۱۸ آبان ۱۴۰۳ |۶ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 8, 2024
পবিত্র কোরআনের সাহিত্য বর্ণনা করার ধরন ও পদ্ধতি যুগোপযোগী করা প্রয়োজন
আয়াতুল্লাহ আ'রাফি

হাওজা / আয়াতুল্লাহ আ'রাফি 'তাফসীরে নাফিস' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন  করতে গিয়ে বলেন, তরুণ ও নওজোয়ানদের কাছে পবিত্র কোরআনের সাহিত্য বর্ণনা করার ধরন ও পদ্ধতি যুগোপযোগী করা প্রয়োজন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ের সম্মানিত প্রধান বলেছেন যে, বর্তমান যুগে পবিত্র কোরআন থেকে উপকৃত হওয়া এবং অন্যদেরকে উপকৃত করার ধরন ও পদ্ধতি মধ্যে বৈচিত্র আনা খুবই জরুরী। তিনি তরুণ ও নওজোয়ানদের মাঝে পবিত্র কোরআনের ঐশী শিক্ষা পৌঁছানোর জন্য কোরআনের সাহিত্যকে যুগোপযোগী করে তোলার প্রতি তাগিদ দেন।

হাওজা নিউজের রিপোর্ট অনুসারে, আয়াতুল্লাহ আরাফী, গত বৃহস্পতিবার ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ের পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে সম্পাদিত পবিত্র কুরআনের একটি মূল্যবান তাফসীর গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করতে গিয়ে বলেছেন, পবিত্র কোরআন হলো ঐশী শিক্ষার এক প্রস্ফুটিত উৎস মুখ, ঐশী জ্ঞানের সাথে সংযুক্ত এবং এটি এমন এক সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মত, যার গভীরে প্রবেশ করা কখনোই সম্ভব নয়; কারণ এটি মহান আল্লাহ পাকের সমস্ত নাম ও গুণবাচক নামের বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেছেন, পবিত্র কোরআন এবং মহান পয়গম্বর হলেন এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের দুটি উজ্জ্বল নক্ষত্র ও ঐশী বহিঃপ্রকাশ। আর পবিত্র আহলে বাইত (আ.) হলেন এই দুইটি পূর্ণাঙ্গ ঐশী নক্ষত্রের সাথে সংযুক্ত। আর এজন্যই ঐশী সমস্ত নাম ও সিফাতের বহিঃপ্রকাশ সম্বলিত পবিত্র কিতাবের পরিব্যক্তি ও অসীম ও সীমাহীন। আর এজন্যই সাধারণ মানুষ মোফাসসিরগণের ব্যাখ্যা ও বর্ণনার মাধ্যমে পবিত্র কোরআনের বাহ্যিক অর্থ অনুধাবন করতে সক্ষম হয় কিন্তু মাসুমিনগণ পবিত্র কোরআনের অন্তর্নিহিত কার সাথে অন্তরঙ্গ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সমস্ত ঐশী নাম ও সিফাতসমূহকে নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে সক্ষম হন।

হাওজায়ে ইলমিয়ের সম্মানিত প্রধান বলেছেন, পবিত্র কোরআন হলো সামাজিক শিক্ষা সম্বলিত একটি পবিত্র গ্রন্থ। আর এতে সৃষ্টি জগতের প্রারম্ভিক ও প্রলয়ী সমস্ত জ্ঞান মজুদ রয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, পবিত্র কোরআনের সামাজিক শিক্ষা সমূহের মধ্যে মহান আল্লাহর শরীয়তগত ও সৃষ্টিগত শিক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু এ দুটি তার অনুসারীদের জন্য স্বীয় ভাবধারা রক্ষা করে চলে। এই সমস্ত সৃষ্টি জগত পবিত্র কোরআনের অন্তর্নিহিত শিক্ষার মধ্যে সন্নিবেশিত রয়েছে। পবিত্র কোরআনের আরেক নাম হলো সমাজ। এর পরিধি অনেক বিস্তৃত আমরা যে কোন বিষয়েই বরকত লাভ করতে চাই না কেন, তা পবিত্র কুরআনে প্রচুর পরিমাণে মজুদ রয়েছে।

তিনি আরো বলেছেন, হযরত আলী (আ.) পবিত্র কোরআন সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং তিনি পবিত্র কুরআনের ঐশী শিক্ষা সম্পর্কে বিস্ময়কর ও আকর্ষণীয় বর্ণনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। এই সমস্ত পৃথিবীর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে মহান পয়গম্বর (সা.) ও পবিত্র কোরআনের মধ্যে। আর মহান প্রতিপালকের নাম ও সিফাতসমূহ এর মধ্যেই সন্নিবেশিত হয়েছে। আর এজন্যই পবিত্র কোরআন হলো নূর এবং এই পবিত্র কুরআন পাঠ করে তা হাদিয়া করা হলো মুস্তাহাব এবং এতে অনেক সওয়াব রয়েছে।

রাহবার নিযুক্তির বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য বলেছেন, আমাদের এসব কথা বলার উদ্দেশ্য হলো- পবিত্র কোরআনের মত মহান ও মূল্যবান কিতাব যেন মুসলমানদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের মূল ভিত্তি ও মানদন্ড হিসেবে এবং ঐশী শিক্ষায় আদিষ্ট হওয়ার প্রশিক্ষণের ভিত্তিমূল হিসেবে গৃহীত হয়। তিনি আরো বলেছেন, বর্তমানে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে যেসব সংকট রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে আমাদের হাওজায়ে ইলমিয়া তথা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক বড় বড় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেমন- বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তাফসীর সংক্রান্ত পাঠ চর্চার পরিধি বিস্তার করা। আর এরই ধারাবাহিকতায় ৩০০ টি তাফসিরের দারস এবং ৩০টির ও বেশি ধারাতে অসংখ্য কোরআন সম্পর্কিত বিভাগ খোলা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেছেন, কোমের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হযরত আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলির মত প্রবীণ ও বিদগ্ধ মুফাসসিরগণের কয়েকটি সামাজিক প্রেক্ষাপটে লিপিবদ্ধ তাফসির রয়েছে। যেমন: তাফসীরে তাসনীম। এই তাফসীরটি তার 40 বছরের দারসে তাফসীরের সমষ্টি, যা ৮০ খন্ডে সংকলিত হয়েছে। অতি শীঘ্রই কোন এক সম্মেলনে এই তাফসিরটির মোড়ক উন্মোচন করা হবে।

আয়াতুল্লাহ আরাফি আরো বলেছেন, হযরত আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী কতৃক প্রণীত তাফসীরের নমুনা ও একই প্রেক্ষাপটে লিপিবদ্ধ হয়েছে, যা সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও তাফসির বিভাগে আরও যেসব কাজ হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্র কোরআনের অনুবাদ এবং বিভিন্ন ভাষায় তাফসীরের অনুবাদ। আর এই কাজগুলোর মাধ্যমে প্রতি ঈমান হয় যে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে তাফসীর বিভাগে যথেষ্ট উন্নতি ও সমৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে।

ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ের সম্মানিত প্রধান বলেছেন, বর্তমানে পবিত্র কোরআন থেকে নিজে উপকৃত হওয়া এবং অন্যদেরকে উপকৃত করানোর ধরন ও পদ্ধতিতে বৈচিত্র আনা খুবই জরুরী। তিনি তরুণ ও নওজোয়ানদের কাছে যুগোপযোগী ও সহজ পদ্ধতিতে পবিত্র কোরআনের ঐশী শিক্ষা ও কোরআনের সাহিত্যকে উপস্থাপন করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেছেন।

আয়াতুল্লাহ আরাফি তার বক্তৃতার শেষাংশে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, 'তাফসীরে নাফিস' গ্রন্থের লেখক হুজ্জাতুল ইসলাম তাবাতাবায়ী তার এই গ্রন্থ প্রণয়নে যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, তা তাফসীর সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর অনুধাবনের জন্য খুবই সহায়ক হিসেবে গণ্য হয়। এলমি বা জ্ঞানগত তাফসীরের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো- সাহিত্যিক ভঙ্গিমায় সংলাপ করা। আর এটি তাফসির প্রণয়ন করার জন্যও খুবই ভালো একটি পদ্ধতি যা ইতিমধ্যে তাফসির প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .