۳ آذر ۱۴۰۳ |۲۱ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 23, 2024
আলাইহিস সালাম সম্পর্কিত কিছু তথ্য
আলাইহিস সালাম সম্পর্কিত কিছু তথ্য

হাওজা / আমীরুল মু'মিনীন খলিফাতুল মুসলিমীন মাওলা আলী (আঃ) عَلَيْهِ السَّلَام এর ফজিলতঃ-

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, আমীরুল মু'মিনীন খলিফাতুল মুসলিমীন মাওলা আলী (আঃ) عَلَيْهِ السَّلَام এর ফজিলতঃ- শিরনামে মাওলা আলী (আঃ) এর নামের শেষে عَلَيْهِ السَّلَام লেখার কারণে অনেকেই অবাক হয়েছেন এবং ভাবছেন যে, নবীদের নামের পর عَلَيْهِ السَّلاَم বলে দরূদ পাঠ করা হয়, কিন্তু মাওলা আলী আঃ এর নামের পর عَلَيْهِ السَّلاَم বলে দরূদ পাঠ করা তো শীয়াদের আকিদা।

সুতরাং এডমিন তানজিল ইসলাম একজন শীয়া মতাদর্শে বিশ্বাসী। এমনটা ভাবা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ বর্তমান বিশ্বের আহলে বাইত বিদ্বেষী মুনাফিক মার্কা নাসিবী গোষ্ঠীর প্রভাব এত বেশি যে, আমরা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত দাবীদার হয়েও আহলে বাইতের যথাযথ মর্যাদা দিতে জানি না, আর জানার চেষ্টাও করি না। মাওলা আলী (আঃ) এর নামের শেষে عَلَيْهِ السَّلاَم বলা বা লেখা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের মানহাজ এবং তাঁর প্রতি বিদ্বেষ রেখে عَلَيْهِ السَّلاَم না লেখা বলা নাসিবীদের নিফাকী মানহাজ।

১. ইমাম বুখারী সহীহ বুখারীর কিতাবুত তাকসীর (কসর অধ্যায়) এর একটি বাবের (অনুচ্ছেদ) নাম দিয়েছেন এভাবে,

وَخَرَجَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلاَم فَقَصَرَ وَهُوَ يَرَى الْبُيُوتَ فَلَمَّا رَجَعَ قِيلَ لَهُ هَذِهِ الْكُوفَةُ قَالَ لاَ حَتَّى نَدْخُلَهَا.

‘আলী ইবনু আবী তালিব আলাইহিস সালাম বের হবার পরই কসর করলেন। অথচ তিনি ঘর-বাড়ি দেখতেছিলেন, যখন তিনি ফিরলেন তখন তাঁকে বলা হল, এ তো কূফা। তিনি বললেন, না, যতক্ষণ কুফায় প্রবেশ না করি (ততক্ষণ কসর করব)। (সহীহ বুখারী হাঃ১০৮৯)

২. সহীহ বুখারীর তাফসীর অধ্যায়ে সূরা আয্ যারিয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী মাওলা আলী (আঃ) এর নামের শেষে عَلَيْهِ السَّلَام ব্যবহার করেছেন, যা নিম্নরূপ,

قَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلَام {الذَّارِيٰتُ}

‘আলী আলাইহিস সালাম বলেছেন....। (সহীহ বুখারী হাঃ ৪৮৫৩)

৩. ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ বুখারী হাদীস গ্রন্থে কিতাবুল মাগাযী (যুদ্ধাভিযান অধ্যায়) এর একটি বাবের (অনুচ্ছেদ) নাম দিয়েছেন,

بَاب بَعْثُ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَام وَخَالِدِ بْنِ الْوَلِيْدِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ.

বিদায় হাজ্জের পূর্বে ‘আলী ইবনু আবী তালিব আলাইহি সালাম এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)-কে ইয়ামানে প্রেরণ। (সহীহ বুখারী হাঃ ৪৩৪৯)

৪. ইমাম আহমদ, ইমাম বুখারী, ইমাম আবু দাউদ, ইমাম তিরমিযী তাঁদের কিতাবে হাদীসের বিভিন্ন সনদের মধ্যে মাওলা আলী (আঃ) এর নামের শেষে আলাইহিস সালাম ব্যবহার করেছেন, যা নিম্নরূপঃ

عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَام

(উদাহরণ স্বরূপ দেখুনঃ সহীহ বুখারী হাঃ ৪৯৪৭; তিরমিযী হাঃ ৯৬৮; আবু দাউদ হাঃ ২০৭৬, ৩৮৫৬, ৪৭৬৪, ৪৭৭০; মুসনাদে আহমদ হাঃ ৪১, ৯২৬৫)

৫. ইমাম বুখারী ও আবু দাউদ মাওলা আলী (আঃ) এর নাম উল্লেখ করার সময় তাঁদের কিতাবে عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَام  এভাবেও লিখেছেন। (উদাহরণ স্বরুপ দেখুনঃ সহীহ বুখারী হাঃ ১০৮৯, ৪৩৪৯; সুনান আবু দাউদ হাঃ ৩৬৭১)

৬. ইমাম আহমদ, ইমাম বুখারী ও আবু দাউদ হাদীস বর্ণনা করার সময় বিভিন্ন স্থানে মাওলা আলী (আঃ) এর নামের শেষে আলাইহিস সালাম ব্যবহার করতে গিয়ে লিখেছেন, عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلاَم 'আলী আলাইহিস সালাম'। (দেখুনঃ সহীহ বুখারী হাঃ ২০৮৯; সুনান আবু দাউদ হাঃ ৪৩৫১, ৪৬৩০, ৪৬৪৬, ৪৬৪৯; মুসনাদে আহমদ হাঃ ৪৭৬৪)

৭. হাদীসের বিভিন্ন কিতাবে শুধুমাত্র মাওলা আলী (আঃ) এর নামের শেষেই عَلَيْهِ السَّلاَم লেখা হয়েছে তা নয়, বরং মাওলা আলী (আঃ) সহ হযরত ফাতিমা (আঃ), ইমাম হাসান (আঃ) ও ইমাম হুসাইন (আঃ) এর নামের শেষেও عَلَيْهِ السَّلاَم/ عَلَيْهَا السَّلاَم ব্যবহার করা হয়েছে। (উদাহরণ স্বরূপ দেখুনঃ সহীহ বুখারী হাঃ ৫২০, ২৬৯৯, ৩০৯১, ৩০৯২, ৩১১০, ৩১১৩, ৩১৮৫, ৩৭০৫, ৩৭১১-৩৭১৬, ৩৭৪৭, ৩৭৬৭, ৩৮৫৪, ৪০০৩, ৪০০৪, ৪০৭৫, ৪২৪০, ৪২৪১, ৪৪৩৩, ৪৪৩৪, ৪৪৬২, ৪৯৯৭, ৫১৮৪, ৫২৪৮, ৫৩৬১, ৫৩৬২, ৫৪৯৩, ৫৭২২, ৬০৮৪, ৬৭২৫, ৭৩৪৭, ৭৪৬৫; সুনান আবু দাউদ হাঃ ২৯৬৮, ২৯৭২, ৩১২৩; মুসনাদে আহমদ হাঃ ২৬, ১০৫১০, ১৯৪৭৯)

৮. মুনাফিক মার্কা নাসিবী গোষ্ঠী এবার হয়তো মাওলা আলী আঃ এর নামের শেষে ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡ বলে দরূদ পাঠ করার অপরাধে ইমাম আহমদ, ইমাম বুখারী, ইমাম আবু দাউদ, ইমাম তিরমিযী সহ আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের বিভিন্ন ইমামদেরও শীয়া বলে অপবাদ দেবে। তাদের অবগতির জন্য বলছি যে, মাওলা আলী আঃ, ফাতিমা আঃ ইমাম হাসান আঃ ইমাম হুসাইন আঃ সহ আহলে বাইতের সদস্যদের জন্য দরূদ পাঠ করতে স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন। কা‘ব ইবনু ‘উজরা (রাযি.) হতে বর্ণিত।

