۳ آذر ۱۴۰۳ |۲۱ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 23, 2024
হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মির্জা মুহম্মাদ শামিম
হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মির্জা মুহম্মাদ শামিম

হাওজা / কুরআনে যে অনুপযুক্ত নৈতিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করা হয়েছে তার মধ্যে একটি হল খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা।

হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মির্জা মুহম্মাদ শামিম

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কুরআনে যে অনুপযুক্ত নৈতিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করা হয়েছে তার মধ্যে একটি হল খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা। পবিত্র কুরআনে এর প্রকারভেদ সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। কুরআনে মানুষের মধ্যে বিরাজমান বিশ্বাসঘাতকতার শিকড় ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

বিশ্বাসঘাতকতা এমন একটি আচরণ যা সমাজের ভিত্তিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় এবং ধর্মীয় গ্রন্থে এর তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। বিশ্বাসঘাতকতা এক ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ এবং প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন এবং আমানতের ক্ষতির কারণ হয়। আমানত কখনও কখনও একটি শারীরিক বস্তু, কিন্তু একটি চুক্তিও এক ধরনের আমানত হিসাবে বিবেচিত হয়। এই কারণে, বিবাহিত ব্যক্তি যখন অন্য ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে, তখন তারা তাকে বিশ্বাসঘাতক বা খিয়ানতকারী বলে। যে ব্যক্তি বিশ্বাসঘাতকতা করে তাকে বিশ্বাসঘাতক বলা হয়।

বিশ্বাসঘাতকতার শিকড়গুলির মধ্যে একটি হল “নাফসে আম্মারা”র প্রতি মনোযোগ দেওয়া। “নাফসে আম্মারা” এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি তার যুক্তি অনুসরণ করে না এবং এর কারণে সে পাপ ও ভুলের শিকার হয়। “নাফসে আম্মারা” হল মানুষের আচরণের সর্বনিম্ন স্তর এবং এটি একজন মানুষকে দৃঢ়ভাবে কদর্যতা ও পাপের দিকে প্ররোচিত করে।

হযরত ইউসুফ (আ.) জুলেখার খারাপ আচরণের উৎসকে “নাফসে আম্মারা”র সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন:

وَمَا أُبَرِّئُ نَفْسِي إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّي إِنَّ رَبِّي غَفُورٌ رَحِيمٌ

‘এবং আমি আমার প্রবৃত্তিকে নিষ্কলঙ্ক বলছি না, (কেননা,) নিশ্চয় প্রবৃত্তি মন্দ কর্মের আদেশ প্রদানে অত্যন্ত তৎপর; তবে তা ব্যতীত যার প্রতি আমার প্রতিপালক করুণা করেন; নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক অতিশয় ক্ষমাশীল, অনন্ত করুণাময়।’

সূরা ইউসূফ, আয়াত: ৫৩।

বিশ্বাসঘাতকতার আরেকটি মূল হল বহুশ্বরবাদ এবং খোদার ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস না করা। দুর্বল বিশ্বাসের লোকেরা কখনও কখনও অপমান এবং বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়। তারা মনে করে যে তারা যদি প্রতারণা না করে, তাহলে তারা জীবনে পিছিয়ে থাকবে এবং তাদের স্বার্থ সরবরাহ করা হবে না।

কুরআনে বিশ্বাসঘাতকতাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে:

১. আল্লাহ ও নবীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা: কুরআনের একটি আয়াতে একজন ব্যক্তিকে আল্লাহ ও নবীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে নিষেধ করা হয়েছে:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি খেয়ানত (বিশ্বাস ভঙ্গ) কর না।

সূরা আনফাল, আয়াত: ২৭।

২. জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা: একই আয়াতে মহান আল্লাহ নির্দেশ করেছেন যে, কেউ যদি আমানত প্রদান করে, তাহলে তার প্রতি অধিক মনোযোগ স্থাপন করতে হবে এবং এক্ষেত্রে মোটেও খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা করা যাবে না:

وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُون

তোমরা নিজেদের আমানতেরও খেয়ানত কর না, যেক্ষেত্রে তোমরা অবহিত।

সূরা আনফাল, আয়াত: ২৭।

ইসলামের নবী (সা.) এই অনৈতিক আচরণ সম্পর্কে বলেছেন:

ارْبَعٌ لا تَدْخُلُ بَيْتاً واحِدَةٌ مِنْهُنَّ الَّا خَرِبَ وَ لَمْ يَعْمُرْ بِالْبَرَكَةِ الْخِيانَةُ وَ السِّرِقَةُ وَ شُرْبُ الْخَمْرِ وَ الزِّنا

চারটি জিনিস আছে যেগুলির মধ্যে একটি যদি গৃহে প্রবেশ করে, তাহলে তা ধ্বংসের কারণ হবে এবং আল্লাহর বরকত সেখানে প্রবেশ করবে না;

১. খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা,

২. চুরি,

৩. মদ্যপান এবং

৪. যিনা বা ব্যভিচার

যে সমাজে এই চারটি জিনিসের একটি বা সবগুলি প্রবর্তিত হয়, একই বিধানের অধীন, সে সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং বরকত থেকে বঞ্চিত হবে।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .