মুহাম্মদ মুশফিক (৯-১২-২০২২)
হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, কেমন মিথ্যাচার ও নির্জলা মিথ্যা প্রোপাগ্যাণ্ডা চালাচ্ছে হারামজাদা বদমাইশ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম গুলো এবং তাদের দোসর ও অংশীদার হয়েছে ইত্তেফাক যার মালিক হয়েছিলেন মানিক মিয়া সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে এক জটিল ধোঁয়াশা প্রক্রিয়ায় ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ভাসানীকে সড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে । আর এ পত্রিকাটি ও এর নব্য মালিকের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন পাশ্চাত্যের ভক্ত অনুরক্ত ( বরং পাশ্চাত্য প্রেমিক ) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যিনি আরবদেরকে অবজ্ঞা করে যিরো প্লাস যিরো প্লাস যিরো ইয্ ইকুয়াল টু যিরো ( ০+০+০ = ০ ) বলেছিলেন এবং সুয়েজ ক্যানাল যুদ্ধে মিসরের বিরুদ্ধে ব্রিটেনকে সমর্থন করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে !!!
( সুয়েজ ক্যানালকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত ) সংকটময় পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহীদ সোহরাওয়ার্দী এক অস্পষ্ট , অপরিচ্ছন্ন ও দ্ব্যর্থবোধক ভূমিকা গ্রহণ করেন । এমনকি সুয়েজ সমস্যার উপর ১২ই নভেম্বর দিল্লীতে আহূত কলম্বো শক্তিসমূহের ( Colombo Powers ) সম্মেলনে আমন্ত্রণ গ্রহণ করা সত্ত্বেও ইরানের রাজধানী তেহরানে আহূত বাগদাদ প্যাক্ট কাউন্সিল সভায় যোগদানের জন্য ইস্কান্দার মীর্জাসহ তিনি তেহরান গমন করেন। .... সোহরাওয়ার্দীর অনুসৃত নীতি বস্তুত: আরব জাহানে পাকিস্তানকে বিরাগভাজন রাষ্ট্রে পরিণত করে । এইদিকে দিল্লীতে আহূত কলম্বো পাওয়ারস সম্মেলনে যোগদান না করায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় পাকিস্তান একঘরে হইয়া পড়ে ( দ্র: অলি আহাদ প্রণীত জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫ , পৃ : ২১৮ ) ।
শুধু তাই নয় সোহরাওয়ার্দী ছিলেন সর্ব প্রথম রাজনৈতিক নেতা যে পাকিস্তানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বলয়ের খোয়ারে ঢুকিয়েছিলেন !!! নীচে পাঠকবর্গের সামনে আরো কিছু তথ্য তুলে ধরা হল :
১৯৬৯ সালের ৩১ মে রাওয়াল পিন্ডিতে মানিক মিয়া মারা যান । শুরুতে মানিক মিয়া খানিকটা চীনপন্থী হলেও পরবর্তীতে একদমই মার্কিন পন্থী হয়ে গিয়েছিলেন । সম্ভবত : সোহরাওয়ার্দীর প্রভাবে ( দ্র : ইত্তেফাকের জন্ম রহস্য | আমার বন্ধু https://www.amrabondhu.com/masum/3390 ) ।
১৯৬৩ সালেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ঘোষণা করেন যে , পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত মার্কিন সাহায্য হইতে পূর্ব পাকিস্তানের অংশ পূর্বাহ্নেই নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইবে । ইহার ফলে পূর্ব পাকিস্তানীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই
পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকারের চাইতে অধিকতর সহানুভূতিশীল মনে করিবার ইন্ধন পাইয়া গেল । সুকৌশলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানী জনতাকে উস্কানি দান করাই ছিল উপরোক্ত মন্তব্যের লক্ষ্য । প্রেসিডেন্ট আইয়ুব এই সময় সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব চীন - সোভিয়েটের সহিত ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে সাম্রাজ্যবাদী সামরিক জোটের প্রতি উৎসাহ হারাইয়া ফেলেন । কেন্দ্রীয় সরকারকে বেকায়দায় ফেলিবার জন্যই মার্কিন
সরকার নানাভাবে প্রচেষ্টা চালাইতে থাকে। এই প্রচেষ্টায় শেখ মুজিবুর রহমান দাবার ঘুঁটি হইতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেন নাই। শক্তিশালী দোসর হিসাবে তাহার সহিত যোগ দেয় দৈনিক ইত্তেফাক ( দ্র: অলি আহাদ প্রণীত জাতীয় রাজনীতি, পৃ : ২৭৩-২৭৪ ) ।
