হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আরবাইন হুসাইন সম্পর্কে হাওজা নিউজ বাংলাকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে মোছা. সুমাইয়া খাতুন। সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও উপস্থাপনায়: রাসেল আহমেদ রিজভী।
পরিচয়পর্ব:
সালামুন আলাইকুম, আমি মোছা. সুমাইয়া খাতুন, বাংলাদেশর বগুড়া জেলা থেকে। আমি এখন বর্তমানে ইরানের আল-মোস্তফা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় আছি। আলহামদুলিল্লাহ এটি আমার প্রথম বার কারবালা সফর।
প্রশ্ন: কারবালায় আসা যিয়ারতকারী নারীদের মধ্যে কি বিবি জয়নব ও ফাতিমা (সা.আ.)-এর আদর্শ পরিলক্ষিত হয়েছে?
জনাবা সুমাইয়া খাতুন: জ্বী, আমার বিবেচনায় কারবালায় আসা যিয়ারতকারী নারীদের অধিকাংশ নারীর মধ্যেই হযরত ফাতেমা যাহরা (সা.) এবং বিবি জায়নাব (সা.)এর আদর্শ পরিলক্ষিত হয়েছে।
প্রশ্ন: কোটি মানুষের সমাগম, কারবালার দিকে লাখো নারী-পুরুষের ঢল; চলতে-ফিরতে কী কখনো অস্বস্তি বোধ করেছেন?
জনাবা সুমাইয়া: না, আলহামদুলিল্লাহ আমি কোনো অস্বস্তিবোধ করিনি। কারবালায় যাওয়ার সময় দীর্ঘ ৮০ কি.মি পথ অতিক্রম করতে আমার কোথাও মনে হয়নি যে আমাদের দিকে কেউ কোনো বাজে দৃষ্টিতে তাকিয়েছে, বাজে কোনো কথা বলেছে বা বাজে কোনো ইঙ্গিত করেছে; আর না কোনো বাজে স্পর্শ অনুভব করেছি। কখনো যদি এতো মানুষের ভীড়ের মাঝে হঠাৎ কারো সাথে অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো স্পর্শ লেগে গিয়েছে, সাথে সাথে নারী-পুরুষ ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। এখানে সবার মূল উদ্দেশ্য ছিল যে- আমরা কখন কারবালায় পৌঁছাবো এবং কখন আমরা আমাদের মাজলুম ইমামের রওজা যিয়ারত করতে পারব। আমরা আমাদের ইমামকে নিজেদের মনের কথা বলতে পারব, তার জন্য তার কাছে গিয়ে মন খুলে কাঁদতে পারব। এখানে কেউ একটু বিপদে পড়লেই মানুষ সাহায্যের হাত খুব তাড়াতাড়ি বাড়িয়ে দিচ্ছিল। সর্বপরি কারবালায় এক মানবিক ও আধ্যাত্মিক পরিবেশ বিরাজ করছিল।
প্রশ্ন: এই সফরে এসে আপনার অনূভুতি কী?
জনাবা সুমাইয়া: আমার জীবনে এ যেন এক ভাষাহীন অনুভুতির নাম কারবালা যিয়ারত। আমার এই অনুভূতি আমি ভাষায় প্রকাশ করে বুঝাতে পারব না। যখন থেকে আমি বুঝতে শিখেছি, তখন থেকে মনের মধ্যে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলাম যে আমি কারবালা যিয়ারতে যাব। আলহামদুলিল্লাহ অবশেষে দীর্ঘ একটা সময়ের অপেক্ষার পর আমার স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে।
প্রশ্ন: বর্তমান বিশ্বের মুসলমানদেরকে প্রতি আপনার মেসেজ কী?
জনাবা সুমাইয়া: বিশ্বের মুসলমানদের সম্পর্কে কিছু বলার মতো যোগ্যতা আমি এখনো অর্জন করতে পারিনি, আমি ছোট একটা মানুষ। আমি শুধু আমার ছোট চিন্তা থেকে একটাই কথা বলতে চাই যে- আসুন, বর্তমান বিশ্বের বিবেচনায় আমরা মুসলিম জাতি শিয়া-সুন্নি মতবাদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই এবং বিশ্বের আনাচেকানাচে যেখানে আমাদের মুসলিম জাতির উপরে জুলুম করা হচ্ছে- সেখানে শত্রুদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াই এবং আমাদের মুসলিম ভাই-বোনকে রক্ষা করি।
পরিশেষে একটাই কথা বলব সেটা হলো- আমরা আমাদের মুসলিম জাতির ’মূল শিক্ষাকেন্দ্র’ কারবলাকে ভুলে না যাই।