۲۵ آذر ۱۴۰۳ |۱۳ جمادی‌الثانی ۱۴۴۶ | Dec 15, 2024
রমজান মাসের ১১তম দিনের দুআ অনুবাদসহ ও দুআর বিশেষ বাক্যগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ
রমজান মাসের ১১তম দিনের দুআ অনুবাদসহ ও দুআর বিশেষ বাক্যগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ

হাওজা / হে আল্লাহ! এ দিনে সৎ কাজকে আমার কাছে প্রিয় করে দাও আর অন্যায় ও নাফরমানীকে অপছন্দনীয় কর ।

মজিদুল ইসলাম শাহ

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১তম রমজানের দুআ

اَللّـهُمَّ حَبِّبْ اِلَيَّ فيهِ الاِْحْسانَ، وَكَرِّهْ اِلَيَّ فيهِ الْفُسُوقَ وَالْعِصْيانَ، وَحَرِّمْ عَلَيَّ فيهِ السَّخَطَ وَالنّيرانَ بِعَوْنِكَ يا غِياثَ الْمُسْتَغيثينَ.

হে আল্লাহ! এ দিনে সৎ কাজকে আমার কাছে প্রিয় করে দাও আর অন্যায় ও নাফরমানীকে অপছন্দনীয় কর । তোমার অনুগ্রহের উসিলায় আমার জন্য তোমার ক্রোধ ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হারাম করে দাও। হে আবেদনকারীদের আবেদন শ্রবণকারী।

গুরুত্বপূর্ণ দিক

(১) সৎকর্ম ও নেকির সম্পাদন;আমরা আমাদের পালনকর্তাকে আমাদের অন্তরে সৎকর্ম করার ইচ্ছা জাগাতে অনুরোধ করি (২) পাপ এবং অনৈতিকতা থেকে বিদ্বেষের অনুভূতি (৩) আল্লাহর ক্রোধ থেকে আশ্রয়।

দুআর বিশেষ বাক্য গুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ

১– أَللّـهُمَّ حَبِّبْ اِلَىَّ فـيهِ الاِحْسـانَ

জীবন একটি বিরতির নাম কোনও ব্যক্তি যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন তাঁর কানে আজান দেওয়া হয় এবং যখন মারা যায় তাঁর জানাজার নামায আদায় করা হয়। অতএব এই আজান থেকে নামাজ পর্যন্ত যে সময় সেটাকেই জীবন বলা হয় আল্লাহ মানুষকে এই সময় কীভাবে ব্যয় করবে তা জানার সুযোগ দেয়, এবং সে বাচার জন্য কোন পথটি বেছে নেবে সেই সুযোগ দেয়, নেকির পথ বাছবে বা মন্দ পথ গ্রহণ করবে;إِنّٰا هَدَيْنٰاهُ اَلسَّبِيلَ إِمّٰا شٰاكِراً وَ إِمّٰا كَفُوراً আল্লাহ মানুষকে পথ দেখিয়েছিলেন। এখন সে আল্লাহর কৃতজ্ঞ হবে কি হবে না এটা স্বয়ং মানুষের উপর নির্ভর করে।

সৎকর্ম করা এবং নেকি করা হল আল্লাহর আদেশ কার্যকর করা; ইসলামী ও মানবিক নৈতিকতা দাবি করে যে আমরা কাজের স্রষ্টা হয়েছি এবং বিলোপকারী নয়; আপনার সম্মান ঝুঁকিতে থাকলেও মানুষের সমস্যাগুলি সমাধান করুন, কাউকে সমস্যায় দেখার পর দক্ষতা হল তার সমাধান করা, আর যদি বলি আমাদের নেতা মুশকিল কুশা কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে যদি মুশকিল কুশার আর্দশ এবং তার পথ অনুসরণ না করি তাহলে কোন মুখে বলবো যে আমরা মুশকিল কুশার অনুসারী। মনে রাখবেন যে কেই অন্যের জন্য ভাল কাজ করে, সময় কারর হয় না, এই দয়া আগামীকাল আপনার এবং আপনার বাচ্চাদের জন্য কাজ আসবে: هَلْ جَزٰاءُ اَلْإِحْسٰانِ إِلاَّ اَلْإِحْسٰانُ সৎকর্মের পুরষ্কার কল্যাণ ছাড়া কিছুই নয়।

