হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্ন কেলেঙ্কারিতে বিভিন্ন পদের অন্তত শতাধিক ক্যাডার ও বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের নাম আসছে। এসব কর্মকর্তা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছেন। তাদের অনেকেই এখনো বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত আছেন। আবার কয়েকজন আছেন দেশের বাইরে।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি ও কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা এসব সুবিধাভোগীর একটি তালিকা তৈরি করছে। তাদের বিষয়ে সরকারের হাইকমান্ডকে অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছে। তবে পুলিশের ওই সূত্রটি বলছে, যাদের নাম এসেছে, তাদের বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ওই সূত্রটি আরও জানায়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার বিষয়টিও জানা যাচ্ছে। প্রশ্ন বিক্রি করার অর্থ পিএসসির কিছু কর্মকর্তা পেতেন নিয়মিত। এমনকি যেখান থেকে প্রশ্ন ছাপা হতো তাদের একটি অংশও নিয়মিত পেয়ে আসছিল। যারা অর্থ নিতেন তাদের নামও জানা গেছে।
পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সংস্থার সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ অন্য আসামিরা সুবিধাভোগীদের বিষয়ে নানা তথ্য দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, পিএসসির পাশাপাশি সরকারের অন্য দপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষায়ও তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। কোন কোন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে, সেটাও বলেছেন তারা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পিএসসির এক ঝাড়ুদারও এ চক্রে জড়িত।
গত ৬ ও ৭ জুলাই পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলমসহ ১৭ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাম প্রকাশ না করে সিআইডির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, আবেদ আলীসহ অন্যদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছেন। আবেদ আলীর নেতৃত্বে গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫০ জনের মতো। তার মধ্যে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চক্রের সদস্যরা ঢাকার বাইরে গা ঢাকা দিয়েছেন। প্রায় সবারই নাম ও মোবাইল নাম্বার পাওয়া গেছে। তবে কারও কারও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বিসিএসের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুবিধাভোগীরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-দপ্তরে কর্মরত আছেন। তাদের সংখ্যা শতাধিক হবে। তবে নাম আসার মানে যে তারা জড়িত তা বলা যাবে না। এজন্য তাদের সবকিছু পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না। সরকারের নীতিনির্ধারকরা যদি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন, তাহলেই পুলিশ পদক্ষেপ নেবে। বিসিএসের প্রশ্ন যেখানে ছাপা হয় সেখানকার কর্মীদের গতিবিধিও নজরে রাখা হচ্ছে।
এর আগে সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসে পিএসসির অন্তত ১০ কর্মকর্তা জড়িত। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।