৬টি বেত্রাঘাত বা উভয়ই হতে পারে ।
মানবাধিকার কর্মীরা বিশ্বাস করেন, তেরেঙ্গানু রাজ্যে সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ দেশের নারী অধিকারের বর্তমান অবস্থাকে আরও খারাপ করবে।
এখন পশ্চিমা সরকারগুলো এবং প্রচার ও সংবাদ মাধ্যম সমূহ কী করবে ? ওরা কি মালয়েশিয় সরকারের বিরুদ্ধে দেশটির নারী সমাজকে বিদ্রোহ ও গোলযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে বা জানাবে ? ইরানের ব্যাপারে তারা তো খুব অপপ্রচার চালাচ্ছে ? ইরানী নৈতিকতা পুলিশ মাহসা আমীনীকে হিজাব অমান্য করার জন্য স্রেফ তাদের ট্রেনিং সেন্টারে নিয়ে গিয়েছিল হিজাব বিষয়ক ধর্মীয় বিধিবিধান এবং ইরানের সরকারী আইনের সাথে পরিচিত করাতে ।
অথচ সে সেখানে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেলে ইসলাম বিরোধী বিপথগামী পাশ্চাত্যপন্থী মুষ্টিমেয় ইরানী নারী ও পরুষ এবং পশ্চিমা মিডিয়া ও সরকারগুলো মিথ্যা অভিযোগ তুলে বলছে যে মাহসা আমীনী নাকি পুলিশী নির্যাতনে মারা গেছে। অথচ তাকে মারধোর ও আঘাতের বিষয় পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে প্রমাণিত হয় নি। কিন্তু কে শুনে কার কথা?!!
এখন তো মালয়েশিয়ার নতুন হিজাব আইনে অন্তত: ৬ ঘা বেত্রাঘাত খাবে হিজাব আইন অমান্যকারী কোনো কোনো মালয়েশিয় মহিলা। তাহলে বেত্রঘাতে ( দৈহিক সাজা প্রাপ্তির কারণে ) অনেক মহিলার তো মৃত্যুও হতে পারে ! এখন বুঝি পশ্চিমা সরকার ও মিডিয়াগুলোর পরান পুড়ছে না মালয়শিয় নারীদের জন্য !!!
আর ইত্তেফাক যেভাবে ইরানের ব্যাপারে বলে ঠিক সেভাবে মালয়েশিয়ার নতুন হিজাব আইনের বিরুদ্ধে লেখালেখি করবে ?!!!
এটাই হচ্ছে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী নীতি ( ডাবল স্ট্যান্ডার্ড্ পলিসি )। একই বিষয়ে এক জায়গায় তারা চুপ থাকে আরেক জায়গায় বিরোধিতায় ফেটে পড়ে !!
যদি পশ্চিমারা মালয়েশিয়ার হিজাব আইনের ব্যাপারে কোনো কিছু না বলে , বিরোধিতা ও প্রতিবাদ না করে এবং মালয়শিয় নারীদের হিজাব অমান্য করার জন্য প্ররোচিত না করে ও উস্কানি না দেয় তাহলে এতে করে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী নীতি ( ডাবল স্ট্যান্ডার্ড্ পলিসি) প্রমাণিত হল যা আসলেই নিন্দনীয়। আবার পশ্চিমারা যদি এ আইনের বিরোধিতা করে এবং মালয়শিয় নারীদেরকে হিজাব অমান্য করার উস্কানি দেয় তাহলে তারা জঘন্য অন্যায়ই করল ।
কারণ তারা একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং মুসলমানদের ধর্মীয় শরয়ী আইন কানুনের বিরোধিতা করার জন্য । এখন উভয় দিক থেকেই পশ্চিমারা নিন্দিত হবে । এ আইনের বিরোধিতা না করলেও অথবা বিরোধিতা করলেও । আর এরপর থেকে ইত্তেফাকের মতো পাশ্চাত্য পন্থী সংবাদ পত্র ও মাধ্যম গুলোর নীতি অবস্থানও হবে দেখার মতো ।
একটা কথা : যে মালয়শিয়া ইসলামী প্রজাতন্ত্র নয় বরং রাজতান্ত্রিক দেশ সেই মালয়শিয়া যদি ইসলামী হিজাব আইন বাধ্যতামূলক করতে পারে তাহলে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ও বিপ্লবী দেশ ইরান সরকারীভাবে হিজাব আইন বাধ্যতামূলক করতে পারবে না কেন ? !! এ কেমন কথা ? এটাই হচ্ছে বাস্তবতা যে পশ্চিমারা গোটা জগৎটাকেই এক মহা জঙ্গলে পরিণত করেছে । এক জায়গায় বিশেষ বিধান কার্যকর হলে দোষ হবে এবং আরেক জায়গায় কার্যকর হলে দোষ হবে না !!!
লক্ষ্যণীয় যে ইরানে হিজাব আইন অমান্য করলে বড় জোর মাত্র কয়েক হাজার তুমান অর্থদণ্ড হয় এবং সেই সাথে ইসলামী হিজাব সংক্রান্ত শরয়ী বিধিবিধান এবং সরকারী ( রাষ্ট্রীয় ) আইনের শিক্ষা দেওয়া হয় হিজাব অমান্য কারী নারীকে নীতি পুলিশের ট্রেনিং কেন্দ্রে নিয়ে মাত্র আধা ঘন্টার জন্য । এরপর হিজাব অমান্য কারী মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ।
কিন্তু মালয়শিয়ায় হিজাব অমান্য করার শাস্তি সংক্রান্ত আইন ইরানের চাইতেও অনেক কড়া । মোটা অংকের অর্থদণ্ড, ৩ বছর জেল ও ৬ বেত্রাঘাতের শাস্তি দেওয়ার কথা উল্লেখিত হয়েছে মালয়েশিয়ার নয়া হিজাব আইনে হিজাব লংঘন কারী নারীদের জন্য ।