হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের পারাচিনার অঞ্চলে সাম্প্রতিক ধারাবাহিক সহিংসতা নিয়ে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে বাক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। পারাচিনারে সংখ্যাগরিষ্ঠ উগ্র সুন্নিদের দ্বারা সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের ২০০ জনেরও বেশি সদস্য নিহত ও আহত হয়েছে।
শিয়া অধ্যুষিত দেশ ইরান পারচিনারের চলমান ঘটনা সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছে এবং প্রকাশ্যে পাকিস্তান অঞ্চলের সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে "নিপীড়নের" নিন্দা করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কায়ানি এক বিবৃতিতে বলেছেন, শিয়াদের উপর পরিকল্পিত হামলা "উগ্র তাকফিরি গোষ্ঠীর অপরাধমূলক চরিত্র প্রকাশ করেছে।"
তিনি আরও বলেন, পারাচিনারের ঘটনায় "সমস্ত মুসলমানের হৃদয়" ব্যথিত হয়েছে।
তিনি বলেন, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ইসলামী বিশ্বের ঐক্যকে বিনষ্ট করে এমন সব ধরনের চরমপন্থার নিন্দা করে এবং তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান করে।”
ইরানের এমন মন্তব্যে পাকিস্তান অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং প্রতিবেশী দেশকে "অযৌক্তিক" বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ ১লা আগস্ট তার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ইরানের মন্তব্য "অপ্রয়োজনীয়"।
তিনি বলেন, “পাকিস্তান তার নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য দায়বদ্ধ এবং পারাচিনার সম্পর্কে ইরানের বিবৃতি অযৌক্তিক, চলমান পরিস্থিতির ব্যাপকতা বোঝার অভাব রয়েছে!”
মমতাজ বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় “পারাচিনারে নিরাপত্তা উদ্বেগ মোকাবেলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে” কারণ “যেকোনো প্রাণহানি অগ্রহণযোগ্য”।
বিভিন্ন গণমাধ্যম উল্লেখ করেছে যে, সামান্য জমি-জমার বিরোধকে কেন্দ্র করে শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে পারচিনারে চরমপন্থী সুন্নি গোষ্ঠীর দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত এবং ১৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
চলমান সহিংসতা, যাকে কেউ কেউ 'গণহত্যা' বলে বর্ণনা করেছেন, যা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলছে এবং এমনকি 'জিরগাস' (উপজাতি নেতৃত্ব) এটি থামাতে পারেনি।
সহিংসতা বন্ধে পাকিস্তান সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ ছিল না, যার ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলের শিয়ারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বলে জানা গেছে।