দেখুন আল্লাহ সৎ ও সৎকর্মকারীদের কিভাবে প্রশংসা করেছেন:

إِنَّ اَللّٰهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ وَ اَلْإِحْسٰانِ وَ إِيتٰاءِ ذِي اَلْقُرْبىٰ وَ يَنْهىٰ عَنِ اَلْفَحْشٰاءِ وَ اَلْمُنْكَرِ وَ اَلْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ

প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ ন্যায়বিচার, দানশীলতা এবং আত্মীয়স্বজনের অধিকার প্রদানের আদেশ দেন এবং অনৈতিকতা, অশ্লীলতা ও নিপীড়নকে নিষেধ করেন যাতে তোমরা এরদ্বারা নসিহত অর্জন কর। وَ أَنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اَللّٰهِ وَ لاٰ تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى اَلتَّهْلُكَةِ وَ أَحْسِنُوا إِنَّ اَللّٰهَ يُحِبُّ اَلْمُحْسِنِينَ আর আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং নিজের প্রাণকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে দেবে না। সৎকর্ম কর, নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মীদের সাথে রয়েছেন

মধুরতার সাথে এবং ভাল সুরে কথা বলাও সদাচরণের একটি উদাহরণ: وَ قُولُوا لِلنّٰاسِ حُسْناً মানুষের সাথে সদয় কথা বল। উদারতা ও সদ্ব্যবহারের সর্বোত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণগুলির মধ্যে একটি হল বাবা-মায়ের প্রতি দয়া এবং ভাল আচরণ, ভালবাসা এবং স্নেহ, তাদের যত্ন নেওয়া এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা: وَ بِالْوٰالِدَيْنِ إِحْسٰاناًএবং নিজের পিতামাতার সাথে ভাল ব্যবহার কর।

ইমাম জাফর সাদিকের (আ:) যুগে একজন অল্প বয়স্ক খ্রিস্টান ছেলে সবে ইসলাম গ্রহণ করেছিল, তবে তাঁর মা এখনও খ্রিস্টান ছিল যুবক ইমামকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে ইমাম বললেন, নিজের মায়ের সাথে আগের চেয়ে বেশি সেবা কর... মা তার ছোট ছেলের আচরণে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করেন এবং জিজ্ঞাসা করলো খোঁকা তুমি কি করছো ছেলেটি ইমামের সাথে যে কথোপকথন হয়েছিল সেগুলো নিজের মায়ের সঙ্গে বর্ণনা করে... ছেলেটির মা মুগ্ধ হয়ে বলল যে, যখন ইসলাম ধর্মের এইরকম ভাল নিয়ম রয়েছে তখন আমিও একজন মুসলিম, আমাদের ধর্মের প্রধাণ ইমাম জাফর সাদিক (আ:) অন্যকে আকৃষ্ট করতে শিখিছেন, আসক্ত হওয়ার উপায়টি হল নিজের অভ্যন্তরীণ মঙ্গলকে তৈরি করা যাতে আমাদের ভাল নৈতিকতা এবং ভাল আচরণ দেখে লোকেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসে যেমন ভাবে মোমবাতির চারপাশে প্রজাপতিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসে।

২– وَ كَرِّهْ اِلَىَّ فيهِ الْفُسُوقَ وَ الْعِصْيانَ

দুই প্রকার: কিছু লোকের গুনা করতে মন চায় কিন্তু করে না,মন চায় তবে আল্লাহ বা অন্য কোনও কারণে সে ভয় করে; অন্য ধরণের লোকেরা এমন হয় যারা গুনাহকে ঘৃণা করে, তারা ঘৃণার সাথে গুনাহকে দেখে... এই দুটি পর্যায় মানুষের বোধগমনের সাথে সম্পর্কিত, মানুষ যেমন জ্ঞানের অধিকারী হবে তখন সে জিনিসগুলি সেইভাবে দেখবে.... ইউসুফ (আ:) কে দেখুন তিনি কারাগারে থাকা পছন্দ করলেন কিন্তু ময়লাই পড়লেন না: قٰالَ رَبِّ اَلسِّجْنُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمّٰا يَدْعُونَنِي إِلَيْهِ ইউসুফ (আ:) দুআ করেছিলেন, আল্লাহ, সে আমাকে যে কাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আমি তার চেয়ে কারাবাসকে পছন্দ করি। অর্থাৎ, যখন কোনও ব্যক্তি এই পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন সে গুনাহটিকে তার মূল রূপে দেখতে শুরু করে, যেমন আগুনের আকারে হারাম খাবার খাওয়া এবং যখন জ্ঞানের এই জগতটি মানুষের উপর উন্মুক্ত হবে তখন তার গুনাহ সম্পর্কে ঘৃণাও বৃদ্ধি পাবে.... গুনাহ করার ক্ষণটি অত্যন্ত সংবেদনশীল কেবলমাত্র একটি ক্ষুদ্র মুহূর্তই পুরো ফলাফলটি পরিবর্তন করতে পারে।

ইবনে সিরিন নামক এক যুবক একজন দুষ্ট মহিলার বাড়িতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ইবনে সিরিন গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে ঘরের অপরিষ্কার ও কলুষতা নিজের শরিরে মেখে ফেললেন যাতে তিনি গুনাহ থেকে বাচতে পারে; নিজের দেহকে ময়লা দিয়ে দূষিত করেছিলেন যাতে আত্মা শুদ্ধ থাকে; যখন এই মহিলা ইবনে সিরিনকে এই অবস্থায় দেখে সে ইবনে সিরিনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এই ঘটনার পরে, আল্লাহ ইবনে সিরিনকে দুটি নেয়ামত দিয়েছিলেন: (১) চমৎকার সুবাস; এমন সুগন্ধি যে আতর প্রয়োগ না করেও ইবনে সিরিনের পাশ দিয়ে যাওয়া লোকেরা বুঝতে পারতো যে ইবনে সিরিন এখান থেকে গেছে। (২) স্বপ্নের ব্যাখ্যার জ্ঞান; ইবনে সিরিনের স্বপ্নের ব্যাখ্যা বিখ্যাত ছিল।

৩- وَ حَرِّمْ عَلَىَّ فيهِ السَّخَطَ وَ النّيرانَ بِعَـوْنِكَ يا غِـياثَ الْمُسْتَغيـثينَ

আল্লাহর ক্রোধ এবং জাহান্নামের আগুনের প্রদাহ দেহের পুনরুত্থানের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয় যখন আমরা আমাদের দেহের সাথে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হব:

وَ ضَرَبَ لَنٰا مَثَلاً وَ نَسِيَ خَلْقَهُ قٰالَ مَنْ يُحْيِ اَلْعِظٰامَ وَ هِيَ رَمِيمٌ

এবং আমাদের জন্য একটি উদাহরণ বর্ণনা করেছেন এবং বলেন যে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে ভুলে গিয়েছেন এই পচা হাড়গুলিকে কে পুনরুত্থিত করতে পারে?

قُلْ يُحْيِيهَا اَلَّذِي أَنْشَأَهٰا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَ هُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ

হে রসূল(স:) আপনি বলেদেন: যিনি প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন তিনিই জীবন দান করবেন এবং তিনিই সমস্ত প্রাণী সম্পর্কে জ্ঞাত। এই আয়াত গুলো শারীরিক পুনরুত্থানকে বোঝায়; পৃথিবীর আগুনকে সহ্য করার আমাদের শক্তি নেই তাহলে আমরা কিভাবে জাহান্নামকে সহ্য করতে পারি? আমাদের ইমামরা আল্লাহর ভয়ে এত বেশি কাঁদতেন যে অজ্ঞান হয়ে পড়তেন কারণ ইমামগনের মারেফত অনেক বেশি অন্যদিকে, আমাদেরকে আল্লাহর করুণা থেকে নিরাশ হওয়া উচিত নয় এবং শ্রদ্ধা জানানো অব্যাহত রাখা দরকার যতক্ষণ আমরা এই পৃথিবীতে আছি ততক্ষণ তওবা করার সুযোগ রয়েছে সুতরাং তওবা করে নেওয়া দরকার, সময় চলেগেলে সুধু আফসোস থেকে যাবে, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেকে অন্যের থেকে ভাল জানে তাই নিজেকে ফাঁকি দেবেন না, সুরা কিয়ামতে আল্লাহ বলছেন: بَلِ اَلْإِنْسٰانُ عَلىٰ نَفْسِهِ بَصِيرَةٌ বিপরীতে,মানুষ নিজেই তার আত্মার অবস্থা সম্পর্কে ভালভাবে অবগত। وَ لَوْ أَلْقىٰ مَعٰاذِيرَهُ সে যতই অজুহাত দেয় না কেন। (بَصِيرَةٌ) বাসিরার (ةٌ) মোবালেগা (مبالغہ) ব্যবহার হয়েছে; অর্থাত,প্রত্যেক ব্যবক্তি নিজেকে অন্যের চেয়ে ভালভাবে জানেন, তাঁর অবস্থা কী ...

ফলাফল

দুআর বার্তা: ১. শব্দের সত্যিকার অর্থে যদি গুনাহ এবং অবাধ্যতা মানুষের চোখে অপছন্দ হয়ে যায় তখন মানুষ কখনই তা করবে না এবং গুনাহ ও অবাধ্যতা করবে না। ২- গুনাহ ও অবাধ্যতার দিকে যাওয়ার আসল কারণ সম্ভবত এর মধ্যে একটি দৃশ্যমান রঙিনী জিনিস রয়েছে যা মানুষকে গুনাহর দিকে পরিচালিত করে। ৩- এই কারণেই শয়তানের অন্যতম কাজ হল গুনাহ ও দূষণকে একটি ভাল উপায়ে উপস্থাপন করা যাতে মানুষ তার প্রতারণার শিকার হয়ে যায়:

وَ إِذْ زَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطانُ أَعْمالَهُمْ وَ قالَ لا غالِبَ لَكُمُ الْيَوْمَ مِنَ النَّاسِ وَ إِنِّي جارٌ لَكُمْ فَلَمَّا تَراءَتِ الْفِئَتانِ نَكَصَ عَلى عَقِبَيْهِ وَ قالَ إِنِّي بَريءٌ مِنْكُمْ إِنِّي أَرى ما لا تَرَوْنَ إِنِّي أَخافُ اللَّهَ وَ اللَّهُ شَديدُ الْعِقابِ؛

এবং শয়তান যখন তাদের নিকট তাদের কর্মসমূহকে সুশোভিত করে দেখিয়েছিল এবং (তাদের) বলেছিল, ‘আজ লোকদের মধ্যে কেউই তোমাদের ওপর জয়ী হতে পারবে না, আর নিশ্চয় আমি তোমাদের পাশে থাকব (আশ্রয়দাতা হিসেবে)।‘ অতঃপর যখন দুই দল পরস্পরকে দেখেন, তখন সে তার পশ্চাতে পলায়ন করল এবং বলল, ‘তোমাদের থেকে আমি দায়িত্বমুক্ত, নিশ্চয় আমি যা দেখছি তোমরা তা দেখছ না; নিশ্চয় আলি আল্লাহকে ভয় করি’, আর আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। (সুরা আনফাল ৪৮)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .