হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস তাদের নতুন নেতা হিসেবে দুর্ধর্ষ যোদ্ধা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নাম ঘোষণা করেছে। গাজার এই শীর্ষ হামাস কর্মকর্তা এখন থেকে দলটির রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে কাজ করবেন। এতে সমর্থন জানিয়েছে ইরান-সমর্থিত গ্রুপ হিজবুল্লাহও।
হামাস মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, 'ইসলামিক প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে কমান্ডার ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করছে। তিনি শহীদ কমান্ডার ইসমাইল হানিয়ার স্থলাভিষিক্ত হবেন।'
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে তার নেতৃত্বে ছিলেন এই সিনওয়ার। তিনি এখনো গাজার গভীর কোনো সুরঙ্গে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করে যাচ্ছেন। এদিকে প্রতিশোধ নিতে ও হামাসকে নির্মূলের নামে গাজায় অমানবিক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আরও কয়েকগুণ আহত ও নিখোঁজ হয়ে।
গত ৩১ জুলাই তেহরানে গুপ্ত হামলায় প্রাণ হারান ইসমাইল হানিয়া। ইসরায়েল স্বীকার না করলেও তারাই হানিয়াকে হত্যায় জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর যুদ্ধবিরতি আলোচনা কার্যত ভণ্ডুল করে দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ওই আলোচনায় হানিয়া ছিলেন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিনওয়ারকে নেতা নির্বাচনের মাধ্যমে হামাসের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠেছে।
রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক নূর ওদেহ বলেন, ‘হামাসের মধ্যে সিনওয়ারের আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাকে নেতা নির্বাচন করার ফলে গাজা কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এলো।’
লেবাননভিত্তিক ইরান-সমর্থিত গ্রুপ হিজবুল্লাহও সিনওয়ারের নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা একে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে অভিহিত করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে হামাস ঐক্যবদ্ধ।
সিনওয়ার ২০১৭ সালে গাজা উপত্যকায় হামাসের নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আল জাজিরার সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেন, ‘আমি মনে করি গাজাকে ফোকাস করা, সিনওয়ারকে ফোকাস করাটা দৃঢ়প্রত্যয়ের একটি বড় সিগন্যাল।’
তিনি বলেন, আর বাস্তবতা হলো হামাস কিন্তু গাজাকে হারাতে যাচ্ছে না। হামাস গাজার ক্ষমতায় থাকতে যাচ্ছে। আর এ কারণেই সেখান থেকেই নেতা নির্বাচন করা হয়েছে।