রিপোর্ট: তায়েম হুসাইন
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পবিত্র মহররম উপলক্ষে আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ট্রাষ্ট আয়োজিত ১০ দিন ব্যাপী শোক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগের এই দিনে ইরাকের কারবালায় বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (স.)'র প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর ৭২ জন সঙ্গী-সাথী সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সংগ্রামে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ১লা হতে ১০ই মহররম পর্যন্ত আলোচনা করেন ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী এবং সমাপনী দিনে হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) এর পবিত্র শাহাদত স্মরণে আশুরার শোক মিছিল নগরীর আলতাপোল লেনস্থ আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ইমামবাড়ি হতে বের হয়।
শোক মিছিলপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী। তিনি বলেন, কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনায় মুসলমানদের জন্য ব্যাপক শিক্ষা রয়েছে। কারবালার ঘটনা মুসলমানদেরকে মিথ্যার সাথে আপোস না করা এবং সত্যের পতাকাকে সমুন্নত রাখার চেতনাকে জাগ্রত রাখার শিক্ষা প্রদান করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা এবং ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গীদের শাহাদাতের পর শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও এর গুরুত্ব ও মর্যাদা এতটুকুও কমেনি বরং সময়ের সাথে সাথে আশুরার চেতনা আরও বিস্তৃত হচ্ছে।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার সহযোগী গোষ্ঠী বিশেষকরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের প্রতি ঘৃণার বিষয়টি সব জাতি এবং সরকারের কথা ও কাজে প্রকাশ পেতে হবে এবং জল্লাদদের জন্য ক্ষেত্র সংকুচিত করতে হবে।
ফিলিস্তিনের ইস্পাত-কঠিন প্রতিরোধ এবং গাজার ধৈর্যশীল ও নির্যাতিত মানুষদের প্রতি অবশ্যই সর্বতোভাবে সমর্থন দিতে হবে। বিশ্ব হায়েনা ইসরাইলের নৃশংসতা রুখে দিতে হোসাইনী চেতনাকে সামনে রেখে বিশ্বমুসলিমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মুসলমান রাষ্ট্রগুলো এগিয়ে এলে বিশ্বসন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল এক মুহূর্তও টিকবে না।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধক্লান্ত ইমাম হুসাইন (আ.) যখন শেষ তীরটি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন তখনও কেবলার দিকে ফিরে পরম শান্তিতে বললেন : হে আল্লাহ! আপনার বিচারে আমি সন্তুষ্ট, আপনার আদেশের প্রতি আমি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পিত, আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই হে অসহায়দের সহায়।’ ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের মুহূর্ত যতই ঘনিয়ে আসছিল ততই খোদাপ্রেমের তীব্রতায় ইমামের চেহারা উজ্জ্বলতর ও প্রশান্ততর হচ্ছিল।
আলোচনা শেষে একটি শোক মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ইমাম বাড়িতে এসে শেষ হয়। এ শোক মিছিলে খুলনা ও অন্যান্য এলাকা থেকে আগত শিয়া মুসলমান নারী ও পুরুষ অংশ গ্রহণ করেন।