۱۸ آبان ۱۴۰۳ |۶ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 8, 2024
সুসন্তান লাভের কুরআন-হাদীসে উল্লেখিত দোয়া ও আমল
সুসন্তান লাভের কুরআন-হাদীসে উল্লেখিত দোয়া ও আমল

হাওজা / সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে যার প্রার্থনা ছিল অবিরত, তিনি হলেন হযরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কুরআনের আলোকে:

সকল যুগেই মানুষ নিজের ও বংশ পরিচয় বা বংশধারা জারি রাখতে সন্তান লাভের প্রবল আগ্রহ ও আকাঙ্খা প্রকাশ করেছে। এই আকাঙ্খা নবী-রাসুলগণ ও রাজা-বাদশাদের মধ্যেও প্রবলভাবে লক্ষণীয়!

সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে যার প্রার্থনা ছিল অবিরত, তিনি হলেন হযরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম। যিনি বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার পরও মহান আল্লাহ তাআলা তাঁকে দান করেছিলেন একজন নেক সন্তান। কী দোয়া করেছিলেন তিনি? সন্তান লাভের কার্যকরী আমলই বা কী?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মহান আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ বিষয় আর নেই।’ আর আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করতে বলেছেন- তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ [সুরা মুমিন- ৬০]

হযরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের নেক সন্তান পাওয়ার প্রার্থনা ছিল আল্লাহর নিকট খুবই পছন্দনীয়। আর তাই তাঁর সেই কার্যকরী আমল ও দোয়া কবুলের কথা কুরআনুল কারিমে একাধিক স্থানে ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَزَكَرِيَّا إِذْ نَادَى رَبَّهُ
‘আর যাকারিয়ার কথা স্মরণ করুন, যখন সে তার পালনকর্তার কাছে (দোয়া) আহ্বান করেছিল-
رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ
উচ্চারণ: রাব্বি লা তাজারনি ফারদাও ওয়া আংতা খায়রুল ওয়ারিছিন। ’অর্থ : ‘হে আমার পালনকর্তা! আমাকে একা রেখো না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিস (উত্তরসূরী দানের অধিকারী)।’ [সুরা আম্বিয়া- ৮৯]

দোয়া কবুলের আমল:
আল্লাহ তাআলা হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের দোয়া কবুল করেছিলেন। তাঁকে বাধ্যর্কে দান করেছিলেন ছেলে সন্তান। তবে সন্তান লাভে আমল কেমন হতে হবে; কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা সে কথাও উল্লেখ করেন-
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَوَهَبْنَا لَهُ يَحْيَى وَأَصْلَحْنَا لَهُ زَوْجَهُ إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ
‘তারপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার স্ত্রীকে প্রসব যোগ্য করেছিলাম। তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি সহকারে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে বিনীত।’ [সুরা আম্বিয়া- ৯০]

উপরোল্লিখিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা হযরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামকে সন্তান দানের কথা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি কীভাবে দোয়া করতে হবে তাও বর্ণনা করেছেন।সর্বোপরি সব সময় সৎ কাজে নিয়োজিত থাকতে হবে, অর্থাৎ দোয়াকারীকে হতে হবে সৎকর্মশীল। দোয়া করার সময় অবশ্যই তাঁর আমল হতে হবে এমন যে, দোয়াকারীকে সন্তান পাওয়ার আশা করতে হবে। দোয়ার আবেদনে থাকতে হবে- ভয়! প্রভুর সামনে হতে হবে বিনম্র ও নিবেদিত! উল্লেখিত আয়াত বা দোয়া বেশি বেশি পড়তে হবে। তবেই মহান আল্লাহ তার বান্দাদের সন্তান দানে ধন্য করতে পারেন।

হাদীসের আলোকে:
সন্তান লাভের দোয়া ও আমল হিসেবে ইমাম বাকির (আ.) থেকে মরহুম মজলিসি (রহ.) বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম বাকির (আ.) বলেছেন, ''(পরপর) তিন দিন ফরজের নামায এবং এশার নামাযের পর সত্তর বার "সুবহানাল্লাহ" এবং সত্তর বার "আস্তাগফিরুল্লাহ" এবং একবার এই দোয়া পাঠ করবে-

«استَغِرُوا رَبِّکُم اِنَّهُ کانَ غفّارا یُرسَلُ السّماءُ عَلَیکُم مِدرارا وَ یُمِدُّکُم بِاَموالٍ وَ بَنینَ وَ یَجعَلُ لَکُم جَنّاتٍ وَ یَجعَلُ لَکُم اَنهارا.»