মার্কিন সরকার (পাকিস্তানের) সাবেক প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জাকে দেশে ( ৭ই অক্টোবর ১৯৫৮ ) সামরিক আইন জারি করিতে বাধ্য করে ! অথচ ইস্কান্দার মীর্জার পদচ্যুতির সময় মার্কিন সরকার নীরব দর্শক ছিলেন মাত্র। আবার সাধারণ নির্বাচন বানচাল করিবার ব্যাপারে ইস্কান্দার মীর্জার প্রয়াসে মদদ জোগাইয়া সোহরাওয়ার্দীর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনাকে অঙ্কুরেই বিনাশ করিতেও মার্কিন সরকার সামান্যতম ইতস্তত: করেন নাই । ইহাকেই বলে " বড়র পিরীত বালির বাঁধ "! বিশ্বাসঘাতকতা ও হতাশাই অসম প্রেমকে ক্ষতবিক্ষত করে। মান যায়, জাতি যায় , কুল যায় কিন্তু আরাধ্যজনের কৃপার দেখা পাওয়া যায় না। সহজ সরল চিরন্তন সত্যটি সোহরাওয়ার্দী অনুধাবন করিতে ব্যর্থ হইয়াছিলেন । মার্কিন প্রেমে মশগুল হইয়া সোহরাওয়ার্দী আরব জাহান , মুসলিম জাহান ও তৃতীয় বিশ্বের কঠোর সমালোচনার পাত্রে পরিণত হইতেও দ্বিধা করেন নাই । এমনকি স্বীয় জনগণের নিকটও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির খুঁটি হিসাবে পরিচিতি অর্জন করিলেন। অদৃষ্টের আরো নির্মম পরিহাস এই সঙ্গেই লক্ষণীয়। তাহার হাতে গড়া শেখ মুজিবুর রহমানকেও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের নায়ক হওয়ার সত্ত্বেও ভারতীয় সরকারের সাক্ষীগোপাল নায়কের অবাঞ্ছিত পরিচয় লইয়াই
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানে ধরাধাম হইতে বিদায় নিতে হইয়াছিল ( দ্র: প্রাগুক্ত , পৃ : ২৪১ ) ।
পাকিস্তানী শাসনদণ্ডের নায়কবৃন্দ যথা - নওয়াবজাদা লিয়াকত আলী খান , গোলাম মোহাম্মদ, ইস্কান্দার মীর্জা , শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ ইসলামী জীবনদর্শন নির্দেশিত জীবনবোধ , সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিরুদ্ধে ছিলেন পর্বত প্রমাণ বাধা ( দ্র : প্রাগুক্ত , পৃ : ২৪৩ ) ।
অতএব এখান থেকে বোঝা যায় যে ইত্তেফাক কেন পাশ্চাত্যের গোলামী ও দালালি করবে না ?!!! আরো লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে যে , যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের বুলি আওড়ায় ও গণতন্ত্রের ধ্বজা উড়ায় সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে গণতন্ত্র ধ্বংস , বিনাশ ও কবর রচনা করে স্বৈরাচারী সামরিক শাসন প্রবর্তন ও জারী করিয়েছিল । জেনারেল ইস্কান্দার মীর্জা , হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ পশ্চিমা প্রেমিক ব্যক্তিরা কায়মনোবাক্যে ইখলাস , খুলূসিয়ত ও নিষ্ঠার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদসেবা করেও যেন তাদের সদা প্রভুর কৃপা ও সন্তুষ্টি লাভ করতে পারেন নি ! প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এদেরকে ঠিকই আবর্জনার মতো নর্দমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে । আর এখনো যারা পশ্চিমাদের পদসেবা করছে তাদেরকেও পূর্বসূরীদের পরিণতি বরণ করতেই হবে। প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলেই তাদেরকেও পশ্চিমারা ছুঁড়ে ফেলে দিতে ইতস্তত: বোধ করবে না।
আর সেই সাথে স্পষ্ট হয়ে যায় যে ইত্তেফাকের অস্তিত্বের সাথে পাশ্চাত্য পূজা , পাশ্চাত্যের দাসত্ব ও পশ্চিমা বন্দনা মিলে মিশে একাকার হয়ে আছে । বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে ইত্তেফাক অত্র অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী লক্ষ্য - উদ্দেশ্য , পলিসি ও এজেন্ডা যেমন অতীতে বাস্তবায়নে লিপ্ত ছিল যা অলি আহাদ প্রণীত জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫ বই থেকে উল্লেখ করা হয়েছে ঠিক তেমনি বর্তমানেও এ পত্রিকাটি ঐ একই কাজে লিপ্ত আছে । এই ফাসিক পত্রিকা ও এর মতো দেশে বিদেশে আরো অন্যান্য ফাসিক ( দুর্নীতি পরায়ণ পাপাচারী ) পত্রিকা ঠিক ( ইরান সংক্রান্ত ) উপরোক্ত মিথ্যা অমূলক খবরের মতোই ইরান সংক্রান্ত ফাসিক ( দুর্নীতি পরায়ণ পাপাচারী মিথ্যুক ) ফাজির ( লম্পট বদমাইশ ) কাফির পশ্চিমাদের প্রদত্ত মিথ্যা খবরসমূহই পরিবেশন করেই যাচ্ছে অবলীলায় !! আসলে এই সব পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম , ইত্তেফাক এবং এ ধরণের দেশী-বিদেশী সংবাদ পত্র ও প্রচার মাধ্যম হচ্ছে " ইন জাআকুম ফাসিক্বুন বিনাবাইন্ ফাতাবাইয়ানূ " [ যদি তোমাদের কাছে কোনো ফাসিক ( দুর্নীতি পরায়ণ পাপাচারী ) ব্যক্তি সংবাদ নিয়ে আসে তাহলে তাবাইয়ুন (সংবাদের সত্যতা যাচাই বাছাই ও পরীক্ষা ) করবে ] - পবিত্র কুরআনের এ আয়াতে উল্লেখিত ফাসিক্ব্ ( দুর্নীতি পরায়ণ পাপাচারী ) - এর আধুনিক বাস্তব নমুনা ও সংস্করণ।
অতএব ইত্তেফাকের মতো মিথ্যাচারী ভণ্ড ফাসিক্ব ফাজির কাফির পাশ্চাত্যের বেতনভুক নৌচারা ( ভৃত্য চাকরবাকররা ) মিথ্যাচার করেই যাবে । তাই পাঠক বর্গের উচিত এদের মিথ্যাচার দিয়ে প্রভাবিত না হওয়া এবং এদের পরিবেশিত খবর ও প্রতিবেদনসমূহের সত্যতা তাবাইয়ুন ( যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা ) করা ।