হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরায়েল একটি অপরাধী চক্র। তারা নিজেদের ঘৃণ্য চেহারা-চরিত্রকে সবার সামনে তুলে ধরছে। এটা কোনো সরকার নয়। এরা অপরাধী, খুনি ও সন্ত্রাসীদের চক্র। তারা এখন এমন সব মানুষের ওপর ভারী বোমাবর্ষণ করছে যারা কোনো দিন একটি গুলিও ছোড়েনি। দোলনায় থাকা শিশু, পাঁচ-ছয় বছরের শিশু এবং নারীদের ওপর বোমা ফেলা হচ্ছে।
আজ (রোববার) ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ড. মাসুদ পেজেশকিয়ানকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন প্রদানের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, একটা সময় ফিলিস্তিন ইস্যু ছিল শুধুমাত্র মুসলিম দেশগুলোর ইস্যু। [কিন্তু] আজ ফিলিস্তিন এবং গাজা ইস্যু সারা বিশ্বেরই ইস্যু হয়ে গেছে। মার্কিন কংগ্রেসের ভেতর থেকে শুরু করে জাতিসংঘ কিংবা প্যারিস অলিম্পিক সর্বত্রই এই ইস্যুটি ছড়িয়ে পড়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইহুদিবাদীদের ঘোষিত লক্ষ্য হলো হামাসকে নির্মূল করা। বর্তমানে ফিলিস্তিনে হামাস, ইসলামী জিহাদ তথা প্রতিরোধ সংগ্রামীরা দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে। তারা প্রতিরোধ সংগ্রামীদের সঙ্গে না পেরে গাজার মজলুম মানুষের উপর বোমা ফেলছে।
মার্কিন কংগ্রেসে দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ভাষণ সম্পর্কে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, মার্কিন কংগ্রেস এই অপরাধীর (নেতানিয়াহু) বক্তব্য শুনেছে। এর মাধ্যমে মার্কিন কংগ্রেস নিজের জন্য একটা বড় লজ্জা ডেকে এনেছে। গাজা পরিস্থিতির বিষয়ে বিশ্বকে কার্যকর ও আন্তরিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রশংসনীয়, কারণ এটি ছিল শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং নির্বাচনের পরে প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ন্যায়-নীতিপূর্ণ আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, প্রেসিডেন্ট রায়িসির শাহাদাতের কারণে জনগণ যখন দুঃখভারাক্রান্ত ছিল ঠিক সে সময়ই ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সর্বোত্তম উপায়ে সম্পন্ন হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতিতে প্রতিবেশী, আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলো এবং যেসব দেশ গত বছরগুলোতে চাপ মোকাবেলায় জাতিসংঘে ও জাতিসংঘের বাইরে ইরানকে সমর্থন দিয়েছে সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ইউরোপীয় দেশগুলোর নাম উচ্চারণ না করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'আমি যে কারণে পররাষ্ট্র নীতিতে ইউরোপীয় দেশগুলোর অগ্রাধিকারের কথা বলিনি তাহলো ওরা নিষেধাজ্ঞা, তেল এবং এ ধরণের নানা ক্ষেত্রে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। যদি তাদের এই খারাপ আচরণ বন্ধ হয় তাহলে তারাও আমাদের কাছে অগ্রাধিকার পাবে। অবশ্য এমন কিছু দেশ আছে যাদের বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ আমরা ভুলব না'।