উচ্চারণ:
মাকারেমুল আখলাক গ্রন্থের সপ্তম অধ্যায়ে সন্তান লাভের জন্য আইয়্যামে আতহার (আ.) অনেক হাদীস ও রেওয়ায়েত বর্ণনা হয়েছে, তন্মধ্যে আমরা একটি হাদীস নীচে উল্লেখ করব:

> একজন সাহাবী সন্তান লাভের দোয়া ও আমল জানতে চাইলে ইমাম জয়নুল আবেদিন (আ.) তাকে বলেন, 'সন্তান লাভের জন্য সত্তর বার এই দোয়াটি পড়বে: "হে আমার রব! আমাকে একাকী ছেড়ে দিও না, আর তুমিই তো উত্তম উত্তরাধিকারী দানকারী! আমার জন্য একজন উত্তরাধিকারী নিযুক্ত করো যে আমার জীবদ্দশায় আমার সাথে সদ্ব্যবহার করবে এবং আমার মৃত্যুর পর আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং তাকেও একটি সুস্থ প্রজন্ম দান করো, তার সাথে শয়তানকে সঙ্গী করো না। আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আমি তোমার কাছেই ফিরে এসেছি কারণ তুমি পরম ও মহান!"


> আমিরুল মুমিনীন ইমাম আলী (আ.) বলেছেন :
اشَدُّ الْمَصَائِبِ سُوءُ الْخَلَف.
"দুষ্ট সন্তানরা হলো সবচেয়ে বড় মসিবত।"
তাই সুসন্তান প্রাপ্তির জন্য দোয়া ব্যতিতও আরো কিছু করণীয় আমল রয়েছে, যা সন্তান লাভে ইচ্ছুক পিতা-মাতাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। কারণ সুসন্তান পেতে হলে অবশ্যই অবশ্যই পিতা-মাতাকেও সু-পিতা-মাতা হতে হবে।

সন্তান যদি ধার্মিক হয় তবে বাবা-মায়ের পরলোক গমন করার পরেও তাঁদের নাম উজ্জ্বল থাকে। তবে সন্তান যদি চরিত্রবান না হয়, তবে তারা বাবা-মায়ের জীবদ্দশায়ও তাঁদের জীবনের জন্য লাঞ্চনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

১. বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ মায়ের গর্ভে শুক্রাণুর মধ্যে দিয়ে শুরু হয়।
২. পিতা মাতার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি ক্রিয়া শিশুকে প্রভাবিত করে তোলে।
৩. শিশুর প্রশিক্ষণে খাদ্যই সর্বাধিক প্রভাব ফেলে সুতরাং হারাম এবং সন্দেহজনক খাবার এড়ানো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৪. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিতামাতার অলসতাই সন্তানদের চরিত্রহীন করে তোলে।
৫. পিতামাতার উচিত তাদের বাচ্চাদের সৎ চরিত্রের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য দোয়া করা যেমন আহলেবাইত (আ.) দের রীতি নীতি ছিল।

[গোরারুল হেকাম, পৃষ্ঠা ৪০৭]]

হে আল্লাহ তাআলা নিঃসন্তান দম্পতিদের সন্তান লাভে কুরআন ও আহলে বাইতের (আ.) হাদীসে শেখানো ভাষায় দোয়া করার তাওফিক দান করো এবং তাদের সুসন্তান দান করো। আমিন ইয়া র'ব্বাল আলামিন।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .