হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, দৈনিকটির তথ্য অনুযায়ী ভারত গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গোলা-বারুদের এক বড় অংশই সরবরাহ করেছে ইসরাইলকে। পার্সটুডে জানিয়েছে, ইসরাইলও ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে সুসজ্জিত করতে হায়দারাবাদে ড্রোন তৈরির একটি কারখানা বানিয়েছে।
ভারতীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি ড্রোন লেবাননের হিজবুল্লাহর হাতে ভূপাতিত হওয়ায় ইসরায়েলের জন্য বিশটি ড্রোন তৈরি করেছে ও সেগুলো ইসরায়েলে পাঠিয়েছে।
ভারত অতীতকাল থেকে বহু জাতির আবাসস্থল ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দেশ হিসেবে খ্যাত ছিল। গত এক শতকে দেশটি উপনিবেশবাদ-বিরোধী সংগ্রামী জাতি হিসেবে এক বিশাল মর্যাদাও অর্জন করেছিল। কিন্তু গত এক দশকে বিশেষ করে গত দুই বছরে তার এই সম্মান ও ইমেজ বিশ্বের জাতিগুলোর কাছে ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও বেশি বিস্ময়ের ব্যাপার হল ভারতের এই অবস্থা বিশ্বের উত্তরাঞ্চলের দেশগুলো ও পশ্চিমের দেশগুলোতেও অপছন্দনীয় হয়ে আছে এবং অপশ্চিমা জাতিগুলোর কাছেও ভারতের ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভারতের বদনাম কুড়ানোর প্রভাবক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নানা ভুল সিদ্ধান্ত এবং উপনিবেশবাদের জুলুমের শিকার দেশগুলোর বিরুদ্ধে উপনিবেশবাদীদের প্রতি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি'র সহায়তা। এই দলটির কোনো কোনো গোষ্ঠী বা গ্রুপ ইসলাম-বিদ্বেষী তৎপরতায় জড়িত, ইসরায়েলের প্রতি সাহায্য ও সমর্থন দেয়া এবং শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীদের তৎপরতার ক্ষেত্রে পশ্চিমা আধিপত্যবাদীদের স্বার্থের সেবক।
এ ছাড়াও ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর ইন্টারনেট-ভিত্তিক মাধ্যমগুলোতে এই গণহত্যার প্রতি সমর্থন জানিয়ে কোনো কোনো গ্রুপের সুপরিকল্পিত প্রচারাভিযান বা প্রচার-যুদ্ধ ছিল আরও একটি বড় অদ্ভুত ঘটনা যে প্রচার-যুদ্ধ ছিল দৃশ্যত ভারতীয়দের! কোনো কোনো বিশ্লেষণধর্মী সাইটের বক্তব্য অনুযায়ী ইসরায়েল ও নেতানিয়াহু বিগত বছরগুলোতে তার বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মানব-সম্পদ ও সাইবার জগত ব্যবহারের জন্য ব্যাপক পুঁজি-বিনিয়োগ করেছেন।
গাজার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ ও প্রায় এক লাখ ব্যক্তি আহত হয়েছে।
ইসরায়েলের অস্তিত্ব গড়ে ওঠে ১৯১৭ সালে উপনিবেশবাদী ব্রিটেনের ব্যালফোর নামক ঘোষণার আলোকে এবং বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনে অভিবাসন করতে উৎসাহ যুগিয়ে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল তার অস্তিত্ব ঘোষণা করে। সেই থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যার এবং গোটা ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডগুলোকে দখলে নেয়ার নানা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সূত্র: রেডিও তেহরান বাংলা