۱۱ تیر ۱۴۰۳ |۲۴ ذیحجهٔ ۱۴۴۵ | Jul 1, 2024
গাদীরে খুম
গাদীরে খুম

হাওজা / শিয়ারা এ দিনকে ঈদ বা খুশির দিন বলে পালন করে কারণ তাদের মতে মাওলা মানে খলিফা!

লেখক : ডক্টর আব্দুল বাতেন মিয়াজী

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শিয়ারা এ দিনকে ঈদ হিসেবে পালন করে বলে সুন্নিরা এর বিরোধিতা করবে এটা প্রকারান্তরে আহলে বাইতের প্রতি বিদ্বেষে রূপ নেয়! শিয়ারা এ দিনকে ঈদ বা খুশির দিন বলে পালন করে কারণ তাদের মতে মাওলা মানে খলিফা!

সুন্নিদের একটা অংশ যারা নাসেবী নয় তবে নাসেবিয়ত দ্বারা প্রভাবিত! তারা মাওলার অর্থ করে বন্ধু! মওলা শব্দের একটি অর্থ বন্ধু, তবে এই প্রেক্ষাপটে বন্ধু অর্থ নেবার সুযোগ নেই কেননা প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম তুলনা করেছেন, আমি যার যার মওলা এই আলীও তার তার মাওলা। নবীজি কি আমাদের বা সাহাবাগণের বন্ধু ছিলেন? না, কাজেই মাওলা শব্দের অর্থ এখানে বন্ধু করা যাবে না! ভারতের আশরাফিয়া দরবারের এক খানদান গত বছর চট্টগ্রামের মাহফিলে খুব সুন্দর করে এই মাওলা শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন! এখানে এর অর্থ অভিভাবক! কেবল অভিভাবকই নয়, যিনি সবকিছুর মালিক! একারণেই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম এই ঘোষণা দেবার পূর্বে ওয়াদা করিয়ে নিয়েছিলেন, আমি কি তোমাদের জীবনের চাইতেও প্রিয় নই? সাহাবাগণ সমস্বরে জবাব দিয়েছিলেন, অবশ্যই ইয়া রাসূলাল্লাহ!

নবীজি কি গাদীরে খুমে ছোট ভাষণ দিয়েছিলেন? না, সেটি ছোট কোনো বক্তব্য ছিল না! দীর্ঘ ভূমিকার পর আহলে বাইতের গুরুত্ব এবং তাদের অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা বিস্তারিত আলোচনা করার পর মওলা আলী কাররামুল্লাহু ওয়াযহাহুর হাত তুলে ধরে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমি যার যার মাওলা, এই আলীও তার তার মাওলা! আর এ কারণেই সাইয়্যেদুনা হযরত উমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুসহ অনেক সাহাবা নেমে এসে মাওলা আলীর হাত ধরে তাঁকে নিজেদের মাওলা মেনে নিয়েছিলেন।

কেউ কেউ কিছু হাদিসের রেফারেন্স টেনে এই সংক্রান্ত হাদিসটির শানে উরুদ এনে বলবে যে, পূর্বে মাওলা আলীর সাথে কয়েকজন সাহাবার মনোমালিন্য হয়েছিল, সেটা মিটমাট করে দেবার জন্য নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম যাত্রা বিরতি দিয়ে এ ঘোষণা দেন। এরা আসলে নাসেবীয়ত দ্বারা প্রভাবিত! ইয়েমেনে যুদ্ধলব্ধ কিছু জামা কাপড় নিয়ে কিছু সাহাবার সাথে মাওলা আলীর মনোমালিন্য হয়েছিল সত্য কিন্তু কেবল সে কারণেই উনি বিদায়ী হজ্ব থেকে ফেরার পথে গাদীরে খুম নামক স্থানে যাত্রা বিরতি দিয়ে হযরত আলীকে মাওলা ঘোষণা করেননি ।কারণ এ সংক্রান্ত হাদিস গুলো পড়লে বোঝা যায়, এ ঘোষণা ছিল বিশাল কিছু! সামান্য মনোমালিন্য হলে সেটা সবার সামনে এভাবে ঘোষণা করে কেউ করে না! তাফসীরে মাজহারী, তাফসীরে দুররে মনসুরসহ বেশ কিছু তাফসীরে সূরা মায়েদা ৬৭ নম্বর আয়াতের শানে নুযূলে বেশ কয়েকটি হাদিস এনেছেন! এতে এই ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে! আয়াতটির অর্থ এরকম, "৬৭. হে (সম্মানিত) রাসূল! যা কিছু আপনার প্রতি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে তা (সমস্ত মানুষের নিকট) পৌঁছে দিন। আর যদি আপনি (এমনটি) না করেন তবে আপনি সে (প্রতিপালক) সত্তার বার্তাই পৌঁছালেন না। আর আল্লাহ্ (নিজে প্রতিপক্ষ) লোকদের থেকে আপনাকে (তথা আপনার প্রাণ) রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কাফেরদেরকে হেদায়াতের পথ দেখান না।"

এ আয়াত নাযিল হবার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম কাফেলাকে থামতে নির্দেশ দেন এবং উটের কাসওয়া একত্র করে মঞ্চ তৈরী করেন। এরপর জোহর থেকে আসর পর্যন্ত বয়ান পেশ করেন! মামুলি কোনো বিষয় হলে এতো বিশালআয়োজন করে তা হতো না আর আল্লাহ পাক আয়াত নাযিল করে ঘোষণা করার নির্দেশ দিতেন না!

আশা করি এ লেখা পড়ার পর খারেজী নাসেবী বা তাদের দ্বারা প্রভাবিত কারো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না!

تبصرہ ارسال

You are replying to: .