তিনি বললেন,

سَأَلْنَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ الصَّلاَةُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ فَإِنَّ اللهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكُمْ قَالَ قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনাদের অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, ‘‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী। (সহীহ বুখারী হাঃ ৩৩৭০, সহীহ মুসলিম হাঃ ৪০৬; জামে তিরমিযী হাঃ ৪৮৩; সুনান নাসায়ী হাঃ ১২৮৭; ১২৮৮; আবু দাউদ হাঃ ৯৭৬; ইবনে মাজাহ হাঃ ৯০৪; মুসানাদে আহমদ হাঃ ১৬১৫৬, ১৭৬৬১; মুয়াত্তা মালিক হাঃ ৩৯৮; সুনান দারিমী হাঃ ১৩৪২)

৯. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্বের সকল সকল মুসলিম সালাতে রাসুলুল্লাহ সাঃ সাথে তাঁর আহলে বাইতের প্রতিও দরূদ পাঠ করে থাকে। সুতরাং ইবরাহীম (আঃ) এর বংশধর হযরত ইসমাইল ও ইসাহাক (আঃ) এর নাম উচ্চারণের পর عَلَيْهِ السَّلاَم বলে দরূদ পাঠ করি, তেমনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বংশধর মাওলা আলী আঃ, ফাতিমা আঃ ইমাম হাসান আঃ ইমাম হুসাইন আঃ অর্থাৎ আহলে বাইতের নাম উচ্চারণ করার সময় عَلَيْهِ السَّلاَم বলে দরূদ পাঠ করা শুধু জায়েযই নয় বরং সুন্নাহ।

বড় পরিতাপের বিষয় হলো, আমাদের দেশে অনুবাদকৃত হাদীস গ্রন্থে আহলে বাইতের সদস্য যেমন মাওলা আলী আঃ, ফাতিমা, আঃ ইমাম, হাসান আঃ এবং ইমাম হুসাইন আঃ এর নামের শেষে عَلَيْهِ السَّلاَم লেখা হয়নি। আমার জানা মতে, বাঙালি অনুবাদ عَلَيْهِ السَّلاَم এর অনুবাদ করেনি এবং আলাইহিস সালাম (আঃ)ও লেখেননি। তারা عَلَيْهِ السَّلاَم এর অনুবাদে (রাঃ) লিখেছেন, যদিও তাঁদের নামের শেষে রাঃ লেখা বা বলাও জায়েয কিন্তু যেখানে عَلَيْهِ السَّلاَم লেখা আছে, সেখানেও আঃ না লিখে রাঃ লিখা এক ধরনের খিয়ানত।

আর কেউ যদি আহলে বাইতের প্রতি বিদ্বেষের কারণে عَلَيْهِ السَّلاَم না লিখে থাকে তাহলে তিনি নিঃসন্দেহে মুনাফিক মার্কা নাসিবী।

১০. আসুন! আমরা মুহাব্বাতের সাথে মওলা আলী আঃ এর নামের শেষে রাঃ বলা বা লেখার পাশাপাশি عَلَيْهِ السَّلاَم (আঃ)-ও ব্যবহার করি। কেননা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:

ﻓَﻬَﺬَﺍ ﻭَﻟِﻲُّ ﻣَﻦْ ﺃَﻧَﺎ ﻣَﻮْﻟَﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻭَﺍﻝِ ﻣَﻦْ ﻭَﺍﻟَﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻋَﺎﺩِ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﺍﻩُ

"আমি যার অবিভাবক আলীও তার (মাওলা) অবিভাবক। হে আল্লাহ্! যে তাকে ভালোবাসে আপনি তাকে ভালোবাসুন। হে আল্লাহ! যে তার সাথে দুশমনি করে আপনিও তার সাথে দুশমনি করুন।" (সুনান ইবনে মাজাহ হাঃ ১১৬, মুসনাদে আহমাদ হাঃ ৯৫৩, ১৮০১১, সিলসিলা সহীহাহ হাঃ ১৭৫০)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .