হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে একই সময়ে ইসরায়েলে সেনা মোতায়েন এবং ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থাও মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও এটি পরিচালনা করার জন্য ১০০ সৈন্য পাঠানো হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
রোববার (১৩ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে সেনা মোতায়েন করার ঘোষণা দেয়। একই দিন মার্কিন কর্মকর্তাদের পাঠানো একটি চিঠিতে ইসরায়েলকে গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে আহ্বান জানায়। এই অসঙ্গতিপূর্ণ পদ্ধতির মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধে লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার, সামরিক সহায়তা বন্ধের বিষয়টি বাইডেন প্রশাসনের আগের হুমকি থেকে আলাদা বলতে অস্বীকার করেছেন।
ইসরায়েলের ব্যর্থতার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তার বিশদ বিবরণের জন্য চাপ দেওয়া হলে মিলার সাংবাদিকদের জানান, আমি আজ এটি নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।
এদিকে ক্ষেপনাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক বিবৃতিতে জানান, ইসরায়েলে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করে ইরানের সৈন্যদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। এছাড়াও আমরা আমাদের অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধ রোধ করার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে অনেক প্রচেষ্টা করছি। এর মাঝে তারা এই সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, আমাদের জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের কোনও রেড লাইন নেই।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম বা থাড। এটি রাডার এবং ইন্টারসেপ্টরের সংমিশ্রণ ব্যবহার করে স্বল্প, মাঝারি এবং মধ্য পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে ব্যর্থ করে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের লোক দেখানো হুমকি
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হুমকি বন্ধের হুমকির মধ্যে গত মঙ্গলবার ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত চিঠি থেকে জানা গেছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মারকে ‘কংক্রিট ব্যবস্থা’র একটি সিরিজ বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এটি বাস্তবায়নের জন্য ৩০ দিন সময় দেওয়ার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের শুরুতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দক্ষিণ গাজায় তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছিল। ওই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংক্ষিপ্তভাবে ইসরায়েলে বোমা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পরে ইসরায়েলে বোমা সরবারহ আবার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে লেবাননে ইসরাইয়েল সামরিক আক্রমণ বাড়িয়ে দেয়।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক আইনি উপদেষ্টা ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মার্কিন প্রোগ্রামের সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রায়ান ফিনুকেন আল জাজিরাকে জানিয়েছে, রাষ্ট্র সচিব এবং প্রতিরক্ষা সচিব উভয়ের দ্বারা যৌথভাবে স্বাক্ষরিত একটি চিঠি একটি উচ্চতর স্তরের উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়। এটা সূক্ষ্ম হুমকি নয়।
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এই সংঘাতের পুরো সময়কাল ইসরায়েলের ওপর আইন প্রয়োগ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন সে আইন প্রয়োগ করেনি। উত্তর গাজায় পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াবহ হয়েছে। যার কারণে রাজনৈতিক হিসাব বদলে গেছে। শেষদিকে মার্কিন আইন বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু এটা সত্যিই যে, অনেক আগে থেকে আইন প্রযোগ করা উচিত ছিল।